ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

প্রশাসনের তৎপরতায় বাঁচল মা ও শিশুর প্রাণ

জেলা প্রতিনিধি | ঠাকুরগাঁও | প্রকাশিত: ০৩:১০ এএম, ০২ জানুয়ারি ২০১৮

নির্জন মাঠে ভরদুপুরে যমজ সন্তানের জন্ম দিলেন মানসিক ভারসাম্যহীন অজ্ঞাত এক নারী । এ ঘটনার আনুমানিক দুই ঘণ্টা পর পাশ দিয়েই গরু নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন এক কৃষক। হঠাৎ শিশুর কান্না শুনে চারপাশে খোঁজা শুরু করেন তিনি। ক্ষণিকের মধ্যেই পেয়ে যান কান্নার উৎস।

কাছে গিয়ে দেখলেন দুটি শিশুর মধ্যে একজনের নিথর দেহ পড়ে রয়েছে মায়ের পাশে। আরেকজন চিৎকার করে কান্না করছে। শিশু দুটির পাশে রক্তাক্ত শরীর নিয়ে ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে রয়েছে তাদের মা।

তাৎক্ষণিকভাবে লোকটি কি করবে এ সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য ফোন করেন স্থানীয় এক সাংবাদিককে। ওই সাংবাদিক ঘটনা শোনার সঙ্গে সঙ্গে ছুটে যান ঘটনাস্থলে। সেখান থেকে মা ও শিশুদের উদ্ধার করে ভর্তি করেন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। সেখানকার চিকিৎসক দুই শিশুর মধ্যে একজনকে মৃত ঘোষণা করে অপরজনেরও অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানান। বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে ওই সাংবাদিক উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে জানান। ঘটনা শুনে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ছুটে যান স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। সব ঘটনা দেখে তিনি বিষয়টি জেলা প্রশাসককে অবগত করেন।

জেলা প্রশাসক জীবিত শিশুটিকে বাঁচাতে তৎপর হয়ে ওঠেন এবং ইউএনওকে দ্রুত শিশুটি ও তার মাকে সদর হাসপাতালে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

জেলা শহর থেকে ঘটনাস্থলের দূরত্ব প্রায় ২২ কিলোমিটার এবং শিশুটির অবস্থা আশঙ্কাজনক ভেবে সিভিল সার্জনকে নিজের গাড়িতে তুলে নেন এবং একটি অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে ঘটনাস্থলের দিকে রওয়ানা দেন জেলা প্রশাসক।

Thakurgaon

শহর থেকে ৭ কিলোমিটার দূরে যাওয়া মাত্রই দেখা পেয়ে যান রোগীবাহী গাড়িটি। তাৎক্ষণিকভাবে গাড়ি থেকে নেমে সিভিল সার্জনকে নিয়ে ছুটে যান শিশুটির কাছে। গিয়ে দেখেন শিশুটির মা অচেতন ও শ্বাসকষ্টে ভুগছে শিশুটি। দ্রুত সেখানেই অক্সিজেন লাগিয়ে নিয়ে আসেন সদর হাসপাতালে। হাসপাতালে এসে সিভিল সার্জন জানালেন অক্সিজেন লাগাতে আর ৫ মিনিট দেরি হলে শিশুটি মারা যেত।

বর্তমানে সদর হাসপাতালে মা ও শিশু সুস্থ রয়েছে। তবে তাদের নাম-পরিচয় জানা যায়নি এখনও।

ঘটনাটি ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার জাওনিয়া গ্রামের। সোমবারের এই ঘটনায় শিশুটির প্রাণ রক্ষাকারীরা হলেন কৃষক সাদেকুল ইসলাম, সাংবাদিক নুরুল, ইউএনও আব্দুল মান্নান, জেলা প্রশাসক আব্দুল আওয়াল ও ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন শাহজাহান নেওয়াজ।

ঠাকুরগাঁও জেলার ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডা. শাহাজাহান নেওয়াজ বলেন, দ্রুত জেলা প্রশাসক স্যার নবজাতক ও মাকে হাসপাতালে ভর্তি না করলে বাচ্চাটিকে বাঁচানো কঠিন হয়ে যেতো। প্রসূতি মায়ের অবস্থা অনেকাংশে ভালো। নবজাতককে নিরব পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।

ঠাকুরগাঁওয়ের জেলা প্রশাসক আব্দুল আওয়াল জানান, বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার নির্জন এলাকায় এক প্রসূতি মায়ের দুটি সন্তান প্রসব হয়। এ সময় একটি সন্তান মারা যায়। স্থানীয় এক সংবাদকর্মী ও উপজেলা নিবার্হী অফিসারের মাধ্যমে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। পরে প্রসূতি মা ও সন্তানের অবস্থার অবনতি হলে তাদের ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালে নিয়ে এসে প্রয়োজনীয় চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। আশা করছি নবজাতক ও মাকে বাঁচাতে পারব। এখনো প্রসূতি মায়ের পরচিয় পাওয়া যায়নি।

রবিউল এহসান রিপন/আরএআর/এমএস

আরও পড়ুন