ছিন্নমূল মানুষের পাশে ঠাকুরগাঁওয়ের এসপি
সময় বিকেল ৪টা ৪৫ মিনিট। এক ব্যক্তি রাস্তার পাশে বসে থাকা বয়স্ক বৃদ্ধার শরীরে শীতের কম্বল জড়িয়ে দিচ্ছেন। সেই দৃশ্যটি রাস্তার পাশের অনেক মানুষ হতবাক হয়ে দেখছেন। কাছে গিয়ে দেখা গেল ওই ব্যক্তি ঠাকুরগাঁও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রধান ফারহাত আহমেদ।
হঠাৎ শীত নিবারণের জন্য কম্বল পেয়ে বয়স্ক বৃদ্ধার মুখে খুশির ঝিলিক। বৃদ্ধার নাম সুফিয়া (৬৫)। আর এমন উচ্চ পদস্থ একজন মানুষ রাস্তায় ঘুরে ঘুরে কম্বল বিতরণ করছে দেখে সাধারণ মানুষও অবাক।
কম্বল পাওয়ার অনুভূতি জানতে চাইলে ওই বৃদ্ধা বলেন, 'একটা কম্বলের তানে (জন্য) কতদিন মেম্বার, চেয়ারম্যানে কাছত (কাছে) ঘুরিছু (ঘুরেছি)। কেউ দেইনি। আজই হঠাৎ এই স্যার কম্বল আনে দিল। মুই (আমি) কোন দিন ভাবিবা (ভাবতে) পারু (পারি) নাই কেহ এভাবে কম্বল দিয়ে যাবে। আল্লাহ যেন স্যারক (স্যারকে) অনেকদিন বাঁচে রাখে। তাহলে হামার (আমার) মত অনেক গরিব লোক বাঁচিবে (বাঁচবে)।'
পথচারি সামশুল হক জানান, আগে জানতাম পুলিশের কাছে মানুষ হয়রানির শিকার হয় সবচেয়ে বেশি। আজ নিজ চোখে একজন এসপির মানবিকতা দেখে সেই ধারণাটা পাল্টে গেছে। সাদা পোশাকে ঠাকুরগাঁওয়ের এসপির ছিন্নমূল মানুষের মাঝে কম্বল বিতরণটা মানবিকতার একটা উদাহরণ হয়ে থাকবে।
এসপি ফারহাত আহমেদের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, ঘরে বসে অসহায় দুস্থ মানুষকে চেনা যায় না। রাস্তার পাশে যারা অসহায় ভাবে পড়ে থাকেন তারাই দুস্থ মানুষ। লোক দেখিয়ে শীতবস্ত্র বিতরণ করে সুনাম নিতে চাই না। তাই রাস্তায় ঘুরে ঘুরে অসহায় শীতার্ত মানুষের পাশে গিয়ে কম্বল দেওয়ার চেষ্টা করছি। আমরা সমাজের সকলে যদি অসহায় দুস্থ মানুষের পাশে গিয়ে দাঁড়াই তাহলে দারিদ্র মুক্ত সোনার বাংলা গড়তে বেশিদিন সময় লাগবে না।
রবিউল এহসান রিপন/এফএ/আইআই