ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

কাঁদছে নাসিরনগরবাসী

জেলা প্রতিনিধি | ব্রাহ্মণবাড়িয়া | প্রকাশিত: ০১:০৫ পিএম, ১৬ ডিসেম্বর ২০১৭

১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে নিজ নির্বাচনী এলাকা ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলায় আসবেন বলেছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী অ্যাডভোকেট ছায়েদুল হক। সপ্তাহ দুয়েক আগে নাসিরনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. লিয়াকত আলী ঢাকায় হাসপাতালে অসুস্থ মন্ত্রীকে দেখতে গেলে তাকে বিজয় দিবসে এলাকায় আসার কথা জানান তিনি।

তখন তিনি জোর দিয়েই বলেছিলেন, আমি যাবোই এলাকায়। আপনারা টেনশন নিয়েন না, সব ব্যবস্থা করেন। বিজয় দিবসে আমি এলাকায় থাকব। অবশ্য মন্ত্রীর শারীরিক অবস্থা বিবেচনায় তার আসা নিয়ে শঙ্কিত ছিলেন ইউএনও। তবে মুখের ওপর কিছু বলতে পারেননি তিনি।

এসব তথ্য জাগো নিউজকে জানিয়েছেন ছায়েদুল হকের নিকট আত্মীয় মুরাদ মৃধা।

তবে মন্ত্রী বিজয় দিবসে আসেননি, বিজয় দিবসের সকালেই ছড়িয়ে পড়ে তার মৃত্যুর খবর। এ মৃত্যুর খবরে স্তব্ধ হয়ে যায় গোটা নাসিরনগর উপজেলা। সংক্ষিপ্ত করা হয় বিজয় দিবসের অনুষ্ঠান। বর্ষীয়ান এ রাজনীতিকের মৃত্যুতে এখন কাঁদছে নাসিরনগরবাসী।

ছায়েদুল হকের মৃত্যুর খবরে কান্নায় ভেঙে পড়েন আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। দু’দিনের শোক কর্মসূচি ঘোষণা করেছে উপজেলা আওয়ামী লীগ।

নাসিরনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রাফি উদ্দিন জাগো নিউজকে বলেন, নাসিরনগরে ছায়েদুল হকের বিকল্প আর কেউ নেই। তার মৃত্যুতে যে ক্ষতি হয়েছে সেটি কিছুতেই পূরণ হবার নয়। তবে ছায়েদুল হকের মতো সৎ নেতার মৃত্যু নেই। তিনি বেঁচে থাকবেন সবার হৃদয়ে।

পাঁচবারের নির্বাচিত সংসদ সদস্য ছায়েদুল হকের মৃত্যুতে নাসিরনগর উপজেলা বিএনপিও বিজয় দিবসের অনুষ্ঠান বাতিল করে। মন্ত্রীর জন্য বিশেষ দোয়ারও আয়োজন করে বিএনপি।

নাসিরনগর উপজেলা বিএনপির সভাপতি সৈয়দ এ. কে একরামুজ্জামান সাংবাদিকদের বলেন, নাসিরনগরবাসী বিশাল এক নেতাকে হারিয়েছেন। সারাদেশের তুলনায় নাসিরনগরে রাজনৈতিক সহ-অবস্থান অনেক ভালো ছিল। ছায়েদুল একজন ভালো মানুষ ছিলেন। সেজন্য নাসিরনগরের মানুষ বারবার তাকে সাংসদ নির্বাচিত করেছেন।

ছায়েদুল হক সর্বশেষ ১০ আগস্ট তার নির্বাচনী এলাকায় আসেন। তখন ১০ দিন অবস্থান করে শারীরিক অসুস্থতা নিয়েই অসংখ্য উন্নয়ন কাজের উদ্বোধন এবং নানা কাজের ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপন করেন। পরে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে থেকেও এলাকার খোঁজ-খবর নিয়েছেন এবং নানা উন্নয়নমূলক কাজের দিক-নির্দেশনা দিয়েছেন।

শনিবার সকাল সাড়ে ৮টায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহচর ও মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ছায়েদুল হক। গত তিনি তিন মাস ধরে তিনি নানা রোগাক্রান্ত হয়ে শয্যাশায়ী ছিলেন। তার বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর।

উল্লেখ্য, ছায়েদুল হক ১৯৪২ সালে নাসিরনগর উপজেলার পূর্বভাগ ইউনিয়নের পূর্বভাগ গ্রামের উত্তপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। হাইকোর্ট ও সুপ্রিমকোর্টের খ্যাতনামা এ আইনজীবী ১৯৭৩, ১৯৯৬, ২০০১ ও ২০০৮ এবং ২০১৪ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ (নাসিরনগর) আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

২০০১ সালের নির্বাচনে চট্টগ্রাম বিভাগে আওয়ামী লীগের ফল বিপর্যয়ের মধ্যেও তিনি বিজয়ী হয়ে চমক দেখিয়েছিলেন। নাসিরনগরের ব্যাপক উন্নয়নের সঙ্গে জড়িয়ে আছে তার নাম। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদরের সঙ্গে নাসিরনগর উপজেলার সরাসরি সড়ক যোগাযোগ স্থাপন ছিল তার উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের এক মাইলফলক।

আজিজুল সঞ্চয়/এমএএস/আরআইপি