জেকি ডাকলেই পাগলের মতো ছুটে আসতো সুদীপ্তা
কক্সবাজারে বয়ফ্রেন্ডের মোটরসাইকেল থেকে পড়ে সুদীপ্তা চৌধুরী ইমুর (১৮) মৃত্যু নিছক দুর্ঘটনা বলে দাবি করেছেন অভিযুক্ত প্রেমিক জেকির পরিবার।
অভিযুক্ত প্রেমিকের পরিবারের দাবি, নিছক একটি দুর্ঘটনাকে হত্যাকাণ্ড বলে অপপ্রচার চালিয়ে স্বার্থ হাসিলের অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে একটি মহল।
সোমবার দুপুরে কক্সবাজারের একটি হোটেলে সংবাদ সম্মেলনে এমন দাবি করেন অভিযুক্ত প্রেমিকের পরিবার। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন- প্রেমিকা হত্যার অভিযোগে গ্রেফতার জেকি কুমার সুশীলের মা।
তিনি বলেন, জেকির চলন্ত মোটরসাইকেল থেকে পড়ে মারা যাওয়া সুদীপ্তার পরিবারের সঙ্গে আমাদের পরিবারের ভালো সম্পর্ক আছে। দুই পরিবারের সম্পর্কের কারণে ছেলে-মেয়ে একে অন্যের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়ায়।
তাদের সম্পর্কের কথা দুই পরিবার জানতো। পরিবারের যে কোনো অনুষ্ঠানে তারা একে-অপরের বাড়িতে যেতো। যার প্রমাণ গত ২৫ ডিসেম্বর সুদীপ্তা এবং তার মা গোপী চৌধুরী আমাদের বাসায় বেড়াতে আসেন।
আমরা জানতে পেরেছি, ঘটনার দিন প্রেমিকা সুদীপ্তার ইচ্ছায় দুপুরের খাবার খেতে ইনানী যাচ্ছিল জেকি। কিন্তু দুর্ভাগ্যবসত কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের মারমেড ইকো-রিসোর্ট সংলগ্ন এলাকায় পৌঁছালে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে তারা।
গুরুতর আহত সুদীপ্তাকে স্থানীয়দের সহযোগিতায় উদ্ধার করে উখিয়া এবং পরে কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে যায় জেকি। কিন্তু চিকিৎসাধীন অবস্থায় সুদীপ্তা মারা যায়। দুর্ঘটনার পর প্রায় ৩ ঘণ্টা নিজের প্রিয় মানুষটিকে বাঁচাতে চেষ্টা চালায় জেকি। সে নিজেই দুর্ঘটনার খবর আমাদের জানিয়েছিল।
জেকির মা প্রশ্ন রেখে বলেন, যদি সে সুদীপ্তাকে হত্যা করতে চাইতো তবে পালিয়ে গেল না কেন? এছাড়া গোপনে নিয়ে তাকে মারতে পারতো। কারণ জেকি ডাকলেই সুদীপ্তা পাগলের মতো ছুটে আসতো। তারা অন্ধের মতো একে-অপরকে ভালোবাসতো। তার জন্য দিনদুপুরে সুদীপ্তাকে হত্যা করতো না জেকি।
দুর্ঘটনার স্থানে প্রত্যক্ষদর্শীর বরাত দিয়ে জেকির মা বলেন, ইনানী যাওয়ার পথে সুদীপ্তা চলন্ত গাড়ি থেকে পড়ে যায়। কিন্তু দুঃখের বিষয় প্রকৃত এ ঘটনাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে ওঠে পড়ে লেগেছে স্বার্থান্বেষী একটি মহল। তারা দুর্ঘটনাকে হত্যাকাণ্ড বলে স্বার্থ হাসিল করতে চায়।
তিনি আরও জানান, ইতোমধ্যে সুদীপ্তার চাচা অ্যাডভোকেট শ্যামল চৌধুরীর প্ররোচনায় তার বাবা ঝুলন চৌধুরী একটি মিথ্যা হত্যা মামলা করেছেন। এ মামলায় জেকি কারাগারে রয়েছে। নিজের চোখের সামনে প্রিয় মানুষটির মৃত্যুতে মানসিক ভারসাম্যহীনের মতো দিন কাটাচ্ছে জেকি।
এ সময় তার মানসিক সাপোর্ট দরকার ছিল। আমারও মেয়ে আছে, সুদীপ্তাকে আমি পুত্রবধূ হিসেবে জানতাম। তার অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যুতে আমাদের মনেও রক্তক্ষরণ হচ্ছে। একজন পরপারে চলে গেছে। এখন অারেকজন জীবিত মানুষকে তিলে তিলে মারা কি উচিত?
এ সময় গণমাধ্যমকে দুর্ঘটনার প্রকৃত তথ্য তুলে ধরার অনুরোধ জানান তিনি। এতে একদিকে যেমন সমাজে সত্য প্রকাশিত হবে, তেমনি ন্যায়-বিচার পাবে নিরপরাধ জেকি এমনটি আশা করছেন তার মা।
সায়ীদ আলমগীর/এএম/আরআইপি