ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী সেতু-১ যেন রামগড়ের আকাশে আলোর রেখা
সরকারের ধারাবাহিক সাফল্যের ভাণ্ডারে যুক্ত হতে যাচ্ছে ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী সেতু-১। এ সেতু নির্মাণের মধ্য দিয়ে সাবেক মহকুমা শহর রামগড়ের আকাশে দেখা দিচ্ছে আলোর রেখা। বুধবার সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী মো. ওবায়দুল কাদের এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাই কমিশনার হর্ষ বর্ধন শ্রিংলার রামগড় সফরের পর ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী সেতু-১ ও স্থলবন্দর নির্মাণের সব দুয়ার খুলে গেছে।
এ সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ হলে ভারতের দক্ষিণ ত্রিপুরা ও বাংলাদেশের বাণিজ্যিক রাজধানীর মধ্যে সরাসরি সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার ক্ষেত্রে নবদিগন্ত উন্মোচিত হবে। পাশাপাশি ত্রিপুরা ও বাংলাদেশের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য, যোগাযোগ ও ভ্রমণের ক্ষেত্রে ব্যাপক উন্নয়ন সাধিত হবে। এমনই আশা প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাই কমিশনার হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা।
৪১২ মিটার দৈর্ঘ্য ও ১৪ দশমিক ৮০ মিটার প্রস্থের মৈত্রী সেতুর নির্মাণ কাজ চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে শুরু হয়ে শেষ হবে ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে এমনটাই জানিয়েছেন ভারতীয় হাই কমিশনার হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা। ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী সেতু-১ এর নির্মাণ ব্যায় ধরা হয়েছে ১২৮ কোটি ৬৯ লাখ টাকা।
খাগড়াছড়ির রামগড়-সাব্রুম স্থলবন্দর চালুর লক্ষ্যে সীমান্তবর্তী ফেনী নদীর ওপর ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী সেতু-১ নির্মাণ কাজের জন্য ইতোমধ্যে আগরওয়াল কনস্ট্রাকশন নামে গুজরাটের একটি প্রতিষ্ঠানকে নিয়োগ দিয়েছে ভারত। ১৯২০ সালের মহকুমা শহর রামগড়ের সীমান্তবর্তী মহামুনি এবং ওপারের আনন্দপাড়া এলাকায় ফেনী নদীর ওপর সেতুটি নির্মাণের স্থান ইতোমধ্যে চূড়ান্ত করা হয়েছে। সেতু থেকে ওপারে প্রায় ১২শ মিটার অ্যাপ্রোচ রাস্তা নবীনপাড়া-ঠাকুরপল্লী হয়ে সাব্রুম-আগরতলা জাতীয় সড়কে যুক্ত হবে। অন্যদিকে বাংলাদেশ অংশে রামগড়-বারৈয়ারহাট গিয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সঙ্গে যুক্ত হবে।
ইতোমধ্যে ভারত-বাংলাদেশের যৌথ সার্ভের মাধ্যমে ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী সেতু-১ নির্মাণের জন্য বাংলাদেশ অংশের অ্যালাইনমেন্ট চূড়ান্ত করা হয়েছে। বাংলাদেশ অংশে ২শ ৮৯ মিটার অ্যাপ্রোচ সড়কের জন্য দুই একর ৮৬ শতক জমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
প্রসঙ্গত, ২০১০ সালের জানুয়ারিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দিল্লি সফরকালে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের সঙ্গে বৈঠকে রামগড়-সাবরুম স্থলবন্দর চালুর যৌথ সিদ্ধান্তের পর ২০১৫ সালের ৬ জুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশ ভারত মৈত্রী সেতু-১ নামে ফেনী নদীর ওপর প্রস্তাবিত সেতুটির ভিত্তিপ্রস্তর ফলক উন্মোচন করেন।
মুজিবুর রহমান ভুইয়া/এফএ/আরআইপি