স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতামূলক প্রশাসন নিশ্চিত করা হবে : চসিক মেয়র
দুর্নীতিমুক্ত, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতামূলক প্রশাসন ব্যবস্থা চালু করার প্রত্যয়ে দায়িত্বভার গ্রহণ করেছেন চসিক’র নতুন মেয়র আ জ ম নাছির। রোববার দুপুরে দায়িত্ব বুঝে নিয়ে তিনি বলেন, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন সকল বিভাগকে অটোমেশনের আওতায় এনে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।
সিটি করপোরেশনের দায়িত্বগ্রহণে করপোরেশনের সকল বিভাগের কর্মকর্তা কর্মচারীরা সকাল থেকে নগরপিতাকে বরণের জন্য ছিল বেশ উৎফুল্ল। ভারপ্রাপ্ত মেয়র মোহাম্মদ হোসেন চসিক’র নির্বাচিত তৃতীয় মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করেন।
অনুষ্ঠানে সিটি মেয়র আরো বলেন, সিটি করপোরেশনের হারানো গৌরব ফিরিয়ে আনতে প্রশাসনিক শৃংখলার দিকেই প্রথম নজর দিতে হবে। কেননা গুরুত্বপূর্ণ দফতরগুলোর প্রধান ব্যক্তিরা ভারপ্রাপ্ত থাকায় কার্যক্রমে প্রকৃত গতিশীলতা আসেনা।
তিনি আরো বলেন, নানাবিধ সমস্যার আবর্তে যখন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন তখন আমি এ দায়িত্বভার গ্রহণ করেছি। নির্বাচনের পর আনুষ্ঠানিক দায়িত্ব গ্রহণ না করলেও ৬০ লক্ষ নগরবাসীর সেবকের দায়িত্ব পালন করতে সকল বিভাগের কর্মকর্তা কর্মচারীদের নিয়ে দফায় দফায় বৈঠক করে সমস্যাগুলো চিহ্নিত করেছি এবং এরই মধ্যে সমাধানেরও উদ্যোগ নিয়েছি।
তিনি বলেন, চট্টগ্রামবাসীর দুঃখ জলজট। এই কয়দিনে অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতে অনেক এলাকায় জলাবদ্ধতা হয়েছে। কিন্তু এই জলাবদ্ধতা বেশি সময় স্থায়ী হচ্ছেনা। কারণ এরই মধ্যে কিছু খাল ও নর্দমা পরিচ্ছন্ন করার কারণে নগরবাসী কিছুটা হলেও স্থায়ী জলাবদ্ধতা থেকে রক্ষা পাচ্ছে। পর্যায়ক্রমে জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য আরো কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
নাছির বলেন, নির্বাচিত হওয়ার পর করপোরেশনের দেনার পরিমাণ ছিল ২৯৫ কোটি ২৬ লক্ষ টাকা। এরই মধ্যে সরকার ৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়। যার ফলে ৬০ কোটি ৮৭ লক্ষ টাকা দেনা পরিশোধ করা হয়। বর্তমানে ২৩৫ কোটি ৩৮ লক্ষ টাকা অপরিশোধিত এর দায় কাঁধে নিয়ে আজ মেয়রের দায়িত্ব গ্রহণ করলাম।
মেয়র আরো বলেন, চট্টগ্রাম মহানগরীকে বিশ্ববাসীর সামনে একটি বিশ্বমানের বাসযোগ্য শহর হিসেবে গড়ে তোলার জন্য কাজ শুরু করেছি। ১৯৯৫ সালের ড্রেনেজ মাস্টার প্ল্যান বাস্তবায়ন, প্রয়োজনে বর্তমান ভূ-প্রকৃতির অবস্থান বিবেচনায় নতুন মাস্টার প্ল্যান প্রণয়ন করে জলাবদ্ধতামুক্ত নগরী গড়ার কাজ শুরু করবো। ১ লক্ষ ৫০ হাজার হোল্ডিংয়ের রাজস্ব আদায় সহজীকরণ করা হবে। জনসেবা নিশ্চিত করণে অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়ে আমার অবস্থান প্রতিনিয়ত জিরো টলারেন্সে থাকবে।
তিনি বলেন, নগরীর সৌন্দর্য বৃদ্ধি করতে ৩৩৭টি বিলবোর্ড উচ্ছেদ করা হয়েছে। ২৪ কোটি ৩৫ লক্ষ টাকা জলবায়ু পরিবর্তনজনিত প্রভাব মোকাবেলার জন্য স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি। এরই মধ্যে খাল খননের ৩২৬ কোটি ৮৪ লক্ষ টাকা এবং কর্পোটিং রাস্তার অ্যাসফল্ট প্ল্যান্টের ১৯৯ কোটি ৯৯ লক্ষ টাকা অনুমোদিত হয়েছে।
রোববার দায়িত্বগ্রহণকালে সাবেক নির্বাচিত দুইজন মেয়রের পরামর্শ, এমনকি নব-নির্বাচিত কাউন্সিলর, সকল সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, নগর বিশেষজ্ঞসহ সকলের সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।
এসএইচএস/আরআইপি