ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

শিক্ষকই ঘণ্টা বাজান, ঝাড়ু দেন

জেলা প্রতিনিধি | টাঙ্গাইল | প্রকাশিত: ০৫:০১ এএম, ২৪ নভেম্বর ২০১৭

সখীপুর উপজেলার দাড়িয়াপুর ইউনিয়নের কাঙ্গালীছেও দক্ষিণ পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় চালান একমাত্র শিক্ষক সেলিনা আক্তার। তবে কাগজে-কলমে তিনি ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষক নন। তিনি পাশের আকন্দপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একজন সহকারী শিক্ষক।

ওই বিদ্যালয়ের চার শিক্ষক অবসরে যাওয়ায় গত ১০ মাস আগে সেলিনা আক্তার ওই বিদ্যালয়ে প্রেষণে যোগ দিয়েছেন। তিন মাস ধরে তিনি একাই ওই বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক, সহকারী শিক্ষক, দফতরি আর ঝাড়ুদারের দায়িত্ব পালন করছেন।

তবে শিগগিরই ওই বিদ্যালয়ে আরও দুইজন শিক্ষক দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম।

শিক্ষক সেলিনা আক্তার বলেন, শুক্রবার ও বন্ধের দিন বাদে প্রতিদিন সকাল ৯টায় বিদ্যালয়ে এসে চারটি কক্ষের তালা খুলে ঝাড়ু দিই। শিশু শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত ছয়টি শ্রেণিতে মোট ২৬টি ক্লাস নিয়ন্ত্রণ করতে হয়। হাজিরা খাতায় নাম লিখতে হয়। আবার ঘণ্টাও বাজাতে হয়। পরীক্ষাও চালাতে হয়। মাসে কমপক্ষে চার-পাঁচবার উপজেলা শিক্ষা অফিসে নানা কাজে যেতে হয়। আমি আর পারছি না এভাবে একাই একটি বিদ্যালয় চালাতে।

tangil

সখীপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, কাঙ্গালীছেও দক্ষিণপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কালাচাঁন সরকার ২০১৫ সালের ১৫ মার্চ, সহকারী শিক্ষক নরেশ চন্দ্র ২০১৬ সালের ১৮ জানুয়ারি, সহকারী শিক্ষক সুমন্ত সরকার ২০১৭ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি ও আরেক সহকারী শিক্ষক গোলক চন্দ্র সরকার চলতি বছরের ১৩ আগস্ট অবসরে যান।

সুমন্ত সরকারের অবসরে যাওয়ার দিন পাশের বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সেলিনা আক্তার প্রেষণে যোগ দেন। গত ১৩ আগস্ট গোলক সরকার অবসরে যাওয়ায় গত তিন মাস ধরে সেলিনা আক্তার একা হয়ে পড়েছেন। ফলে তাকে ওই বিদ্যালয়ে দুই শিফটে ছয় শ্রেণির শতাধিক শিক্ষার্থীর জন্য দিনে মোট ২৬টি ক্লাস সামাল দিতে হয়।

সরেজমিনে দেখা যায়, ওই বিদ্যালয়ে শতাধিক শিক্ষার্থী রয়েছে। সেলিনা আক্তার একাই তিনটি শ্রেণির ক্লাস একসঙ্গে নিচ্ছেন। এক ক্লাস থেকে অন্য ক্লাসে যাচ্ছেন। শিক্ষক যে ক্লাসে আছেন সেই ক্লাস নীরব থাকলেও অন্য ক্লাসের শিক্ষার্থীরা গোলমাল, চেঁচামেচি করছে।

এ বিষয়ে একাধিক অভিভাবক ক্ষুব্ধ হয়ে বলেন, এই বিদ্যালয়ে কোনো পড়াশোনা নেই। শিক্ষার্থী সামলাতেই শিক্ষকের সময় চলে যায়। এভাবে কোনো সরকারি প্রতিষ্ঠান চলতে পারে না।

আরিফ উর রহমান টগর/এফএ/আইআই

আরও পড়ুন