যশোরে সাংবাদিককে গলা কেটে হত্যার চেষ্টা
যশোরে আনন্দ দাস (৫৫) নামের এক সাংবাদিককে গলা কেটে হত্যার চেষ্টা করেছে দুর্বৃত্তরা। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সদর উপজেলার চাঁচড়া হরিণার বিল এলাকার একটি মাছের ঘের থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়েছে। তার গলা ও চার হাত পায়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কাটার ক্ষত রয়েছে। তিনি বর্তমানে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
আনন্দ দাস যশোর থেকে প্রকাশিত দৈনিক প্রতিদিনের কথা পত্রিকার অ্যাসাইনমেন্ট এডিটর ও কেশবপুর উপজেলার মাগুরাডাঙ্গা গ্রামের শিবপদ দাসের ছেলে। তিনি বর্তমানে যশোর শহরের ষষ্ঠীতলাপাড়া এলাকার বাসিন্দা।
আনন্দ দাসের স্বজন অনুপ বসু জানান, সন্ধ্যা ৬টার দিকে তারা জানতে পারেন- আনন্দ দাসকে অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা মুমূর্ষু অবস্থায় সদর উপজেলার হরিণা বিলের একটি মাছের ঘেরের মধ্যে ফেলে রেখে গেছে। সেখানে গিয়ে তারা দেখতে পান ঘেরের মধ্যে তার হাত-পায়ে জাল জড়ানো। গলায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাতের চিহ্ন ও চার হাত-পায়ে কাটার দাগ রয়েছে। এরপর স্থানীয়দের নিয়ে সেখানে গিয়ে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
যশোর কোতোয়ালী থানার ওসি একেএম আজমল হুদা জানান, আহত অবস্থায় উদ্ধার হওয়া আনন্দ দাসের সঙ্গে তারা কথা বলতে পেরেছেন। তিনি জানিয়েছেন- বিকেলে তিনি শহরের টার্মিনাল এলাকায় অবস্থান করছিলেন। তিনজন অজ্ঞাত যুবক তাকে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পেছনে বিল হরিণার মধ্যে ডেকে নিয়ে যায়। এরপর তিনি আর কিছু বলতে পারেননি। বর্তমানে তার চিকিৎসা চলছে। কথা বলার মতো সুস্থ হলে পরবর্তীতে তার সঙ্গে কথা বলে পদক্ষেপ নেয়া হবে। ঘটনায় জড়িত তিন যুবকের বয়স ৩০/৪০ বছরের মধ্যে হবে। তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
আনন্দ দাসের স্ত্রী সুস্মিতা দাস জানান, প্রতিদিনের মতো বৃহস্পতিবার সকালে অফিসে গিয়েছিল আনন্দ দাস। দুপুরে খাবারের আগে তাকে ফোন করলে, জানায় বাইরে আছি। ফিরতে দেরি হবে। এরপর বিকেল থেকে ফোন করেও কথা বলা সম্ভব হয়নি। বারবার ফোন বাজছিল। কিন্তু কেউ রিসিভ করছিল না। সন্ধ্যার দিকে কেউ একজন ফোন রিসিভ করে আমার পরিচয় জানতে চান। পরিচয় দেয়ার পর তিনি জানান- মাছের ঘেরের মধ্যে তিনি (আনন্দ দাস) পড়ে আছেন। অবস্থাও ভালো না। এরপর স্থানীয়দের সহায়তায় মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে উদ্ধার করা হয়েছে।
প্রতিদিনের কথার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ফারাজী আহমেদ সাঈদ বুলবুল বলেন, সন্ধ্যায় অজ্ঞাত সন্ত্রাসীরা আনন্দ দাসকে গলা কেটে হত্যার চেষ্টা করেছে। উদ্ধার করে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তবে কী কারণে কারা এ হত্যার চেষ্টা করেছে সেটি এখনও জানা যায়নি।
এদিকে, আনন্দ দাসকে হত্যাচেষ্টার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে যশোর সাংবাদিক ইউনিয়ন (জেইউজে)। এক বিবৃতিতে জেইউজে সভাপতি সাজেদ রহমান ও সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান মিলন হামলায় জড়িতদের দ্রুত শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন। পৃথক বিবৃতিতে একই দাবি জানিয়েছেন, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন বিএফইউজে সহসভাপতি মনতোষ বসু এবং নির্বাহী সদস্য মনিরুজ্জামান মুনির ও প্রণব দাস।
মিলন রহমান/বিএ