ভালোবেসে বিয়ে, সংসার করতে দিলো না সাবেক স্বামী
দর্জির দোকানিকে ভালোবেসে নতুন সংসার পেতেছেন। কিন্তু সংসার সাজানোর আগেই সাবেক স্বামীর ছুরিকাঘাতে না ফেরার দেশে চলে যেতে হলো রিক্তাকে।
সোমবার রাতে ফরিদপুরের চরভদ্রাসনে ওষুধ কিনে বাড়ি ফেরার সময় রিক্তা বেগমের (২২) পেটে ছুরি মারে তার সাবেক স্বামী আলমগীর হোসেন।
আহত রিক্তাকে প্রথমে চরভদ্রাসন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তার পেট থেকে ছুরি বের করে চিকিৎসক। রিক্তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার দুপুরে মারা যান তিনি।
সাবেক স্বামী আলমগীর কুষ্টিয়া জেলার দৌলতপুর উপজেলার খরিবোনা গ্রামের ইব্রাহিম দর্জির ছেলে। নিহত রিক্তা বেগম পার্শ্ববর্তী সদরপুর উপজেলার খেজুরতলা গ্রামের কালাম মোল্যার মেয়ে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আলমগীরের সঙ্গে ছয় বছর আগে তার বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে স্বামী আলমগীরের নির্যাতন সইতে না পেরে কিছুদিন আগে তাকে তালাক দেন রিক্তা বেগম। পরে সদরপুর উপজেলার বাবুরচর খালাশী ডাঙ্গী গ্রামের আলী আহমেদের ছেলে শাহজালালকে (৩৬) দ্বিতীয় বিয়ে করেন রিক্তা। এরই জের ধরে সাবেক স্বামী আলমগীর হোসেন রাতের আঁধারে রিক্তার তলপেটে ছোরা মেরে পালিয়ে যান।
গত ৮ মার্চ রিক্তা বেগম নতুন স্বামী শাহজালাল ও আগের সংসারের এক ছেলে রাহুলকে নিয়ে চরভদ্রাসন উপজেলা সদরে ইউসুপ বাছারের ভাড়া বাড়িতে বসবাস শুরু করেন।
সোমবার রাতে রিক্তার বর্তমান স্বামী শাহজালাল সদরপুর উপজেলা বাজারে জান্নাত সুইং নামে কাপড় ও পোশাক তৈরি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ছিলেন।
এ সময় রিক্তা তার ছেলে রাহুলকে (৪) নিয়ে ভাড়া বাড়িতে অবস্থান করছিলেন। রাতে ওষুধ কেনার জন্য ছেলেকে নিয়ে রিক্তা ঘর থেকে বের হলেই আগে থেকে ওঁৎপেতে থাকা সাবেক স্বামী আলমগীর তাকে তুলে নেয়ার জন্য টানাহেঁচড়া শুরু করেন।
একপর্যায়ে ছেলে রাহুলের সামনেই ধারালো ছুরি দিয়ে রিক্তার তলপেটে আঘাত করে মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে ফেলে পালিয়ে যান আলমগীর।
গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে প্রথমে চরভদ্রাসন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তির পর মঙ্গলবার দুপুরে তার মৃত্যু হয়।
চরভদ্রাসন থানা পুলিশের ওসি রাম প্রসাদ ভক্ত ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তিনি বলেন, এ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারে পুলিশি অভিযান চলছে।
এস.এম. তরুন/এএম/এমএস