ফরিদপুরে বিদ্রোহী প্রার্থীদের নিয়ে বিপাকে আওয়ামী লীগ
ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা পৌরসভা, উপজেলা সদর বুড়াইচ ও গোপালপুর এ তিন ইউপি নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী নিয়ে চরম বিপাকে আছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ।
এ উপজেলা আওয়ামী লীগের দুর্গ হলেও বর্তমান তিন ইউপি চেয়ারম্যানই বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে ভোট যুদ্ধে নেমেছেন। নবগঠিত আলফাডাঙ্গা পৌরসভা নির্বাচনেও রয়েছে আওয়ামী লীগের একাধিক বিদ্রোহী প্রার্থী। নৌকা প্রতীকের সঙ্গে এসব বিদ্রোহী প্রার্থীর হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে বলে জানান ভোটাররা।
আগামী ২৮ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হবে এ নির্বাচন। নির্বাচনের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে ততোই বাড়ছে প্রার্থীদের প্রচারণা। গণসংযোগ, শোডাউন ও ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ভোট প্রার্থনায় সরগরম হয়ে উঠেছে সর্বত্র।
আলফাডাঙ্গা পৌরসভা র্নিবাচনে নৌকা প্রতীক পেয়েছেন উপজেলা যুুবলীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুর রহমান সাইফার। আর বিএনপি মনোনীত ধানের শীষ প্রতীকে প্রার্থী হয়েছেন খান আতাউর রহমান।
এখানে আওয়ামী লীগে রয়েছেন একাধিক বিদ্রোহী প্রার্থী। মেয়র পদে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা মকিবুল হাসান পুটু মিয়া (জগ) ও উপজেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা সদস্য সামসুদ্দীন আহমেদ (মোবাইল)। স্বতন্ত্রপ্রার্থী হয়ে তারা জোর প্রচারণা চালাচ্ছেন।
একাধিকবার ইউপি চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত হলেও এবার দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে আলফাডাঙ্গা সদর ইউপির বর্তমান চেয়ারম্যান উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আহাদুল হাসান আনারস প্রতীক নিয়ে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করছেন।
সম্প্রতি উপজেলা পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ চেয়ারম্যান নির্বাচিত ‘ক্লিন ইমেজে’ থাকা আহাদুল হাসান এবারও জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী। নৌকার প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন সদর ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক।
আলফাডাঙ্গা সদর ইউনিয়নের এসএম উজ্জল হোসেন বলেন, বর্তমান চেয়ারম্যান আহাদের পরিবার এ ইউনিয়নে পঞ্চাশ বছর ধরে জনগণের সেবা করছেন। এমন যোগ্য লোকও নৌকা প্রতীক পায়নি। তবে আমরা যোগ্য ও ভালো প্রার্থীকে ভোট দেব।
গোপালপুর ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল ইসলাম এবারের নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্রপ্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করছেন। তার বিপরীতে আওয়ামী লীগ মনোনয়ন পেয়ে নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করছেন জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাহিত্যবিষয়ক সম্পাদক ইনামুল হাসান। এ ইউনিয়নে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মধ্যে আরও রয়েছেন চশমা প্রতীকে আবদুর রহমান জিকো ও মোটরসাইকেল প্রতীকে সৈয়দ মাছুদ রানা।
বুড়াইচ ইউনিয়নেও বর্তমান চেয়ারম্যান আলফাডাঙ্গা উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওয়াহাব পান্নু দলীয় মনোনয়ন পাননি।
স্বতন্ত্রপ্রার্থী হিসেবে তিনি আনারস প্রতীকে নির্বাচন করছেন। তার বিপরীতে নৌকার প্রার্থীতা পেয়েছেন উপজেলা যুবলীগের সভাপতি হাসাউদ্দৌলা রানা। এছাড়া এ ইউনিয়নে জাহাঙ্গীর আলম নামে মোটরসাইকেল প্রতীকে রয়েছেন আরও একজন স্বতন্ত্রপ্রার্থী।
আলফাডাঙ্গা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নুরুল বাশার বলেন, কেউ বিদ্রোহী প্রার্থী হলে আর কি করা? এখানে সবাই নৌকার লোক। তাই নির্বাচনে নৌকার প্রার্থীরা জয়ী হবেন।
আলফাডাঙ্গা পৌরসভা ও তিনটি ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের প্রভাব থাকলেও বর্তমান চেয়ারম্যানরা দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছেন।
অপরদিকে, আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রাপ্তরা তুলনামূলকভাবে তরুণ মুখ। ভোটারদের মধ্যে এ বিষয়টি ব্যাপকভাবে প্রভাব ফেলবে বলে জানান ভোটাররা।
এস.এম. তরুন/এএম/আরআইপি