ট্রেন রক্ষাকারী ‘মাফলার বীর’ সিহাব-লিটনকে সংবর্ধনা
তেলবাহী ট্রেনকে দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা করা সেই সাহসী দুই শিশুকে সংবর্ধনা দিয়েছে রেলওয়ের পাকশী বিভাগীয় কর্মকর্তারা। বুধবার দুপুরে পাকশীতে এ সংবর্ধনা দেয়া হয়।
বুদ্ধিমত্তা দিয়ে বড় ধরনের দুর্ঘটনা থেকে তেলবাহী ট্রেনকে রক্ষা করা সেই দুই শিশুর পরিচয় এখন ‘মাফলার বীর’। গলার মাফলার দিয়েই নিজ গ্রামে ঘুরে বেড়ায় আলোচিত সিহাবুর রহমান (৬) ও লিটন আলী (৭)।
শিহাবের মা রিতা ও লিটনের নানী শুকুরজান জানান, তাদের থাকার জায়গা নেই।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে রেলওয়ের বিভাগীয় ম্যানেজার অসীম কুমার তালুকদার প্রত্যেককে ১২ হাজার ৫শ’ টাকা ও ক্রেস্ট প্রদান করেন। এ সময় বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা শওকত জামিল মহসি, বিভাগীয় প্রকৌশলী আসাদুল হক, বৈদ্যুতিক কর্মকর্তা খাইরুল ইসলাম, পাকশী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি হাবিবুল ইসলাম হব্বুল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এখানে উপস্থিত রেলওয়ে ঠিকাদার আনোয়ারুল ইসলাম ওদের দু'জনকে এক হাজার টাকা করে নগদ পুরস্কার দেন।
সাহসী দুই শিশু রাজশাহীর বাঘা উপজেলার আড়ানি ইউনিয়নের ঝিনা গ্রামের বাসিন্দা। তাদের মধ্যে সিহাবুর গ্রামের সুমন আলীর ছেলে ও লিটন শহীদুল ইসলামের ছেলে। সিহাব প্রথম ও লিটন দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র। রেলের জমিতে পরিবারের সঙ্গে তাদের বসবাস।
মঙ্গলবার দুই শিশুকে পুরস্কৃত করেছেন বাঘা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহীন রেজা। দুপুর ১২টার দিকে রেললাইনের ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে সিহাবুর ও লিটনের হাতে স্কুলব্যাগ, টিফিন বক্স ও শীত নিবারণের কম্বল পুরস্কার হিসেবে তুলে দেন তিনি।
ছোট্ট দুই শিশুর বুদ্ধিদীপ্ত তাৎক্ষণিক পদক্ষেপে জ্বালানি তেলবাহী ৩২ বগির ট্রেনের বিশাল বহরটি রক্ষা পেয়েছে। না হলে হয়তো অনেক বড় ধরনের দুর্ঘটনাও ঘটতে পারতো। এরপর ওই লাইন দিয়ে আন্তঃনগর ট্রেনও আসতো! তাই তাদের দু’জনকে পুরস্কৃত করা হবে।
গত ১৮ ডিসেম্বর সোমবার এ ঘটনা ঘটে। রেললাইন দিয়ে হাঁটার সময় ভাঙা দেখতে পেয়ে দৌড়ে বাড়ি থেকে লাল রঙের মাফলার এনে দুজন দু’দিকে ধরে দাঁড়িয়ে থাকলে ট্রেনের চালক ট্রেনটি থামিয়ে দেন। এতে মারাত্মক দুর্ঘটনা থেকে তেলবাহী ট্রেনটি রক্ষা পায়।
আলাউদ্দিন আহমেদ/এমএএস/এমএস