বাড়িতে বাবার লাশ, কাঁদতে কাঁদতে পরীক্ষা দিলো মেয়ে
একযোগে সারাদেশে এসএসসি পরীক্ষা শুরু হয়েছে বৃহস্পতিবার। সব শিক্ষার্থী মা-বাবার দোয়া নিয়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে আসে। কিন্তু বাড়িতে বাবার লাশ রেখে চোখে জল নিয়ে এসএসসি পরীক্ষা দিতে এসেছে তাহমিনা।
ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার বাড়িতে বাবার লাশ রেখে তাহমিনা আজকের এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। এক হাতে চোখের অশ্রু মুছে আর অন্য হাতে কলম চালিয়ে পরীক্ষা দেয় তাহমিনা।
বাবার লাশ রেখে পরীক্ষা দিতে এসেছে এক ছাত্রী এ খবর পেয়ে সহপাঠী, শিক্ষক ও সদরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পূরবী গোলদার পরীক্ষার হলে ছুটে আসেন। সেইসঙ্গে তাহমিনাকে সান্ত্বনা দেন ইউএনও।
বৃহস্পতিবার সদরপুর উপজেলার বেগম কাজী জেবুন্নেছা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় পরীক্ষা কেন্দ্র বাংলা প্রথমপত্র পরীক্ষার দিন এ ঘটনা ঘটে। বাবুরচর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের সহযোগিতায় ওই ছাত্রী পরীক্ষায় অংশ নেয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বাবার লাশ বাড়িতে রেখে পরীক্ষার হলে ওই শিক্ষার্থীর সংবাদ পেয়ে সদরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পূরবী গোলদার ওই শিক্ষার্থীর খোঁজখবর নিতে ছুটে আসেন।
এ সময় ইউএনও ওই ছাত্রীকে জড়িয়ে ধরে সান্ত্বনা দেন। তখন তাহমিনার কান্নায় রুমের অনেকের চোখেই পানি চলে আসে। সুন্দরভাবে পরীক্ষা দেয়া ও বাড়িতে পৌঁছে দেয়ার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করেন ইউএনও।
জানা যায়, তাহমিনার বাবা মো. তোফাজ্জেল হোসেন সদরপুর উপজেলার ঢেউখালী ইউনিয়নের মধ্য বাবুরচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ছিলেন। এক বছর আগে ক্যান্সারে আক্রান্ত হন তিনি।
বৃহস্পতিবার নিজ বাড়িতে ইন্তেকাল করেন তোফাজ্জেল হোসেন। মৃত্যুকালে ওই শিক্ষক দুই কন্যা, এক ছেলে ও স্ত্রী লাইলি বেগমকে রেখে যায়। বড় মেয়ে তাহমিনা এবছর এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়।
মেজো ছেলে আজিজুল ইসলাম এলাকার একটি মাদরাসায় পড়াশোনা করছে ও ছোট মেয়ে লাবনী বাবুরচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র।
এস.এম. তরুন/এএম/আইআই