ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

কখনো ম্যাজিস্ট্রেট, কখনো বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক

নিজস্ব প্রতিবেদক | চট্টগ্রাম | প্রকাশিত: ০৪:৩০ এএম, ০২ জানুয়ারি ২০১৮

কখনো ম্যাজিস্ট্রেট, কখনো বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক, আবার কখনো স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্য পরিচয়ে প্রতারণার মাধ্যমে মানুষের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগে এক যুবককে গ্রেফতার করেছে চট্টগ্রামের গোয়েন্দা পুলিশ। নিখোঁজ এক কলেজছাত্রীর সন্ধানে নেমে সোমবার রিয়াদ বিন সেলিম (৩৫) নামের ওই যুবককে গ্রেফতার এবং ছাত্রীকে উদ্ধার করা হয়েছে।

রিয়াদ এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইম্যানের লেকচারার পরিচয়ে বাসা ভাড়া নিয়েছেন। চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট) থেকে প্রকৌশলে স্নাতকোত্তর এবং আরবিএস গ্রুপের চেয়ারম্যান পরিচয়ে অভিজাত পরিবারের এক তরুণীকে ফুঁসলিয়ে নিয়ে যান। ফেসবুকে ব্লাড ডোনার গ্রুপ খুলে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছেন অনেক টাকা। কলেজের গণ্ডি পেরুতে না পারা এই ব্যক্তির আসলে দৃশ্যমান কোনো পেশাই নেই। মাসে ১৫ হাজার টাকা বেতনে একজন ব্যক্তিগত সহকারীও (পিএস) রেখেছেন রিয়াদ।

সোমবার সন্ধ্যায় রিয়াদ ও তার পিএস সেলিমকে নগরীর বাকলিয়া থানার কল্পলোক আবাসিক এলাকার ভাড়া বাসা থেকে আটক করেছে নগর গোয়েন্দা পুলিশ।

নগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার পলাশ কান্তি নাথ জানান, রিয়াদ নিজেকে কখনও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ইউএসটিসি, এশিয়ান উইমেন ইউনিভার্সিটিসহ বিভিন্ন প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক পরিচয় দেন। আবার কখনও ম্যাজিস্ট্রেট, নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) চট্টগ্রামের সভাপতি ও ব্ল্যাড ডোনেটিং ক্লাবের সদস্য পরিচয় দিয়ে মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক করত রিয়াদ। পরে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে টাকা হাতিয়ে নিত।

বছর দুয়েক আগে চট্টগ্রামের এক কলেজছাত্রীর গৃহকর্মীর চিকিৎসায় রক্তের প্রয়োজন হয়েছিল। ফেসবুকে রিয়াদ ব্ল্যাড ডোনেটিং ক্লাবের সদস্য পরিচয় দেয়ায় রক্তের জন্য ওই ছাত্রী তার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। পরে রিয়াদের সঙ্গে ওই ছাত্রীর পরিচয় হয় এবং এক পর্যায়ে দুইজন প্রেমের সম্পর্ক জড়িয়ে পড়েন। গত ২৬ ডিসেম্বর ওই কলেজছাত্রী বাসা থেকে পালিয়ে রিয়াদের কাছে চলে যান। এ ঘটনায় তার পরিবারের পক্ষ থেকে আকবর শাহ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়।

এ ঘটনার তদন্ত করতে গিয়ে সন্ধ্যায় বাকলিয়া থানার কল্পলোক আবাসিক এলাকার একটি বাসা থেকে রিয়াদকে গ্রেফতার করে ওই কলেজ ছাত্রীকে উদ্ধার করা হয় বলে জানান পুলিশ কর্মকর্তা পলাশ কান্তি নাথ।

তিনি বলেন বলেন, আমরা যতটুকু জেনেছি রিয়াদের বাবা একটি সিকিউরিটি কোম্পানিতে চাকরি করেন। রিয়াদ ফ্ল্যাট ও গাড়ি বিক্রির মধ্যস্থতা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তিবাণিজ্য, গ্যাসের ঠিকাদারি ব্যবসার নামেও অনেকের সঙ্গে প্রতারণা করেছে। এছাড়া আরবিএস গ্রুপের নামে খাতুনগঞ্জে ভোগ্যপণ্য ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার তথ্যও আমরা পেয়েছি।

উদ্ধারের পর ওই ছাত্রী জানিয়েছেন, তাকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে বাসা থেকে বের করে নিয়ে আসলেও ভাইয়ের মৃত্যুর কথা বলে রিয়াদ তাকে বিয়ে করেনি। বিভিন্ন সময় তিনি রিয়াদকে টাকাও দিয়েছেন। এছাড়াও রিয়াদ ওই ছাত্রীর দুই বান্ধবীকে চাকরি দেয়ার কথা বলে টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।

আরএআর/এমএস

আরও পড়ুন