নিখোঁজের ৫ দিন পর আইনজীবীর মরদেহ উদ্ধার
রংপুরের বিশেষ জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ও আওয়ামী লীগ নেতা রথীশ চন্দ্র ভৌমিক বাবু সোনার (৫৮) মরদেহ উদ্ধার করেছে র্যাব। নিখোঁজের পাঁচ দিন পর মঙ্গলবার রাত ২টার দিকে নগরীর মাহিগঞ্জ মোল্লাপাড়া এলাকার একটি নির্মাণাধীন বাড়ির মাটির নিচ থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন র্যাব-১৩ এর ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক আরমিন রাব্বী।
তিনি জানান, এর আগে রাত সাড়ে ১১টার দিকে বাবু সোনার স্ত্রী দীপা ভৌমিককে আটক করে র্যাবের একটি দল। তার দেয়া তথ্য অনুযায়ী ওই এলাকার কামরুল নামে এক শিক্ষকের বড় ভাইয়ের নির্মাণাধীন বাড়ির মাটির নিচ থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরে মরদেহ শনাক্তের জন্য বাবু সোনার ছোট ভাই সুশান্ত ভৌমিক সুবল ও স্ত্রী দীপাকে ঘটনাস্থলে নিয়ে যাওয়া হয়। তারা গিয়ে বাবু সোনার মরদেহ সনাক্ত করেন।
এদিকে, সোমবার তাজহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক কামরুল ইসলাম ও মতিয়ার রহমানকে আটকের পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তদন্ত ভিন্ন দিকে মোড় নেয়। সোমবার কামরুল ও মতিয়ারকে আটক করা হলেও তখন কিছু জানায়নি পুলিশ। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তাদের আটকের কথা স্বীকার করেন কোতোয়ালী থানার ওসি বাবুল মিঞা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দীপা ভৌমিক তাজহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা। ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষক কামরুল ইসলামের সঙ্গে দীপার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরে এলাকায় গুঞ্জন ওঠে। পরকীয়া সম্পর্কের জেরে কামরুল ও দীপা পরিকল্পিতভাবে বাবু সোনাকে হত্যার পর তার মরদেহ মাটির নিচে পুঁতে রেখেছে বলে ধারণা করছেন স্থানীয়রা।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কামরুল ইসলামের পৈত্রিক নিবাস হচ্ছে তাজহাট মোল্লাপাড়া। তিনি পরিবার নিয়ে নগরীর রাধাবল্লভ এলাকায় বসবাস করলেও মোল্লাপাড়ার বাড়িতেও নিয়মিত যাতায়াত করতেন।
গত শুক্রবার সকাল থেকে নিখোঁজ ছিলেন বাবু সোনা। ওইদিন তার স্ত্রী বলেছিলেন, বাবু সোনা সকাল ৬টার দিকে বাড়ি থেকে বের হয়ে চলে যান। কোথায় গিয়েছেন সে বিষয়ে বাড়িতে কাউকে কিছু বলেননি।
দীপা ভৌমিকের এমন বক্তব্যের পর মঙ্গলবার তারই স্বীকারোক্তিতে মরদেহ উদ্ধার হওয়ায় তোলপাড় শুরু হয়েছে। অ্যাডভোকেট রথীশ চন্দ্র ভৌমিক বাবু সোনা চাঞ্চল্যকর জাপানি নাগরিক হোশি কুনিও এবং মাজারের খাদেম রহমত আলী হত্যাকাণ্ডের রাষ্ট্রপক্ষের প্রধান আইনজীবী ছিলেন।
এছাড়াও রংপুর আইনজীবী সমিতির নির্বাচিত সহ-সাধারণ সম্পাদক, জেলা আওয়ামী লীগের আইনবিষয়ক সম্পাদক, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের রংপুর বিভাগের ট্রাস্ট্রি, পূজা উদযাপন পরিষদের রংপুর জেলার সভাপতি ও সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদকসহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন তিনি।
জিতু কবীর/বিএ