পালিয়ে বাঁচলেন দুই যুবক, শরীরে নির্যাতনের চিহ্ন
কক্সবাজারের ঈদগাঁও-ঈদগড় সড়কে অপহরণকারী চক্র আবারও সক্রিয় হয়ে উঠেছে। গত বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে সড়কের পানেরছড়া ঢালা থেকে দুই যুবককে অপহরণ করে নিয়ে যায় সশস্ত্র অপহরণকারীরা। তাদের একজন শুক্রবার সকালে এবং অপরজন শনিবার সকালে কৌশলে পালিয়ে এসেছেন। মুক্তিপণের দাবিতে দুই যুবককে অমাবিকভাবে পেটানো হয়েছে। তাদের শরীরে নির্যাতনের চিহ্ন রয়েছে।
অপহরণের শিকার একজনের নাম লেদু মিয়া (৩২)। তিনি ঈদগড়ের বড়বিল ৬ নম্বর ওয়ার্ড এলাকার আমির হামজার ছেলে ও পেশায় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। অপরজন হুমায়ুন কবির (৩০) চকরিয়ার খুটাখালীর ফুলছড়ি এলাকার মুহাম্মদ সেলিমের ছেলে।
পালিয়ে আসা লেদু মিয়া বলেন, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে ঈদগাঁও স্টেশন থেকে সিএনজিচালিত অটোরিকশা যোগে ঈদগড় ফিরছিলাম। সামনে হিললাইন সার্ভিসের একটি বাস ছিল আর পেছনে আমাদের অটোরিকশা। কিন্তু হিমছড়ি ঢালায় ঈদগাঁও তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশ অটোরিকশাটি রাত ৮টার পরে আসায় আটকে দেয়। আধাঘণ্টা পর অটোরিকশাটি ছেড়ে দেয়া হলে পানেরছরা ঢালায় গিয়েই ডাকাতের কবলে পড়ে।
তিনি আরও বলেন, ডাকাতরা গাড়ি থেকে আমদের দুজনকে নামিয়ে পাহাড়ে নিয়ে যায়। পাহাড়ের ভেতর নিয়ে দুজনকে বেদম মারধর করে বাড়িতে কল করে জনপ্রতি দুই লাখ টাকা করে মোট ৪ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। এরপর রাতে অনেক হাঁটাহাঁটির পর ভোররাতে দিকে সবাই ক্লান্ত হয়ে ঘুমিয়ে পড়ে। হঠাৎ ঘুম ভেঙে যাওয়ায় দেখি অপহরণকারীরা ঘুমাচ্ছে। পাহাড়গুলো চেনা থাকায় কৌশলে আমি পালিয়ে আসি।
শনিবার সকালে পালিয়ে আসা হুমায়ুন কবির জানান, লেদু মিয়া পালিয়ে যাওয়ার পর তাকে আরেক দফা পেটানো হয়। বাড়িতে আবার যোগাযোগ করে টাকা চাওয়া হয় সঠিক সময়ে টাকা না পেলে মেরে ফেলারও হুমকি দেয় অপহরণকারীরা। তার চোখ বেঁধে বিভিন্ন ঝোপ ঝাড়ে দিনের বেলা অপেক্ষা করানোর পর শুক্রবার রাতে হাঁটা শুরু করে। রাত ৩টার দিকে খাল পার হয়ে একটি গ্রামে যায় তারা। এ সময় হুমায়ুন কবিরের চোখের কাপড় খুলে দিয়ে বাইরে দাঁড়াতে বলে অপহরণকারীরা একটি বাড়িতে ঢোকে। তারা বাড়ি থেকে বের হবার আগেই তিনি পালিয়ে আসেন।
ঈদগাঁও পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ মিনহাজ মাহমুদ ভুইয়া বলেন, সবকিছু শুনেছি। পুলিশ সদস্যরা তাদের বহনকারী অটোরিকশাটি আটকে রেখেছিল কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। প্রমাণ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ঈদগড় পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এএসআই মোরশেদুল আলম বলেন, লেদু ও হুমায়ুন পালিয়ে আসতে সক্ষম হলেও ডাকাতরা অপর এক গৃহস্থকে অপহরণ করে নিয়ে গেছে। তাকে উদ্ধারে অভিযান চালানো হচ্ছে।
সায়ীদ আলমগীর/আরএআর/জেআইএম