ছোট বোন তালাক দেয়ায় বড় বোনকে গলাকেটে হত্যা
দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলায় ছোট বোনকে বাঁচাতে গিয়ে বড় বোন খুন হয়েছেন। এ ঘটনায় ছোট বোন ফাতেমা খাতুন সোনিয়া (১৮) গুরুতর আহত হয়েছেন।
নিহত বড় বোন মর্জিনা খাতুন মুন্নী (২২) চিরিরবন্দর সেটেলমেন্ট অফিসের সহকারী আমিনুর রহমানের স্ত্রী। ছোট বোন ফাতেমা খাতুন সোনিয়াকে দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় সোনিয়ার সাবেক স্বামী আব্দুল্লাহ শুভকে (৩৫) আটক করেছে পুলিশ।
সোমবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে উপজেলা পরিষদ চত্বরের পাশে অবসরপ্রাপ্ত সোনালী ব্যাংক কর্মকর্তা তাজিম উদ্দীনের বাসায় এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, পঞ্চগড় জেলার তেঁতুলিয়া উপজেলার সাহেব জোত এলাকার ফাতেমা খাতুন সোনিয়ার সঙ্গে কুমিল্লার আব্দুল্লাহ শুভর ফেসবুক পরিচয় হয়। সেই সূত্র ধরে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক হয়। দুই মাস আগে তাদের বিয়ে হয়।
বিয়ের পর সোনিয়া শ্বশুরবাড়ি কুমিল্লায় গেলে শুভর আগের স্ত্রী ও সন্তানের কথা জানতে পারে। ফলে প্রতারক স্বামী শুভকে তালাক দেয়। তালাকের পর থেকে সোনিয়া বাবার বাড়ি পঞ্চগড় জেলার তেঁতুলিয়া উপজেলার সাহেব জোত এলাকায় থাকতো। ঘটনার কয়েকদিন আগে সোনিয়া চিরিরবন্দর বড় বোনের বাসায় বেড়াতে যায়।
সোমবার দুপুরে বড় বোনের স্বামী চিরিরবন্দর সেটেলমেন্ট অফিসের সহকারী আমিনুর রহমান বকুল অফিসে যায়। অফিসে থাকা অবস্থায় জানতে পারে তার বাসায় কে বা কারা তার স্ত্রী ও শ্যালিকার ওপর হামলা করেছে।
অফিস থেকে বাসায় এসে দেখে তার স্ত্রী মর্জিনা খাতুন মুন্নী ও তার শ্যালিকা ফাতেমা খাতুন সোনিয়া রক্তাক্ত অবস্থায় ঘরের মেঝেতে পড়ে আছে।
এ সময় শ্যালিকার তালাকপ্রাপ্ত স্বামী আব্দুল্লাহ শুভকে আটক করে প্রতিবেশীরা। আহত অবস্থায় মুন্নী ও সোনিয়াকে স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মুন্নীকে মৃত ঘোষণা করে এবং আহত সোনিয়াকে দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়।
আমিনুর রশীদ বকুল জানান, তার শ্যালিকার সঙ্গে আব্দুল্লাহ শুভর ফেসবুকে পরিচয়ের সূত্র ধরে দুই মাস আগে বিয়ে হয়। বিয়ের পর সোনিয়া শ্বশুরবাড়ি কুমিল্লায় গেলে শুভর আগের স্ত্রী ও সন্তান থাকায় শুভকে তালাক দেয়। তালাকের পর থেকে সোনিয়া বাবার বাড়িতে থাকতো। ঘটনার কয়েক দিন আগে সে এখানে বেড়াতে আসে। মূলত তালাক দেয়ায় শুভ এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে।
স্থানীয়রা জানায়, দুপুরে ওই বাসায় তিন যুবককে প্রবেশ করতে দেখে। কিছুক্ষণ পর বাড়ি থেকে চিৎকার ভেসে আসলে প্রতিবেশীরা ছুটে যায়। বাসায় ঢুকে রক্তাক্ত অবস্থায় দুই বোনকে পড়ে থাকতে দেখে আব্দুল্লাহ শুভকে আটক করে। এ সময় ঘটনার সঙ্গে জড়িত অপর দু’জন পালিয়ে যায়। মর্জিনা খাতুনকে ধারাল অস্ত্র দিয়ে জবাই করে হত্যা করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে চিরিরবন্দর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হারেসুল ইসলাম বলেন, নিহত মুন্নীর মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। আটক শুভকে জিজ্ঞাবাদের পর প্রকৃত ঘটনার রহস্য উদঘাটন হবে বলেও জানান তিনি।
এমদাদুল হক মিলন/এএম/আরআইপি