বিধ্বস্ত বিমানের ধ্বংসাবশেষ উদ্ধারে সময় লাগবে এক সপ্তাহ
কক্সবাজারের মহেশখালীতে বিধ্বস্ত বিমানবাহিনীর দুটি প্রশিক্ষণ বিমানের ধ্বংসাবশেষ উদ্ধারে আনুমানিক এক সপ্তাহ সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন বিমানবাহিনীর কক্সবাজার ঘাঁটির অধিনায়ক এম ইউসুফ আলী। বৃহস্পতিবার দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে তিনি এ কথা জানান।
এম ইউছুফ আলী আরও জানান, বৃহস্পতিবার থেকে বিমান বাহিনীর ৫০ সদস্যের দুটি টিম পৃথক ঘটনাস্থলে উদ্ধার কাজ চালাচ্ছে। তাদের সহযোগিতা করছে দমকল বাহিনী, আনসার, ও পুলিশ সদস্যরা।
বিমান দুটি বিধ্বস্ত হওয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটি তদন্ত সাপেক্ষ বিষয়। তবে এখন পর্যন্ত তদন্ত কমিটি গঠন কিংবা সংশ্লিষ্ট বিষয়ে তার কাছে কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য আসেনি।
মহেশখালী ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের ইনচার্জ ধীমান বড়ুয়া জানান, বিমানের ধ্বংসাবশেষ উদ্ধার তৎপরতায় পুলিশ, আনসার ছাড়াও মহেশখালী, চকরিয়া এবং কক্সবাজার জেলা দমকল বাহিনীর ২৫ সদস্যের একটি টিম কাজ করছে।
মহেশখালী থানা পুলিশের ওসি প্রদীপ কুমার দাশ জানান, বিমান দুর্ঘটনার বিষয়ে পৃথক দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে শুনেছি। তবে এখনো কাগজে কলমে কিছু হাতে আসেনি।
এদিকে বিমান বিধ্বস্ত স্থল পরিদর্শন করেছেন বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্সাল আবু এসরার। দুপুর ২টার দিকে বিমান বাহিনীর বিশেষ হেলিকপ্টারে তিনি মহেশখালী এসে আকাশ উড়ন্তাবস্থায় খুব নিচুতে এসে বিমান বিধ্বস্তস্থল পরিদর্শন করে আবার ফিরে যান। এ সময় ঘটনাস্থলে কক্সবাজার ঘাঁটির অধিনায়ক এম ইউসুফ আলী, উইং কমান্ডার আরমান ও স্কোয়াড্রন লিডার ইফতেখারসহ প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে ছিলেন।
মহেশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আবুল কালাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তাদের তালিকা করা হচ্ছে। বিমান বাহিনীর পক্ষ থেকে তাদের ক্ষতিপূরণ দেয়া হবে।
উল্লেখ্য, বুধবার সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে মহড়াকালে বিমান বাহিনীর দুটি প্রশিক্ষণ বিমান মহেশখালী এলাকার আকাশে সংঘর্ষে বিধ্বস্ত হয়। বিমান দুটির বিধ্বস্ত অংশ মহেশখালী পৌরসভার পুটিবিলা পালপাড়া ও উপজেলার ছোট মহেশখালীর মাইজপাড়া এলাকায় পড়ে আগুনে বেশকিছু অংশ ভস্মীভূত হয়। পুটিবিলা অংশে ধ্বসে পড়া বিমানের বিধ্বস্ত অংশের আঘাতে স্থানীয় আবদুস সাত্তারের বাড়ির চালের বেশ কিছু অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিমানের একটি খণ্ডাংশ তার বাড়ির ভেতরে পড়ে আঘাত পেয়ে আঁখি (১৫) ও ফয়সাল (১২) নামের দুই শিশু আহত হয়েছে। তারা আব্দুস সাত্তারের সন্তান।
দূর্ঘটনার এক ঘন্টার মাথায় দুটি বিমানে থাকা চার পাইলট গ্রুপ ক্যাপ্টেন শরীফ, স্কোয়াড্রন লিডার মনির, উইং কমান্ডার আজিম ও উইং কমান্ডার রাজীবকে দ্বীপের পৃথক স্থান থেকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করা সম্ভব হয়।
বিমান বাহিনী সূত্র জানায়, ওয়াইএকে-১৩০ প্রশিক্ষণ বিমান দুটি সন্ধ্যা ৬টার দিকে চট্টগ্রাম জহিরুল হক ঘাঁটি থেকে উড্ডয়ন করে। পৌনে ৭টার দিকে বিধ্বস্ত হওয়ার কিছুক্ষণ আগ থেকে বিমান দুটি রাডার থেকে বিচ্ছিন্ন ছিল।
সায়ীদ আলমগীর/আরএআর/আইআই