ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

ধর্ষণে অন্তঃসত্ত্বা, গর্ভপাত করানোর সময় শিশুর মৃত্যু

জেলা প্রতিনিধি | শরীয়তপুর | প্রকাশিত: ০৯:১২ পিএম, ০৪ জানুয়ারি ২০১৮

ধর্ষণের শিকার অন্তঃসত্ত্বা এক শিশুর গোপনে গর্ভপাত করানোর সময় মৃত্যু হয়েছে। পরে ওই শিশুর মরদেহ মাটিচাপা দিয়ে গুম করার সময় দুইজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

বুধবার রাতে শরীয়তপুরের গোসাইরহাট উপজেলার চর মহিসকান্দি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। শিশুটির নাম তাসলিমা আক্তার (১৩)। সে এবার চরমহিসকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা দিয়েছিল।

পুলিশ, স্থানীয় ও নিহতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ইদিলপুর ইউনিয়নের মহিষকান্দি গ্রামের মৃত সাবুত আলী মাদবরের ছেলে নুর ইসলাম মাদবর (৬০) একই গ্রামের প্রতিবেশী স্কুলছাত্রী তাসলিমা আক্তারকে ভয় দেখিয়ে ধর্ষণ করে।

একপর্যায়ে তাসলিমা অন্তঃসত্ত্বা হয়। ঘটনা চাপা দিতে নুর ইসলাম মাদবর ও তার স্ত্রী আয়শা বেগম (৪০) অবৈধ গর্ভপাত করানোর জন্য বেড়ানোর কথা বলে গত সোমবার তাসলিমাকে নিয়ে যায়।

বুধবার রাতে কুচাইপট্টি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে নিয়ে আসা হয়। স্বাস্থ্য পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে থেকে পরিবার কল্যাণ পরিদর্শক মাজেদা বেগম তাসলিমাকে গর্ভপাত করানোর জন্য তার বাড়িতে নিয়ে যায়। রাত ১০টার দিকে অবৈধ গর্ভপাত করানোর সময় তাসলিমার মৃত্যু হয়।

rape

পরে পরিবার কল্যাণ পরিদর্শক মাজেদা বেগম ও তার ভাই আমিরুল আমির মিলে তাসলিমাকে গুম করার উদ্দেশ্যে ফের কুচাইপট্টি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে নিয়ে যায়।

মাজেদা ও আমিরুল তাসলিমাকে গুম করার জন্য স্বাস্থ্য পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের পূর্বপাশে গর্ত করছিল। তখন গ্রামপুলিশ, ইউপি চেয়ারম্যান, স্থানীয়রা ঘটনা জানতে পারলে গোসাইরহাট থানা পুলিশকে খবর দেয়।

খবর পেয়ে পুলিশ তাসলিমার মরদেহ উদ্ধার করে এবং কুচাইপট্টি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য পরিবার কল্যাণ পরিদর্শক মাজেদা বেগম ও তার ভাই আমিরুল আমিরকে গ্রেফতার করে।

ময়নাতদন্তের জন্য বৃহস্পতিবার সকাল ১১টার দিকে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে তাসলিমা আক্তারের মরদেহ।

তাসলিমা আক্তারের বাবা মো. ইউসুফ খাঁ জানান, তার দুই ছেলে চার মেয়ের মধ্যে তাসলিমা ছোট। তার মেয়ে তাসলিমাকে গত সোমবার আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়ানোর কথা বলে নিয়ে যায় প্রতিবেশী নুর ইসলাম মাদবর ও তার স্ত্রী আয়শা বেগম। একদিন পর মেয়ের খোঁজ নিয়ে দেখেন মেয়ে আসেনি। গতকাল রাতে জানতে পারেন তার মেয়েকে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনার পর অভিযুক্ত নুর হোসেন মাদবর পালিয়েছে।

কুচাইপট্টি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নাসির স্বপন বলেন, আমি ঢাকা থেকে বিষয়টি জানতে পারি। পরে পুলিশকে খবর দিই। এ ঘটনা যারা ঘটিয়েছে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত।

বিয়ষটি নিশ্চিত করে শরীয়তপুরের গোসাইরহাট সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার থান্দার খায়রুল হাসান বলেন, বুধবার রাত ১১টার দিকে আমার কাছে কুচাইপট্টি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়াম্যান ও স্থানীয়দের ফোন আসে। তারা ফোনে জানান, একটি মরদেহ গুম করার চেষ্টা চলছে। তাৎক্ষণিক বিষয়টি গোসাইরহাট থানার ওসিকে জানাই এবং পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে যাই। মরদেহটি প্লাস্টিক, দুইটি লেপ মোড়ানো অবস্থায় উদ্ধার করি। ঘটনাস্থল থেকে মাজেদা বেগম ও তার ভাই আমিরুল আমিরকে গ্রেফতার করি। যারা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

তিনি বলেন, তাসলিমাকে প্রথমে ধর্ষণ করা হয়েছে। পরে শিশুটি অন্তঃসত্ত্বা হয়। তাকে গর্ভপাত করানোর জন্য নিলে মৃত্যু হয়। মৃত্যুর পর মরদেহ গুম করার চেষ্টা হয়েছে বলেও জানান সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার।

মো. ছগির হোসেন/এএম/আইআই

আরও পড়ুন