ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

রায় যেন দ্রুত কার্যকর হয়

জেলা প্রতিনিধি | টাঙ্গাইল | প্রকাশিত: ০৫:৫৮ পিএম, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

টাঙ্গাইলের মধুপুরে চলন্ত বাসে কলেজছাত্রী জাকিয়া সুলতানা রূপাকে গণধর্ষণ ও হত্যা মামলার রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে তার পরিবারের সদস্যরা বলছেন, দেশের অন্য বিচারপ্রার্থীরাও যেন দ্রুত ন্যায়বিচার পায়। সেইসঙ্গে এ রায় দ্রুত বাস্তবায়ন চায় তারা।

এ মামলার রায়ে পাঁচ আসামির মধ্যে চারজনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন টাঙ্গাইল নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল। সেইসঙ্গে একজনকে সাত বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।

সোমবার এ রায় ঘোষণার পর আদালতের বাইরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন রূপার ভাই হাফিজুল ইসলাম প্রামাণিক ও বোন মাশরুফা আক্তার পপি।

সোমবার বেলা সোয়া ১১টায় এ রায় ঘোষণা করেন টাঙ্গাইল নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের ভারপ্রাপ্ত বিচারক এবং অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক আবুল মনসুর মিঞা।

মামলার এ রায়ে সন্তুষ্ট হয়েছেন রূপার পরিবার। আদালতের দেয়া এ রায়ের দ্রুত বাস্তবায়ন চায় ক্ষতিগ্রস্ত এ পরিবার। রায় ঘোষণাকালে আলালতে চত্বরে রূপার ভাই ও বোনসহ পরিবারের সদস্যদের কান্নায় ভারি হয়ে ওঠে আকাশ বাতাস। শোকাবহ হয়ে পড়ে আদালত প্রাঙ্গণ।

রায়ের আগে দোষীদের ফাঁসির দাবিতে আদালত প্রাঙ্গণে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন টাঙ্গাইল আইনজীবীরাসহ বিভিন্ন মানববাধিকার সংস্থার নেতৃবৃন্দ। এ রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন সবাই।

নিহত রূপা ছিলেন সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার আমানবাড়ি গ্রামের মৃত মো. জেলহক প্রামাণিকের মেয়ে। ৩ বোন ও ২ ভাইয়ের মধ্যে রূপা ছিলেন তৃতীয়। বড় ভাই হাফিজুর রহমান চাকরি করেন একটি কোম্পানিতে। বড় বোন জেসমিন আক্তার গৃহিণী।

এরপরই ছিলেন জাকিয়া সুলতানা রূপা। তিনি বগুড়া আজিজুল হক কলেজ থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে অনার্স-মাস্টার্স শেষ করে ঢাকার আইডিয়াল ‘ল’ কলেজে এলএলবি শেষ বর্ষে অধ্যায়নরত ছিলেন।

রূপার ভাই হাফিজুল বলেন, দ্রুততম সময়ের মধ্যে বিচারকাজ শেষ হওয়া এবং চার খুনির ফাঁসির আদেশ হওয়ায় আমরা সন্তুষ্ট। আমরা ন্যায়বিচার পেয়েছি। আরও ভালো লাগত যদি ছবর আলীর (সুপারভাইজার) যাবজ্জীবন হত।

তিনি বলেন, আমি চাই আমার বোনের মতো আর কেউ যেন এ ধরনের ঘটনার শিকার না হন। দেশের অন্য বিচারপ্রার্থীরা যেন দ্রুত ন্যায়বিচার পান।

রূপার ছোট বোন পপি বলেন, এ রায়ে আমরা খুশি। রায় যেন দ্রুত কার্যকর করা হয়। আর আমার পরিবারের পাশে থাকার জন্য সরকার, স্বাস্থ্যমন্ত্রী, আইনজীবী ও সাংবাদিকদের প্রতি অশেষ কৃতজ্ঞতা।

ট্রাইব্যুনালের বিশেষ পিপি নাছিমুল আক্তার বলেন, আমরা আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের আশা করেছিলাম। পেয়েছি। এত দ্রুত সময়ে কোনো মামলার নিষ্পত্তি হয়নি। এটি একটি উদাহরণ হয়ে থাকবে।

প্রসঙ্গত, গত ২৫ আগস্ট বগুড়া থেকে ময়মনসিংহ যাওয়ার পথে রূপাকে চলন্ত বাসে ধর্ষণ করে পরিবহন শ্রমিকরা। বাসেই তাকে হত্যার পর মধুপুর উপজেলায় পঁচিশ মাইল এলাকায় বনের মধ্যে রূপার মরদেহ ফেলে রেখে যায়।

এলাকাবাসীর কাছ থেকে খবর পেয়ে পুলিশ ওই রাতেই অজ্ঞাত নারী হিসেবে তার মরদেহ উদ্ধার করে। পরদিন ময়নাতদন্ত শেষে রূপার মরদেহ বেওয়ারিশ হিসেবে টাঙ্গাইল কেন্দ্রীয় গোরস্থানে দাফন করা হয়।

এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে মধুপুর থানায় হত্যা মামলা করে। পত্রিকায় প্রকাশিত ছবি দেখে রূপার ভাই হাফিজুর রহমান মধুপুর থানায় গিয়ে ছবির ভিত্তিতে তাকে শনাক্ত করেন।

গত ২৮ আগস্ট এ ঘটনায় জড়িত অভিযোগে ময়মনসিংহ-বগুড়া সড়কের ছোঁয়া পরিবহনের হেলপার শামীম (২৬), আকরাম (৩৫) ও জাহাঙ্গীর (১৯) এবং চালক হাবিবুর (৪৫) ও সুপারভাইজার সফর আলীকে (৫৫) গ্রেফতার করে পুলিশ। তাদেরকে আদালতে হাজির করা হলে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়।

আরিফ উর রহমান টগর/এএম/এমএস

আরও পড়ুন