উখিয়ায় ৬৮ রোহিঙ্গা আটক, ক্যাম্পে স্থানান্তর
কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার উপকূলীয় জালিয়াপালং ইউনিয়নের রেজু মোহনায় আসা ৬৮ রোহিঙ্গা নারী, পুরুষ ও শিশুকে আটক করেছে বিজিবি। মঙ্গলবার দুপুরে তাদের আটক করা হয়।
আটকরা মিয়ানমারের নাইকংদিয়া এলাকা থেকে নৌকাযোগে বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে বলে বিজিবির কাছে স্বীকার করেছেন। খাদ্য অবরোধ ও পাকা ধান কেটে নেয়ায় তারাসহ এলাকার আরও অসংখ্য লোক বিপাকে পড়েছেন। অনেকে এপারে চলে আসতে চেয়েও পারছেন না বলে উল্লেখ করেন তারা।
আটক রোহিঙ্গাদের সন্ধ্যায় ইউএনএইচসিআর’র মাধ্যমে উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পে স্থানান্তর করা হয়।
কক্সবাজার ৩৪ বিজিবির উপ-অধিনায়ক মেজর মো. ইকবাল আহমেদ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, প্রায় সময় বিচ্ছিন্নভাবে রোহিঙ্গা আগমন ঘটছে। মঙ্গলাবারও নৌকায় করে উখিয়ার জালিয়াপালং হয়ে ৬৮ জন রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করে। পরে তাদেরকে ইউএনএইচসিআর’র মাধ্যমে কুতুপালং ক্যাম্পে স্থানান্তর করা হয়েছে।
তিনি বলেন, রোববার সকাল থেকে খবর পাচ্ছিলাম ওপার থেকে কয়েক হাজার রোহিঙ্গার একটি দল আঞ্জুমানপাড়া সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশ অভিমুখে রওয়ানা দিয়েছে। তাই সীমান্তে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া আছে। কিন্তু মঙ্গলবার পর্যন্ত এদের দেখা মেলেনি। শুনেছি তারা নাকি মিয়ানমারের সীমান্ত কাঁটাতারের বেড়ার ভেতর আটকে পড়েছে।
মেজর মো. ইকবাল আহমেদ বলেন, একবার যেহেতু রোহিঙ্গাদের মানবিকতা আমরা দেখিয়েছি সেহেতু কেউ সীমান্ত অতিক্রম করলে তাকে নিয়মানুসারে ক্যাম্পে নেয়া হচ্ছে। বাংলাদেশ সীমান্তে কাউকে পাওয়া গেলে সেখানেই মানবিক সহায়তা দেয়া হয়। বিজিবির পাশাপাশি সীমান্তে আইএনজিও এবং স্থানীয় এনজিওর প্রতিনিধিরা এসব রোহিঙ্গাদের সহযোগিতা দিচ্ছে।
উল্লেখ্য, অক্টোবরের মাঝামাঝি সময়ে প্রায় ৩০ হাজার এবং গত শুক্রবার প্রায় ৫ হাজার রোহিঙ্গা নতুন করে বাংলাদেশে আশ্রয় পেয়েছে।
এভাবে রোহিঙ্গার সংখ্যা ক্রমেই বাড়তে থাকায় উদ্বেগ প্রকাশ করে সীমান্ত ইউনিয়ন পালংখালী ইউপি’র প্যানেল চেয়ারম্যান ও বালুখালী ওয়ার্ড মেম্বার নুরুল আবছার চৌধুর বলেন, পুরোনো এবং চলমান আরাকান সংকট মিলিয়ে প্রায় ১০ লক্ষাধিক রোহিঙ্গা ইতোমধ্যে বাংলাদেশে আশ্রয় পেয়েছে। এ সংখ্যা সীমান্ত উপজেলা টেকনাফ-উখিয়ার স্থানীয় জনগণের চেয়ে অধিক। এখানে আশ্রয় পাওয়া রোহিঙ্গাদের খাবার, বাসস্থান, স্বাস্থ্য ও স্যানিটেশনসহ প্রয়োজনীয় অন্য সুবিধা নিশ্চিত করতে হিমশিম খাচ্ছি আমরা। ত্রাণ ও বাসস্থান পেলেও রোহিঙ্গারা অপরাধে জড়াচ্ছে। ইতোমধ্যে অনেকে আইনপ্রয়েগকারী সংস্থার হাতে অস্ত্র, বোমা ও ইয়াবাসহ আটক হয়েছে।
আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম)’র তথ্য মতে, গত ২৫ আগস্ট থেকে ৫ নভেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশে নতুন রোহিঙ্গা এসেছে ৬ লাখ ৯ হাজার।
কিন্তু স্থানীয় দায়িত্বশীলদের মতে, এ সংখ্যা ৮ লাখ ছাড়িয়ে যাবে। পূর্বে বাংলাদেশে আরও প্রায় ৪ লাখ রোহিঙ্গার অবস্থান ছিল।
সায়ীদ আলমগীর/আরএআর/আইআই