গণিত প্রশ্ন ফাঁস : ২ শিক্ষক ৩ পরীক্ষার্থী আটক
গাজীপুরের কালীগঞ্জে একটি এসএসসি পরীক্ষা কেন্দ্রে শনিবার মোবাইল ফোনে গণিতের প্রশ্ন ফাঁস ও উত্তর লেখার সময় ৩ পরীক্ষার্থীকে আটক করা হয়েছে।
এ সময় দায়িত্ব অবহেলার জন্য কক্ষের দুই শিক্ষককেও আটক হয়। এছাড়া আরও ৬ পরীক্ষার্থীকে শনিবারের গণিত পরীক্ষা থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
আটককৃত শিক্ষকরা হলেন- চুপাইর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সঞ্জিব কুমার দেবনাথ ওরফে সবুজ ও জাঙ্গালিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নজরুল ইসলাম ওরফে মানিক। পরীক্ষার্থীরা হলো- প্রণয় দাস, সঞ্জয় শীল ও সজিব দাস। তারা তিনজনই স্থানীয় চুপাইর উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার নোয়াপাড়া ময়েজ উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে অনিয়মের অভিযোগ পেয়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) শনিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে গোপনে ওই পরীক্ষা কেন্দ্রে গিয়ে বাইরে অবস্থান নেয়।
পরে ৬নং কক্ষে প্রবেশ করে প্রণয় দাসকে মোবাইল থেকে উত্তর লেখতে দেখেন তিনি। মোবাইলটি পরীক্ষা করে ফেসবুক ও ম্যাসেঞ্জারে ৫টি আইডি থেকে গণিতের ‘খ’ সেটের এমসিকিউ প্রশ্ন ও উত্তর পাওয়া যায়।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. সোহাগ হোসেন জানান, পরীক্ষার্থী প্রণয় দাসের মোবাইলে ‘প্রশ্ন ধারা ৫৩’, ‘এসএসসি এক্সাম ২০১৮ (গণিত)’সহ ৫টি ম্যাসেঞ্জার গ্রুপ পাওয়া যায়। ম্যাসেঞ্জার ঘেটে দেখা যায়, ‘প্রশ্ন ধারা ৫৩’ থেকে সকাল ৯টায় সে প্রশ্ন ও সাড়ে ৯টায় ৩০ নম্বরের উত্তর পেয়েছে। এসব প্রশ্ন ও উত্তরগুলো সে ওই দুই ছাত্রকে দিয়েছিল। অন্য ৬ পরীক্ষার্থীরা উত্তরগুলো মোবাইল থেকে দেখে লিখছিল। পরীক্ষা হলে মোবাইল নিষিদ্ধ হলেও দুই শিক্ষকের সামনেই তারা মোবাইল থেকে উত্তরগুলো লিখছিল।
পরে মোবাইলটি জব্দ করে ওই দুই শিক্ষক ও তিন পরীক্ষার্থীকে আটক করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। একইসঙ্গে তিন পরীক্ষার্থী প্রণয় দাস, সঞ্জয় শীল ও সজিব দাসকে এক বছরের জন্য বহিষ্কার এবং অপর ৬ জন শিক্ষার্থীকে গণিত পরীক্ষার জন্য বহিষ্কার করা হয়।
কেন্দ্র সচিব মো. গোলজার হোসেন জানান, এ ঘটনায় তিনি বাদী হয়ে কালিগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন। দুই শিক্ষককে পরীক্ষার দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন।
কালীগঞ্জ থানা পুলিশের ওসি আলম চাঁদ জানান, প্রাথমিকভাবে প্রশ্ন ফাঁসে তিন পরীক্ষার্থীর জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। আর দুই শিক্ষককে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
আব্দুর রহমান আরমান/এএম/জেআইএম