গৃহবধূর মাথা ন্যাড়া করল স্বামী-ননদ
লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলায় যৌতুকের টাকা না পেয়ে চার সন্তানের জননী শাহানারা বেগমের (২৬) মাথা ন্যাড়া করেছেন পাষণ্ড স্বামী ও তার দুই ননদ। নির্যাতনের শিকার ওই গৃহবধূ বর্তমানে হাতীবান্ধা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি রয়েছেন।
বুধবার বিকেলে উপজেলার সিন্দুর্না ইউনিয়নের উত্তর হলদীবাড়ি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। রাতেই ওই গৃহবধূ স্বামীসহ চারজনের নামে থানায় অভিযোগ দিলে পুলিশ দুইজনকে গ্রেফতার করেছে।
গ্রেফতাররা হলেন- উপজেলার সিন্দুর্না ইউনিয়নের উত্তর হলদীবাড়ি গ্রামের বাবলু মিয়া (৩০) ও তার বোন মহুরন নেছা (৩৭)।
পুলিশ জানায়, ১০ বছর আগে উপজেলার সিন্দুর্না ইউনিয়নের উত্তর হলদীবাড়ি এলাকার মৃত মহির উদ্দিনের ছেলে বাবলু মিয়ার সঙ্গে বিয়ে হয় টংভাঙ্গা ইউনিয়নের মৃত ঝুল্লুর রহমানে মেয়ে শাহানারা বেগমের। বিয়ের সময় ২ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করলে তাকে এক লাখ টাকা দেন শাহানারার বাবা ঝুল্লুর। কিন্তু কিছুদিন আগে ঝুল্লুর রহমানের মৃত্যু হলে বাবলু আরও এক লাখ টাকা অথবা তার শ্বশুরের বসতভিটা ১০ শতাংশ জমির বিক্রি করে টাকা আনার জন্য শাহানারাকে চাপ দেন। শাহানারা এতে রাজি না হলে তার উপর নেমে আসে অমানবিক নির্যাতন।
এরই জেরে বুধবার বিকেলে আসামি বাবলু মিয়া (৩৫), তার বড় ভাই আব্দুল গফুর (৪০), স্বামী পরিত্যাক্ত দুই বোন মহুরন নেছা (৩৭) ও আমেনা বেগম (৩০) মিলে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে শাহানারাকে বেধড়ক মারধর করেন। পরে তার হাত-পা বেঁধে মাথা ন্যাড়া করে ঘরে তালাবদ্ধ করে রাখেন। পরে তিনি ঘরের বেড়া কেটে পালিয়ে গিয়ে হাতীবান্ধা হাসপাতালে ভর্তি হন।
নির্যাতনের শিকার শাহানারা বেগম জানান, বিয়ের পর থেকে তার স্বামী, ভাশুর ও দুই ননদ যৌতুকের জন্য প্রায়ই তাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতেন। চার সন্তানের কথা চিন্তা করে সব নীরবে সহ্য করেছেন তিনি। তার বাবা-মা খুবই গরিব। এক বছর আগে ট্রেনে কাটা পড়ে বাবা মারা গেছেন। তার বাবার রেখে যাওয়া ১০ শতাংশ জমি উপর মাসহ বড়ভাই স্ত্রী-সন্তান নিয়ে বসবাস করছেন।
হাতীবান্ধা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) উমর ফারুক বলেন, লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর বাবলু মিয়া ও তার বড়বোন মহুরন নেছাকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে আসে পুলিশ। অন্যদেরও গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
রবিউল হাসান/আরএ/এফএ/আরআইপি