নেপালে পৌঁছে মায়ের কাছে ভিডিও কল করার কথা ছিল আলিফের
নেপালে পৌঁছে ভিডিও কলে মায়ের সঙ্গে কথা বলার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন খুলনা সরকারি বিএল কলেজের ছাত্র আলিফুজ্জামান আলিফ (৩০)। নেপাল যাওয়ার উদ্দেশ্য ছিল বন্ধুদের সঙ্গে সেখানকার বাণিজ্য মেলা দেখা। কিন্তু তার সেই আনন্দ সফর পরিণত হয়েছে বিষাদে। বিমান বিধ্বস্ত হয়ে নেপালেই মারা গেছেন আলিফ। এখন তার পরিবারে শুধুই আহাজারি।
নিহত আলিফ খুলনার রূপসা উপজেলার আইচগাতী ইউনিয়নের আইচগাতী গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা আসাদুজ্জামান মোল্লার ছেলে এবং সরকারি বিএল কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের মাস্টার্স শেষ বর্ষের ছাত্র। তিনি বঙ্গবন্ধু ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি ছিলেন।
নিহতের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, সোমবার সকালে নেপালে যাওয়ার উদ্দেশ্যে খুব ভোরে বাড়ি থেকে বের হয়ে যশোর বিমান বন্দরে পৌঁছে আলিফের সর্বশেষ কথা হয় মায়ের সঙ্গে। তারপর দুপুরের পরই টিভিতে খবর পাওয়া যায় নেপালে বিমান বিধ্বস্ত হয়েছে।
আলিফের ছোট ভাই ইয়াছির আরাফাত জানান, প্রতিদিনের মতো গত ১১ মার্চ রাত ১০টায় মা-বাবা ও দুই ভাই একত্রে খাওয়া-দাওয়া করে ঘুমিয়ে পড়েন। সকালে আলিফ নেপালের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেন। পরীক্ষার মধ্যে ১০ দিন বন্ধ থাকার সুবাদে পূর্ব পরিকল্পনা মোতাবেক তিনি নেপালের একটি মেলায় অংশগ্রহণ জন্য বের হয়েছিলেন।
তিন ভাইয়ের মধ্যে আলিফ ছিল দ্বিতীয়। বড় ভাই আশিকুর রহমান উপজেলা পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা হিসেবে পিরোজপুর জেলায় কর্মরত আছেন। ছোট ভাই ইয়াছির আরাফাত বিবিএ পরীক্ষার্থী। তাদের বাবা মুক্তিযোদ্ধা আসাদুজ্জামান মোল্লা সেনেরবাজার একটি তেলের পাম্পের ম্যানেজার হিসেবে কর্মরত আছেন। রাতেই তাদের কাছে আহতদের একটি তালিকা পাঠায় ইউএস-বাংলা কর্তৃপক্ষ। কিন্তু তাতে আলিফের নাম নেই।
বিমান বিধ্বস্তের খবর শুনে আলিফের বাড়িতে শত শত মানুষ সমবেদনা জানাতে যান। এ সময় বাবা-মা ও ভাইদের কান্নার রোল পড়ে যায়। আলিফের মা এখনও বিশ্বাস করতে পারছেন না যে তার ছেলে বিমান দুর্ঘটনায় মারা গেছেন। তার দৃঢ় বিশ্বাস আলিফ নেপালে পৌঁছে ভিডিও কলে তার সঙ্গে কথা বলবে।
আলিফের বাবা আসাদুজ্জামান মোল্লা জানান, মঙ্গলবার সকালে আলিফের খালু ইউএস বাংলার অপর একটি বিমানে নেপাল গেছেন। বিমান কর্তৃপক্ষ বিনামূল্যে তাকে আলিফের মরদেহ আনতে নিয়ে গেছে- বলেই তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন।
আলমগীর হান্নান/আরএআর/জেআইএম