চলন্ত বাসে গণধর্ষণের পর হত্যা মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু
টাঙ্গাইলের মধুপুরে চলন্ত বাসে ঢাকার আইডিয়াল ল’ কলেজের ছাত্রী জাকিয়া সুলতানা রূপাকে গণধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় আদালতে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়েছে।
বুধবার বেলা ১১টায় টাঙ্গাইল নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল ও অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক আবুল মনসুর মিয়া এ সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু করেন।
এ মামলায় সাক্ষ্য দেবেন মোট ১১ জন। এর মধ্যে রয়েছেন মামলা বাদী ও স্থানীয় ৮ জন। সাক্ষ্যগ্রহণের প্রথম পর্ব চলে বেলা ১১ থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত। এরপর বিকেল ৩টা থেকে সাড়ে ৪টা পর্যন্ত চলে দ্বিতীয় পর্বের সাক্ষ্যগ্রহণ।
সাক্ষ্যগ্রহণের প্রথমে সাক্ষ্য দেন মামলার বাদী ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আমিনুল ইসলাম। সাক্ষ্যগ্রহণের প্রথমদিন একজনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়। এরপর রোববার ৪ জন ও সোমবার ৪ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হবে বলে আদেশ দেন আদালতের বিচারক।
এ প্রসঙ্গে টাঙ্গাইলের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে বিশেষ পিপি এ কে.এম মো. নাছিমুল আখতার জানান, বুধবার বেলা ১১টায় টাঙ্গাইল নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল ও অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক আবুল মনসুর মিয়া এ সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু করেন।
এতে সাক্ষ্য দেবেন মোট ৯ জন। এর মধ্যে মামলার বাদী ও স্থানীয় ৮ জন। এ সাক্ষ্যগ্রহণের প্রথম পর্ব চলে বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত।
এরপর বিকেল ৩টা থেকে সাড়ে ৪টা পর্যন্ত চলে দ্বিতীয় পর্বের সাক্ষ্যগ্রহণ। এ সাক্ষ্যগ্রহণের প্রথমে সাক্ষ্য দেন মামলার বাদী ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আমিনুল ইসলাম। সাক্ষ্যগ্রহণের প্রথমদিন একজনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়।
এরপর রোববার ৪ জন ও সোমবার ৪ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হবে বলে আদেশ দেন আদালতের বিচারক। এর মধ্যে আগামী ৭ জানুয়ারি রোববার সাক্ষ্য দেবেন ৪ জন। আগামী ৮ জানুয়ারি সোমবার সাক্ষ্য দেবেন অপর ৪ জন।
এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের সহায়তায় ছিলেন বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থার টাঙ্গাইল জেলার সমন্বয়কারী অ্যাডভোকেট আতাউর রহমান আজাদ। আসামি পক্ষের আইনজীবী ছিলেন শামীম চৌধুরী দয়াল ও ঢাকা জজ কোর্টের অ্যাডভোকেট মো. দেলোয়ার হোসেন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, বুধবার রূপা হত্যা মামলার অভিযোগ গঠনের দিন ধার্য ছিল এবং গণধর্ষণ ও হত্যা মামলার ৫ আসামির উপস্থিতিতে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠিত হয়।
গত ১৫ অক্টোবর তদন্তকারী কর্মকর্তা টাঙ্গাইলের বিচারিক হাকিম আদালতে মামলার চার্জশিট দাখিল করেন। এতে গ্রেফতার হওয়ার বাসের পাঁচজনের বিরুদ্ধে রূপাকে ধর্ষণ ও হত্যার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়।
রূপাকে গণধর্ষণ ও হত্যা মামলায় চার্জশিট দাখিলের পর মামলাটি বিচারের জন্য পরদিন ১৬ অক্টোবর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে বদলি করা হয়।
এরপর বিচারিক হাকিম আদালতে মামলাটির ধার্য তারিখ ছিল ১৩ নভেম্বর। চার্জশিট এসে গেছে তাই মামলার তারিখ এগিয়ে আনার জন্য নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালে আবেদন করা হয়।
এর প্রেক্ষিতে বিচারক আব্দুল মান্নান শুনানি শেষে ১৩ নভেম্বরের স্থলে ২৫ অক্টোবর চার্জশিট গ্রহণের নতুন তারিখ ধার্য করেন। পরে গত ১৫ অক্টোবর চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা।
উল্লেখ্য, গত ২৫ আগস্ট বগুড়া থেকে ময়মনসিংহ যাওয়ার পথে রূপাকে চলন্ত বাসে ধর্ষণ করে পরিবহন শ্রমিকরা। বাসেই তাকে হত্যার পর মধুপুর উপজেলায় পঁচিশ মাইল এলাকায় বনের মধ্যে রূপার মরদেহ ফেলে রেখে যায়।
এলাকাবাসীর কাছ থেকে খবর পেয়ে পুলিশ ওই রাতেই অজ্ঞাত নারী হিসেবে তার মরদেহ উদ্ধার করে। পরদিন ময়নাতদন্ত শেষে রূপার মরদেহ বেওয়ারিশ হিসেবে টাঙ্গাইল কেন্দ্রীয় গোরস্থানে দাফন করা হয়।
এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে মধুপুর থানায় হত্যা মামলা করে। পত্রিকায় প্রকাশিত ছবি দেখে রূপার ভাই হাফিজুর রহমান মধুপুর থানায় গিয়ে ছবির ভিত্তিতে তাকে শনাক্ত করে।
গত ২৮ আগস্ট এ ঘটনায় জড়িত অভিযোগে ময়মনসিংহ-বগুড়া সড়কের ছোঁয়া পরিবহনের হেলপার শামীম (২৬), আকরাম (৩৫) ও জাহাঙ্গীর (১৯) এবং চালক হাবিবুর (৪৫) ও সুপারভাইজার সফর আলীকে (৫৫) গ্রেফতার করে পুলিশ।
তাদেরকে আদালতে হাজির করা হয়ে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। মামলার আসামিরা প্রত্যেকেই এখন টাঙ্গাইল কারাগারে রয়েছে।
আরিফ উর রহমান টগর/এএম/জেআইএম