ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

ছাত্রলীগের কমিটিতে শিবির ক্যাডার আর বহিষ্কৃতরা

প্রকাশিত: ০১:৫২ পিএম, ০৮ জুলাই ২০১৫

কোন চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী, মাদক ব্যবসায়ী ও বহিরাগতদের নতুন কমিটিতে স্থান দেয়া হবে না। খুলনা মহানগর ছাত্রলীগের কমিটি গঠনের ৫/৬ দিন আগে আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের এমন ঘোষণা হাস্যরসে পরিণত হয়েছে। নগর ছাত্রলীগের নতুন কমিটিতে স্থান পেয়েছে সাবেক শিবির ক্যাডার, মাদক ব্যবসায়ী, নানা অভিযোগে দল থেকে বহিষ্কৃতরা। এ নিয়ে দলের সাধারণ নেতাকর্মীদের মধ্যে চরম ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। কমিটি পরিবর্তন করার জন্য তারা শীর্ষ নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

সূত্র জানায়, নগরীর শিরোমনি এলাকায় চাঁদাবাজি করতে গিয়ে ২০১৩ সালের ২ মে গ্রেফতার হন ছাত্রলীগের সদ্য বিলুপ্ত কমিটির ক্রীড়া সম্পাদক জাফরিন হাসান। ওই বছরের জুন মাসে ছাত্রলীগ থেকে তাকে বহিষ্কার করা হয়। ওই ঘটনায় মহানগর আওয়ামী লীগও তার বিরুদ্ধে বিবৃতি দিয়েছিল। সেই জাফরিন হাসানকেই খুলনা মহানগর ছাত্রলীগের নতুন কমিটির সহ-সভাপতি করা হয়েছে।

২০০৩ সালে সিটি কলেজ ছাত্র সংসদ নির্বাচনে শিবিরের হয়ে শ্রেণি প্রতিনিধি পদে নির্বাচনে অংশ নেন মুজিবুর রহমান সোহাগ ওরফে মুজিব সোহাগ। ২০০৬ সাল পর্যন্ত নগরীর সিটি কলেজে তার হাতেই ছাত্রলীগের অনেক নেতাকর্মী নিগৃহীত হয়েছেন।

২০০৯ সালে ছাত্রলীগে যোগ দেন মুজিব সোহাগ। কিন্তু শিবির সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে ২০১০ সালে গঠিত ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে ঠাঁই হয়নি তার। সেই মুজিবুর রহমান সোহাগকে এবার দেয়া হয়েছে ছাত্রলীগের বিশাল পদ। তাকে কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য করা হয়েছে।

খুলনা মহানগর ছাত্রলীগের সদ্য গঠিত পূর্ণাঙ্গ কমিটির বেশ কয়েকজন সদস্যের বিরুদ্ধে এমন গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। কখনো মিছিল-সমাবেশ না করেও কমিটিতে গুরুত্বপূর্ণ পদ পেয়েছেন অনেক নতুন মুখ। আবার আন্দোলন সংগ্রামে প্রথম কাতারে থাকলেও পদ পেয়েছেন নিচের সারির। অনেক নেতার পদ অবনতিও হয়েছে। এসব নিয়ে সংগঠনটির মধ্যে বিরাজ করছে চরম অস্থিরতা।

দলীয় সূত্রে জানা যায়, গত ৮ জুন মহানগর ছাত্রলীগের দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে শেখ শাহজালাল হোসেন সুজনকে সভাপতি এবং এসএম আসাদুজ্জামান রাসেলকে সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করা হয়। এর প্রায় ২৬ দিন পর গত শনিবার রাতে নগরীর ৫৭ সদস্যের কমিটি অনুমোদন দেন কেন্দ্রীয় নেতারা। এর মধ্যে সহ-সভাপতি করা হয়েছে ২৪ জনকে। তিনজনকে কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য করা হয়েছে।

২০০৩ সালে সিটি কলেজ ছাত্র সংসদ নির্বাচনে শিবিরের ভিপি প্রার্থী ছিলেন আবদুল্লাহ আল মামুন প্রিন্স। ২০০৫ সাল পর্যন্ত সিটি কলেজ শিবিরের সভাপতি ছিলেন তিনি।

তিনি বলেন, মুজিব সোহাগ নির্বাচনে পরাজিত হয়। এরপর কিছুদিন আমাদের সঙ্গে ছিল। পরবর্তীতে সোহাগ ছাত্রলীগে যোগ দিয়েছে বলে জানতে পারি। চাঁদাবাজিসহ আরো অনেক অভিযোগ রয়েছে মুজিবের বিরুদ্ধে।

অবশ্য নগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এসএম আসাদুজ্জামান রাসেল দাবি করেন, কিছুদিন শিবির করলেও মুজিব ৭/৮ বছর ধরে ছাত্রলীগের সঙ্গে আছে। ত্যাগী নেতা হিসেবে মুজিব কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হয়েছে।

জাফরিন সম্পর্কে তিনি আরো বলেন, রীতিমত সংবাদ সম্মেলন করে জাফরিনকে বহিষ্কার করা হয়। এরপরও সে কিভাবে কমিটিতে এসেছে আমি জানি না।

এ ব্যাপারে নগর ছাত্রলীগের সভাপতি শেখ শাহজালাল হোসেন সুজন বলেন, সার্বিক বিষয় নিয়ে আমরা বিব্রত। আমি বা সাধারণ সম্পাদকের তালিকা থেকে এই কমিটি করা হয়নি। এজন্য বিতর্কিত ও নিস্ক্রিয়দের নাম এসেছে। বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে কথা বলেছি। দ্রুত কমিটি সংশোধনের ব্যাপারে তারা আশ্বস্ত করেছেন।

নগর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি শফিকুর রহমান পলাশ বলেন, ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতারাই কমিটি গঠনের জন্য সহযোগিতা চেয়েছিলেন। আমরা যতটা সম্ভব সহযোগিতা করেছি। কিন্তু কমিটিতে বিতর্কিতদের নাম আসাটা ঠিক হয়নি। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ সত্য হলে, দ্রুত কমিটি সংশোধন করা প্রয়োজন।

আলমগীর হান্নান/এআরএ/আরআইপি