‘মুটা বস্তা গায় দিয়েও শিতিত্তে বাঁচতিচিনে’
শৈত্যপ্রবাহে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে যশোরের জনজীবন। গত কয়েক দিনের কনকনে শীতে জুবুথুবু হয়ে পড়েছে সাধারণ মানুষ। প্রতিদিনই কমছে তাপমাত্রা। সোমবার সকালে যশোরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৫ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। রোববার সকালে যশোরে সর্বনিম্ন ৬ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়।
এর আগে শনিবার যশোরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর শুক্রবার দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল যশোরে। এদিন এ জেলায় ৭ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। বৃহস্পতিবার তাপমাত্রা ছিল ৭ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যশোর বিমান বাহিনীর আবহাওয়া অফিস এ তথ্য জানিয়েছে।
আবহাওয়া অধিদফতরের তথ্য মতে, খুলনা বিভাগ জুড়ে এখন মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে চলছে। আরও কয়েকদিন এই অবস্থা থাকতে পারে। যশোরে গত ৫ দিনে ৭ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা কমেছে। গত মঙ্গলবার এই তাপমাত্রা ছিল ১৩ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর সোমবার এই তাপমাত্রা ৫ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে এসেছে।
জানা যায়, গত কয়েক বছর পর এবার পৌষের মাঝামাঝিতে শৈত্যপ্রবাহ শুরু হয়েছে। ২০১৩ সালের জানুয়ারিতে যশোরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছিল ৪ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
এদিকে প্রচণ্ড শীতের কারণে মানুষের স্বাভাবিক কর্মকাণ্ড ব্যাহত হচ্ছে। অতি প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘর থেকে বের হচ্ছেন না। খুব সকালে খেতে প্রতিদিনের মতো চাষিদের দেখা মেলেনি। বেশি দুর্ভোগে পড়তে হয়েছে দিন আনা দিন খাওয়া মানুষগুলোকে। হাড় কাঁপানো শীতে দুর্বিসহ হয়ে উঠেছে ছিন্নমূল ও নিম্ন আয়ের মানুষের জীবন। শহরের রেলস্টেশন, বাসস্ট্যান্ড ও বস্তিবাসীরা মানবেতর জীবন-যাপন করছে।
যশোর রেল স্টেশনের পাশে ফুটপাতে গায়ে মোটা চট জড়িয়ে শুয়ে থাকা বৃদ্ধ নেসার উদ্দিন বলেন, ‘শিতির বাতাসে হাড় কাঁপায়ে যাচ্ছে। মুটা বস্তা গায় দিয়েও শিতিত্তে বাঁচতিচিনে। এইরাম আর কয়দিন যাবে? বেশি দিন গেলি বাঁচপোনানে!’
যশোর জেলা ত্রাণ কর্মকর্তা নুরুল ইসলাম জানান, এ বছর শীতে অসহায় শীতার্ত মানুষের মাঝে বিতরণের জন্য ৫৪ হাজার ২৭০ পিস কম্বল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এর ৯৫ শতাংশ বিতরণ সম্পন্ন হয়েছে।
মিলন রহমান/আরএআর/আইআই