জান্নাতের জন্য ৯ দম্পতির যুদ্ধ
ফেনী ২৫০ শয্যা জেলা সদর হাসপাতালে ফেলে যাওয়া ঠোঁট কাটা শিশু জান্নাত এখন সুস্থ রয়েছে। তাকে দত্তক নিতে চায় নয় দম্পতি। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ যাচাই বাছাই করে আইনগতভাবে দত্তক দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
জানা যায়, ফেনী ২৫০ শয্যা জেলা সদর হাসপাতালের সিঁড়ির নিচ থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় ২ মাসের এক কন্যা শিশুকে উদ্ধার করা হয়েছিল গত ২১ ডিসেম্বের। ওইদিন হাসপাতালে আসা রোগীর স্বজনরা সিঁড়ির নিচে শিশুটিকে দেখতে পেয়ে কর্তৃপক্ষকে অবহিত করে। পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ শিশুটিকে উদ্ধার করে হেফাজতে নেয়।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এবং উই ক্যান চ্যাঞ্জ ইয়ুথ সোসাইটির সহযোগিতায় শিশুটিকে ঢাকায় নিয়ে ঠোঁটের অপারেশন করানো হয়। তার নাম রাখা হয় জান্নাত নূর।
সেই নূরের সর্বশেষ অবস্থা জানাতে সোমবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করেন ফেনী ২৫০ শয্যা জেলা সদর হাসপাতালের আয়োজনে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক ভিত্তিক অলাভজনক প্রতিষ্ঠান 'স্মাইল ট্রেন' ও স্থানীয় সেচ্ছাসেবী সংগঠন উই ক্যান চ্যাঞ্জ ইয়ুথ সোসাইটি কর্তৃপক্ষ।
ফেনীর সিভিল সার্জন ডা. হাসান শাহরিয়ার কবিরের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন 'স্মাইল ট্রেন প্লাস্টিক সার্জন অধ্যাপক ডা. বিকে দাস বিজয়।
সংবাদ সম্মেলনে ফেনীর সিভিল সার্জন ডা. হাসান শাহরিয়ার কবির সাংবাদিকদের জানান, অপারেশন করার পরে এখন জান্নাতের ঠোঁট কাটা তেমন বোঝা যাচ্ছে না। পাশাপাশি বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সে স্বাভাবিক শিশুদের মতো হয়ে যাবে। তাকে দত্তক নেয়ার জন্য ইতোমধ্যে ৯ দম্পতি আবেদন করেছেন। আইনি প্রক্রিয়া শেষ করে যোগ্য অভিভাবকের হাতে শিশুটিকে তুলে দেয়া হবে।
উই ক্যান চ্যাইঞ্জ ইয়ুথ সোসাইটির স্বেচ্ছাসেবক মনজিলা আক্তার মিমির নিবিড় তত্ত্বাবধানে রয়েছে শিশুটি। মিমি বলেন, আমি চাই শিশুটি তার আপন বাবা-মার কাছে ফিরে যাক অথবা সক্ষম অভিভাবকের কাছে তুলে দেয়া হোক।
ফেনী পৌরসভার প্যানেল মেয়র আশ্রাফুল আলম গিটার জানান, শিশুটির লালন-পালন ও চিকিৎসার জন্য তারা সবসময় আন্তরিক ছিলেন।
'স্মাইল ট্রেন প্লাস্টিক সার্জন অধ্যাপক ডা. বিকে দাস বিজয় বলেন, ঠোঁট কাটা জন্মগত রোগ হলেও বর্তমানে বিনামূল্যে এর চিকিৎসা সেবা পাওয়া যাচ্ছে।
জহিরুল হক মিলু/এমএএস/আইআই