রাঙ্গামাটিতে পাহাড়ে বৈসাবি আনন্দধারা
নতুন বছরকে বরণ করতে পাহাড়ে বইছে বৈসাবি উৎসবের আনন্দধারা। পাহাড়িদের প্রাণের উৎসব বৈসাবি (বৈসুক সাংগ্রাই বিজু) আনন্দে মেতেছে রাঙ্গামাটির পাহাড়ি জাতিগোষ্ঠী। আগামী ১২-১৪ এপ্রিল ঘরে ঘরে উদযাপিত হতে যাচ্ছে পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ি জাতিগোষ্ঠীগুলোর প্রধান সামাজিক উৎসব বৈসাবি। উৎসবকে সামনে রেখে রাঙ্গামাটিতে শুরু হয়েছে চার দিনব্যাপী বর্ণিল অনুষ্ঠানমালা।
সোমবার সকালে রাঙ্গামাটি পৌরসভা প্রাঙ্গণে বেলুন উড়িয়ে অনুষ্ঠানমালার উদ্বোধন করেন রাঙ্গামাটি আসনের সংসদ সদস্য ঊষাতন তালুকদার। বিজু সাংগ্রাইং বৈসুক বিষু বিহু চাংক্রান-২০১৮ উদযাপন কমিটি সার্বজনিনভাবে এ সব অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
উদযাপন কমিটির আহবায়ক অবসরপ্রাপ্ত উপ-সচিব প্রকৃতি রঞ্জন চাকমার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সদস্য প্রফেসর বাঞ্ছিতা চাকমা। এছাড়া বাংলাদেশ ক্ষুদ্র নৃ গোষ্ঠীর ফোরামের সাংগঠনিক সম্পাদক শক্তিপদ ত্রিপুরা, রাঙ্গামাটি সদর উপজেলা চেয়ারম্যান অরুণ কান্তি চাকমা, সাহিত্যিক শিশির চাকমা প্রমুখ বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন।
শুরুতে ঐতিহ্যবাহী নিজস্ব সংস্কৃতির নৃত্যসঙ্গীত পরিবেশন করেন পাহাড়ি শিল্পীরা। পরে পৌরসভা প্রাঙ্গণ থেতে এক বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করে শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণের পর জেলা শিল্পকলা একাডেমি গিয়ে শেষ হয়।
উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, জুম্ম জাতির ঐতিহ্য-সংস্কৃতি রক্ষায় পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন ছাড়া এর কোনো বিকল্প নেই। এ লক্ষে পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নের আন্দোলনকে আরও বেগবান করতে হবে। তারা জুম্মদের সংস্কৃতি অধিকার নিশ্চিতসহ পার্বত্য চুক্তির পূর্ণ বাস্তবায়নে এগিয়ে আসার আহবান জানান সরকারকে।
সংসদ সদস্য ঊষাতন তালুকদার বলেন, ঐতিহ্যবাহী আমাদের এ উৎসবটি যুগযুগ ধরে পালিত হয়ে আসছে। সেই ধারা বজায় রেখে এবারও বৈসাবি উৎসব বিশাল আয়োজনে মধ্যে দিয়ে উদযাপিত হচ্ছে। বক্তব্যে পার্বত্য চট্টগ্রামসহ সারা দেশের জনগণকে বিজুর শুভেচ্ছা জানান ঊষাতন তালুকদার।
রাঙ্গামাটিতে আয়োজিত চার দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালায় আরও রয়েছে মঙ্গলবার বিকালে রাঙ্গামাটি মারি স্টেডিয়ামে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, বুধবার বিকালে ঐতিহ্যবাহী জুম্ম খেলাধুলা এবং বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৬টায় রাজবন বিহারের পূর্বঘাটে আনুষ্ঠানিক ফুল ভাসানো। আর এর মধ্য দিয়ে শেষ হবে চারদিনের অনুষ্ঠানসূচি। এদিন থেকে ঘরে ঘরে শুরু হবে তিনদিনের মূল উৎসব। এরপর ১৫ এপ্রিল রাঙ্গামাটিসহ বিভিন্ন স্থানে অনুষ্ঠিত হবে মারমা সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী সাংগ্রাইং জলোৎসব। বৈসাবির সঙ্গে একাট্টা হচ্ছে আবহমান বাংলার চিরাচারিত বর্ষবরণ ও বৈশাখি উৎসব।
আরএ/পিআর