সন্তানকে বাঁচাতে শিক্ষক বাবার করুণ আকুতি
৮ বছর পর্যন্ত অন্য সবার মতো সুস্থ ও স্বাভাবিকই ছিল শিশু নাজমুল হাসান ভূঁইয়া। নিয়মিত স্কুল যাতায়াত, খেলাধুলা ও ছুটোছুটি সবই ঠিক ছিল তার। আর একমাত্র সন্তানকে নিয়ে সুখেই ছিলেন এরশাদুর রহমান ভূঁইয়া দম্পতি। শিক্ষক বাবার কাছে যখন যা আবদার করতো খুব সহজেই সেটা পেয়ে যেত নাজমুল।
সুখের এ সংসারে হঠাৎ করেই দুর্যোগ নেমে আসে ২০১৬ সালে। অসুস্থ হয়ে পড়ে নাজমুল। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, শ্যামলীতে অবস্থিত শিশু হাসপাতালসহ একাধিক হাসপাতালে চিকিৎসা করানোর পরও সুস্থ হয়ে ওঠে না সে। স্বজন ও পরিচিত কিছু ডাক্তারের পরামর্শে নাজমুলকে নিয়ে যাওয়া হয় ভারতের ক্রিশ্চিয়ান মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হসপিটালে (সিএমসি ভেলোর)। সেখানে তাকে হেমাটোলজি বিভাগে ভর্তি করা হয়।
সেখানে অসংখ্য পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর ডাক্তাররা জানতে পারেন নাজমুল ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত। এরপর সেখানেই তার বোনমেরু (অস্থিমজ্জা) ট্রান্সপ্লান্ট করা হয়। মায়ের বোনমেরু নিয়ে নাজমুলের ট্রান্সপ্লান্ট করা হয়। এরপর সেখানে কিছুদিন থাকার পর দেশে নিয়ে আসা হয় তাকে। ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠতে থাকে সে। আবারও হাসি ফুটতে শুরু করে বাবা-মায়ের মুখে। সেই হাসি আবারও মলিন হয়ে গেছে তাদের। কারণ, নাজমুল এখন দুই কানে কিছুই শুনছে না। সবাই যখন কথা বলছে সে শুধু তাকিয়ে থাকছে। গত ডিসেম্বরে মাসে প্রচণ্ড জ্বরের কারণে এ অবস্থা হয়েছে নাজমুলের। এমনটাই জানিয়েছেন ডাক্তাররা। তারা এটাও বলেছেন, প্রাকৃতিকভাবে নাজমুল আর কখনই কানে শুনবে না।
আবারও তাকে নিয়ে যাওয়া হয় ভারতের ক্রিশ্চিয়ান মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হসপিটালে। সেখানকার ডাক্তাররাও একই কথা বলেছে যে, সে আর কানে শুনবে না। তবে তারা এটাও বলেছেন, সার্জারির মাধ্যমে তার দুই কানে ডিভাইস বসিয়ে দিলে সে আবার শুনতে পাবে।
শনিবার বিকেলে জাগো নিউজের এ প্রতিবেদককে এভাবেই একমাত্র সন্তানের অসুস্থতার কথাগুলো বলছিলেন পাবনা টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের জুনিয়র ইন্সট্রাক্টর এরশাদুর রহমান ভূঁইয়া।
তিনি বলেন, ছেলের চিকিৎসা করাতে গিয়ে ইতোমধ্যে ৮০ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। যা জোগার করেছিলাম আত্মীয়-স্বজন ও সম্পত্তি বিক্রি করে। এখনও তার অনেক চিকিৎসা বাকি। টাকার অভাবে এখন আর চিকিৎসা করাতে পারছি না। আগামী মাসে আবার ভেলোরে নিয়ে যেতে হবে তাকে। এজন্য আরও ২৩ লাখ টাকা দরকার। অথচ আমার কাছে মাস শেষের বেতন ছাড়া কোনো টাকা নেই।
তিনি আরও বলেন, সন্তানের চিকিৎসা করানোর মতো কোনো টাকা আর নেই আমার কাছে। জোগার করতে পারবো না সেটা জানার পরও বসেও থাকতে পারছি না। চোখের সামনে ধুকে ধুকে শেষ হয়ে যাচ্ছে ছেলেটা, না সহ্য করতে পারছি, না চিকিৎসা করাতে। বাবার সামনে সন্তান যন্ত্রণায় ছটফট করছে এটা দেখা আরেক যন্ত্রণার।
অসহায় এ বাবা করুণ আকুতি নিয়েই বললেন, ভাই কার কাছে সাহায্য চাইবো, কে দেবে আমাকে টাকা?
আমাদের সমাজে ধনী গরিব মিলে সব ধরনের মানুষ আছেন। সময়ে অসময়ে সবাই মানুষের বিপদে ঝাঁপিয়ে পড়েন। সেই সব মানুষগুলোর দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। আসুন নাজমুলকে সাহায্য করি। হয়তো আমাদের সামান্য অনুদানে পুরোপুরো সুস্থ হয়ে উঠতে পারে নাজমুল। তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারবেন ০১৭৯৫-৬৭১৫৭৪ নম্বরে। এটি তার বাবার নম্বর।
এছাড়াও সাহায্য পাঠাতে পারেন এই ঠিকানায় : মো. এরশাদুর রহমান ভূঁইয়া, চলতি হিসাব নং ৪১১৪৩৪০৬৩২৭২, সোনালী ব্যাংক লিমিটেড, পাবনা শাখা, পাবনা।
এমএএস/আরআইপি