দেশে ফিরে বিয়ের অনুষ্ঠান আর করা হলো না দিনারের
অস্ট্রেলিয়ার উত্তরাঞ্চলীয় কাকাডু ন্যাশনাল পার্কের কাছে ভয়াবহ এক সড়ক দুর্ঘটনায় নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেলার দুইজন নিহত হয়েছেন। নিহতের সংবাদ পাওয়ার পর উভয়ের বাড়িতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
নিহতরা হলেন, উপজেলার মোগরাপাড়া ইউনিয়নের বাসিন্দা সাইফুল ইসলাম দিনার ও সাদেকা কামাল নিপা।
রোববার বিকেলে সোনারগাঁওয়ের বাড়িমজলিশ গ্রামে দিনার ও দমদমা গ্রামে নিপার বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে হৃদয় বিদারক দৃশ্য। মা-বাবা ও তাদের আত্মীয় পরিজনদের আহাজারিতে ভারি হয়ে উঠেছে পরিবেশ। তাদের কান্না দেখে আশপাশের লোকজন চোখের পানি ধরে রাখতে পারেননি।
সাইফুল ইসলাম দিনারের বন্ধু রুবেল জানান, দিনার ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি থেকে বিবিএস পাস করে ২০১৩ সালে অস্ট্রেলিয়ার চার্লস ডারউইন বিশ্ববিদ্যালয়ে এমবিএ ভর্তি হন। চার মাস আগে তিনি দেশে এসে স্ত্রী সায়মা আক্তার সেতুকে অস্ট্রেলিয়া নিয়ে যায়। আগামী মে'তে তাদের দেশে আসার কথা ছিল। দেশে ফিরে বিবাহোত্তর অনুষ্ঠান করারও কথা ছিল। কিন্তু তা আর হলো না।
এছাড়া শনিবার ছিল দিনারের জন্মদিন আর ১ এপ্রিল ছিল স্টার সানডে। তাই তারা সব বন্ধুরা মিলে গাড়ি নিয়ে বেড়াতে বের হয়েছিল। গাড়িটি দিনার নিজেই ড্রাইভ করছিল, কে জানতো জন্মদিনেই সে চলে যাবে না ফেরার দেশে।
তিনি আরো জানান, অস্ট্রেলিয়ায় তাদের নাগরিকত্বের কাগজপত্র প্রায় চূড়ান্ত হয়ে গেছে। দিনার সেখানে একটি ডিপার্টমেন্টাল স্টোরে পার্ট টাইম চাকরি করতো। দুর্ঘটনার সময় দিনারের সঙ্গে থাকা তার স্ত্রী সায়মা মারাত্মক আহত হন। বর্তমানে তিনি চিকিৎসাধীন আছেন। তার একটি পায়ে মারাত্মক জখম হওয়ায় কেটে ফেলার সম্ভাবনা রয়েছে। দিনার সোনারগাঁও উপজেলার মোগরাপাড়া ইউনিয়নের বাড়িমজলিশ গ্রামের মাজারুল ইসলামের ছোট ছেলে।
অপরদিকে একই ইউনিয়নের দমদমা গ্রামের মেয়ে সাদেকা কামাল নিপাও এ দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন। তিনিও ওই গাড়িতেই ছিলেন। নিপার স্বামী সোহান হোসেন এ দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন। ২০০৯ সালে সোহাগ অস্ট্রেলিয়ার চার্লস ডারউইন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে যান। সাড়ে তিন বছর আগে স্ত্রী নিপাকে অস্ট্রেলিয়া নিয়ে যান তিনি। নিপার নিহতের খবরে তার পরিবার শোকে স্তব্ধ হয়ে গেছে। তিন ছেলে মেয়ের মধ্যে সবচেয়ে ছোট ছিল নিপা। আদরের মেয়েকে হারিয়ে পুরো পরিবার শোকে পাথর হয়ে গেছে।
শাহাদাৎ হোসেন/এফএ/জেআইএম