কারাগারে থেকেও হত্যা মামলার আসামি!
গত বছরের সেপ্টেম্বর থেকে জেলহাজতে রয়েছেন জুনেদ আহমদ। অথচ তাকেই আসামি করা হয়েছে গত ৭ জানুয়ারি টিলাগড়ে ছাত্রলীগকর্মী তানিম আহমদ খান খুনের ঘটনার মামলায়। এ নিয়ে হতবাক জুনেদ আহমদের স্বজনরা।
অভ্যন্তরীণ কোন্দলের জের ধরে গত ৭ জানুয়ারি রাতে সিলেট নগরের টিলাগড় পয়েন্টে প্রতিপক্ষের হাতে খুন হন ছাত্রলীগ কর্মী তানিম খান। এ ঘটনায় গত বুধবার রাতে তানিমের বন্ধু দেলোয়ার হোসেন রাহী বাদী হয়ে ২৯ ছাত্রলীগ নেতাকর্মীর নামোল্লেখ করে শাহপরান থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। এজাহারভুক্ত আসামিদের একজন জুনেদ আহমদ (২৪)।
সিলেট নগরের রাজপাড়া সুরভী আবাসিক এলাকার ১২ নম্বর বাসার সিরাজুল ইসলামের ছেলে জুনেদ।
সিরাজুল ইসলাম বলেন, গত সেপ্টেম্বর থেকে জুনেদ কারান্তরীণ। তিনি বলেন, কারাগারে থাকা অবস্থায় জুনেদ কীভাবে তানিম খুনে জড়িত থাকতে পারে।
জুনেদ আহমদের বাবা আরও বলেন, ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে গোলাম চৌধুরী রাজনের উপর হামলার ঘটনার মামলায় আসামি ছিল জুনেদ। ওই মামলায় গত ২৪ সেপ্টেম্বর জুনেদ আদালতে আত্মসমর্পণ করলে তাকে জেলহাজতে পাঠানো হয়। পরে নভেম্বর মাসে ওই মামলায় জুনেদের জামিন হয়। কিন্তু তার বিরুদ্ধে দ্রুত বিচার আইনে ২০১৪ সালের একটি মামলা থাকায় সে জেলহাজত থেকে মুক্তি পায়নি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা গোলাম চৌধুরী রাজনের উপর ২০১৭ সালের ৩০ জানুয়ারি রাতে নগরের টিলাগড়ে হামলার ঘটনা ঘটে। ওই সময় রাজনের সঙ্গে ছাত্রলীগকর্মী তানিম (যিনি খুন হয়েছেন) ও মাবরুরও ছিলেন। হামলায় গুরুতর আহত হন রাজন। এ ঘটনায় তার ভাই গোলাম হাসান চৌধুরী সাজন বাদী হয়ে ১০ জনের নামোল্লেখ করে শাহপরান থানায় মামলা (জিআর-২৪/২০১৭) করেন।
মামলায় জেলা ছাত্রলীগের তৎকালীন সহ-সভাপতি ছয়েফ খান, জুনেদ আহমদ, মঞ্জুর আহমদ, হাসান, কামরান আহমদ, উজ্জ্বল, সাগর, রুমান আহমদ, অসীম ও জামিল আহমদের নামোল্লেখ ছিল।
এদিকে, ছাত্রলীগ কর্মী তানিম আহমদ খান হত্যার আসামি হিসেবে জুনেদকে গ্রেফতার করতে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর তার বাসায় অভিযান চালায় শাহপরান থানাপুলিশ। ওই সময় জুনেদ কারাগারে থাকার বিষয়টি পুলিশকে অবহিত করেন তার বাবা সিরাজুল ইসলাম।
এ বিষয়ে সিরাজুল ইসলাম বলেন, বাসায় পুলিশ এসেছিল। আমরা জুনেদ কারাগারে থাকার কাগজপত্র দেখিয়েছি। সে যে সেপ্টেম্বর থেকে কারাগারে রয়েছে, তা পুলিশকে জানিয়েছি।
এ বিষয়ে সিলেট মহানগর পুলিশের শাহপরান থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আখতার হোসেন বলেন, জুনেদ আহমদের বিষয়ে পুলিশ তদন্ত করে দেখবে। তিনি যদি কারাগারে থেকে থাকেন, তবে সে অনুযায়ী তানিম হত্যা মামলার চার্জশিটে তার নাম বাদ দেয়া হবে।
ছামির মাহমুদ/এমএএস/আইআই