ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

মাটি কাটার তালিকায় ৭ গ্রাম পুলিশ!

জেলা প্রতিনিধি | নওগাঁ | প্রকাশিত: ০৪:২১ পিএম, ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

নওগাঁর সাপাহার উপজেলার ৩নং তিলনা ইউনিয়ন পরিষদের রাস্তা-ঘাটসহ বিভিন্নস্থানে মাটি কাটা নিয়ে তিনটি প্রকল্পে ৪০ দিনের কর্মসূচি শুরু হয়েছে। আর এ কর্মসূচিতে ৭ জন গ্রাম পুলিশ ও বাইরের তিনজনসহ মোট ১০ জনের নাম দেয়া হয়েছে।

তারা কাজ না করলেও হাজিরা দেখিয়ে টাকা তুলে আত্মসাৎ করছেন বলে অভিযোগ স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মোসলেম উদ্দীনের বিরুদ্ধে। বিষয়টি নিয়ে ইউপি মেম্বাররা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসকসহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করেছেন।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ইউনিয়ন পরিষদের মাটি কাটা ইজিপিপি কর্মসূচির আওতায় রাস্তার বিভিন্নস্থানে তিনটি প্রকল্পে ৪০ দিনের কর্মসূচি চলমান আছে। আর তিনটি প্রকল্পে গ্রামের ১৪১ জন নারী-পুরুষের নাম আছে। আর এ হতদরিদ্রদের তালিকায় নাম দেয়া হয়েছে ইউনিয়নের ১০ জন গ্রাম পুলিশের। তারা কাজ না করেও তিনটি প্রকল্পের সভাপতি ও সুপারভাইজারকে নিয়মিত খাতায় হাজিরা দেখিয়ে ভুয়া কাগজপত্রের মাধ্যমে তাদের নামে টাকা উত্তোলন করে আত্মসাত করছেন ইউপি চেয়ারম্যান।

সরেজমিনে জানা যায়, ইউনিয়নের পদলপাড়া গোটপাড়া উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে কর্মসূচির কাজ করছেন হতদরিদ্র নারী-পুরুষরা। কেউ মাটি কাটছেন, আবার কেউ কাটা মাটি মাথায় করে নিয়ে মাঠে ফেলছেন। সেখানে ৪৫ জন শ্রমিক কাজ করার কথা থাকলেও উপস্থিত ছিল ৩৯ জন। বাকি ৬ জনের মধ্যে ২ জন গ্রাম পুলিশ। তবে গ্রাম পুলিশ সেখানে উপস্থিত ছিলেন না। প্রতিদিন সকাল সাড়ে ৭টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত কাজ করতে হয়। প্রতিজন পারিশ্রমিক হিসেবে পায় ২০০ টাকা। সঞ্চয়ের জন্য ২৫ টাকা রেখে পাঁচদিন পর পর পারিশ্রমিকের টাকা দেয়া হয়।

কর্মসূচিতে গ্রাম পুলিশের নাম দেয়ায় বঞ্চিত হচ্ছেন হতদরিদ্ররা। গ্রাম পুলিশের পরিবর্তে হতদরিদ্রদের নাম দেয়া হলে কিছুটা হলেও পরিবার পরিজন নিয়ে সুবিধা ভোগ করতে পারতো তারা। চেয়ারম্যান সরকারি টাকা আত্মসাৎ করায় সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন সচেতন মহল।

কর্মসূচির সুপারভাইজার লুৎফর রহমান বলেন, তার অধীনে ৪৫ জন শ্রমিক কাজ করছেন। গত ৩০ জানুয়ারি উপস্থিত ছিল ৩৯ জন। বাকি ৬ জনের মধ্যে ২ জন গ্রাম পুলিশ। মাঝে মধ্যে গ্রাম পুলিশরা আসেন। দেখে আবার চলে যান। গত এক সপ্তাহ থেকে তারা আর আসেননি।

ইউপি মেম্বার ও অভিযোগকারী আবু সাহরিয়ার সরদারসহ কয়েকজন মেম্বার বলেন, কর্মসূচিতে কাজ করবে হতদরিদ্ররা। যেখানে ৭ জন গ্রাম পুলিশ ও বাহিরের তিনজনসহ মোট ১০ জনের নাম দেয়া হয়েছে। গ্রাম পুলিশদের নাম কেন কর্মসূচিতে আসবে। তারা তো সরকারি চাকরি করেন। ভুয়া কাগজ তৈরি করে টাকাগুলো তুলে আত্মসাৎ করছেন চেয়ারম্যান। বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানানা তারা।

সাপাহার উপজেলার তিলনা ইউপি চেয়ারম্যান মোসলেম উদ্দীন তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ মিথ্যা বানোয়াট ও ভিত্তিহীন দাবি করে বলেন, ৪০ দিনের কর্মসূচিতে ১৪১ জন হতদরিদ্র নারী-পুরুষ কাজ করছেন। কাজটাকে ভালোভাবে তদারকি করতে ৭ জন গ্রাম পুলিশকেও কর্মসূচিতে কাজে নেয়া হয়েছে। যার ফলে উপজেলার মধ্যে সবচেয়ে ভালো কাজ হয়েছে বলে মনে করি। এছাড়া ইউনিয়নের দুইজন মেম্বার কিছু সুবিধা নেয়ার জন্য দীর্ঘদিন থেকে চেষ্টা চালিয়ে আসছে। তাদের সুবিধা না দেয়ায় আমার বিরুদ্ধে বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দিয়েছেন।

উপজেলা ত্রান ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আবু সৈয়দ খান বলেন, যেহেতু বিষয়টি নিয়ে ইউএনও স্যার তদন্ত করতে দিয়েছে, সেহেতু আমি কোনো মন্তব্য করতে পারবনা।

সাপাহার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফাহাদ পারভেজ বসুনীয়া বলেন, চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে কর্মসূচির কাজের অনিয়মের ব্যাপারে অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

আব্বাস আলী/এমএএস/আরআইপি

আরও পড়ুন