রাজন হত্যা : সরগরম সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম
সিলেটের কুমারগাঁওয়ে শিশু শেখ সামিউল আলম রাজনকে ভ্যানগাড়ি চুরির অপবাদে খুঁটির সাথে বেঁধে লোহার পাইপ দিয়ে পিটিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে।
রেজুওয়ান করিম সাব্বির নামে একজন তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন, ১২ লাখ টাকার বিনিময়ে জালালাবাদ থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) আমিনুল ইসলাম ঘটনার দিন কামরুলকে সিলেটে আটকের পর ছেড়ে দেন। এ বিষয়ে তদন্ত দাবি করেন তিনি।
ইতি রহমান নামে একজন ফেসবুকে একটি ছবিসহ স্ট্যাটাসে লিখেছেন, শিশু রাজন হত্যার বিচার চাই। নইলে ব্যক্তি-গোষ্ঠি, জাতি-রাষ্ট্র বিশ্বমানবতাবাদ-সভ্যতা সব ব্যর্থ হয়ে যাবে। এই দায় আমাদের সকলের।
আরেকজন লিখেছেন, কি অপরাধ ছিলো শিশু রাজনের। খুনিদের ধরিয়ে দিন। আরেকজন এলাকাবাসীর উদ্যোগে ছাপানো একটি পোস্টার আপলোড করে লিখেছেন, আমি ভাষা হারিয়ে ফেলেছি। আপনারা এর জবাব দেন।
এদিকে, সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের চারটি দল মাঠে নামানো হয়েছে। সেক্ষেত্রে মামলার তদন্ত থেকে কী বেরিয়ে এসেছে। রাজন কী আসলেই চুরি করতে গিয়েছিল?
এমন প্রশ্নের জবাবে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জালালাবাদ থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আলমগীর হোসেন বলেন, এইটুকু শিশু এতো বড় ভ্যান গাড়ি চুরি করার কথা না। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে ওই দিন সকালে আলী নামের একজনের গ্যারেজের সামনে একটি ভ্যান গাড়ি ছিল। শিশু রাজন ওই ভ্যান গাড়িতে ওঠে চালিয়ে একটু সামনে গেলে কেয়ারটেকার ময়না মিয়া তাকে আটক করে।
পরে একটি খুঁটির সাথে বেঁধে রাজনকে পেটানো হয়। ময়নাতদন্তের প্রাথমিক প্রতিবেদন দেখে জানা যায়, রাজনের শরীরে ৬৪টি আঘাত করা হয়। সে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে মারা যায়।
পরিদর্শক মো. আলমগীর হোসেন তার নিজের ধারণা থেকে বলেন হয়তো রাজন খেলার ছলে ভ্যান গাড়িটিতে ওঠেছিল। মামলার তদন্তের স্বার্থে এই মুহূর্তে কিছু বলা যাচ্ছে না। আসামি মুহিতকে রিমান্ডে আনা হয়েছে। আমরা বিভিন্ন দিক থেকে তদন্ত চালাচ্ছি প্রকৃত ঘটনা উদঘাটন শেষে বিস্তারিত বলা যাবে।
মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (উত্তর ও গণমাধ্যম) মো. রহমত উল্লাহ জানান, ভ্যান গাড়ি চুরির অপবাদে শিশু রাজনকে হত্যা করা হয়েছে বলে প্রাথমিক ধারণা করা হচ্ছে। এ ঘটনায় অন্য কোনো রহস্য থাকলে তদন্তে বেরিয়ে আসবে।
ছামির মাহমুদ/এসএস/এমএস