স্বামীকে হত্যার পর মামলা করে স্ত্রী নিজেই বাদী!
৫০ হাজার টাকায় চুক্তি করে স্বামী গার্মেন্ট ব্যবসায়ী শফিকুল ইসলাম মিঠুকে (৩৫) দু’জন ভাড়াটিয়া খুনি দিয়ে হত্যা করায় স্ত্রী মুন্নী খাতুন (২৫)। আবার সেই হত্যা মামলার বাদী হন মুন্নী নিজেই। পাবনার একটি হত্যাকাণ্ডের পুলিশি তদন্তে বেরিয়ে এসেছে এমন রোমহর্ষক কাহিনি।
পরকীয়ার জেরে অতিষ্ঠ হয়ে স্বামী মিঠুকে হত্যা করা হয় বলে পুলিশের কাছে প্রাথমিক স্বীকারোক্তি দিয়েছেন স্ত্রী মুন্নী খাতুন। ঘটনাটি পাবনা সদর উপজেলার চকছাতিয়ানী গ্রামের। পুলিশ মামলার বাদী মুন্নী খাতুনকে আটকের পর সোমবার আদালতে হাজির করে। এর আগে আটক করা হয় মিঠুর কথিত প্রেমিকা লাকি খাতুনকে (১৯)। সোমবার বিকেলে মুন্নীর সঙ্গে লাকিকেও আদালতে হাজির করা হলে মুন্নী স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ওসি তদন্ত মুন্সি আবু কুদ্দুস আরো জানান, মিঠুর স্ত্রী মুন্নী জিজ্ঞাসাবাদে জাননি, তার স্বামী মিঠু একজন মাদকসেবী ছিলেন। মাদকসেবনের ফলে প্রায় বাড়িতে ভাঙচুর করে চরম অশান্তি সৃষ্টি করতেন। শুধু তাই নয় লাকি নামের এক মেয়েকে নিয়ে বাসাভাড়া করে থাকতেন। তার অত্যাচারে অতিষ্ট হয়ে বাধ্য হয় হত্যাকাণ্ডের পথ বেছে নিতে হয়েছে।
এই মামলায় মিঠুর স্ত্রী মুন্নী ও মিঠুর কথিত প্রেমিকা লাকি খাতুনকে গ্রেফতার দেখিয়ে তাদের সোমবার বিকেলে পাবনা জজ আদালতে হাজির করা হয়। সেখানে মুন্নী নিজেকে হত্যার সঙ্গে সম্পৃক্ত করে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। আর লাকি খাতুনও তার সঙ্গে মিঠুর প্রেমের সম্পর্কের বিষয়ে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। পরে তাদের জেলহাজতে পাঠানো হয়।
জেলার চাটমোহর উপজেলার ফৈলজানা ইউনিয়নের শরৎগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়ির কাছে একটি ব্রিজের কাছ থেকে বুধবার সকালে শফিকুল ইসলাম মিঠুর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত ব্যবসায়ী পাবনা সদর উপজেলার চক-ছাতিয়ান গ্রামের আলহাজ্ব মৃত আবুল কাশেমের ছেলে। মঙ্গলবার রাতের কোনো এক সময়ে দুর্বৃত্তরা তাকে হত্যা করে ব্রিজের সঙ্গে ঝুলিয়ে রেখে যায়।
পুলিশ জানিয়েছে, হত্যাকাণ্ডের পর স্বামী হত্যার বিচার চেয়ে নিজে বাদী হয়ে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন স্ত্রী মুন্নি। কিন্ত পুলিশের সন্দেহ হওয়ায় পুলিশ স্ত্রী মুন্নীকে আটক করার পর সে পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে যে, স্বামীর পরকীয়ার ক্ষুব্ধ হয়ে মিঠুকে সে হত্যা করেছে।
এ ঘটনায় নিহত মিঠুর মা ফাতেমা বেগম বাদী হয়ে রোববার মুন্নি ও তার সহযোগী মাঠপাড়ার তোফাজ্জল হোসেন সরদারের ছেলে সুজন (৩০), মাধপুর হাটবাড়িয়া মৃত আব্দুল জব্বারের ছেলে হোসেন আলী কসাইসহ (২৭) অজ্ঞাত কয়েকজনকে আসামি করে ৩৬৪/৩০২/৩৪ ধারায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলা নং-৫৬।
একে জামান/বিএ