স্বর্ণালী রামেকে ভর্তি, চিকিৎসা শুরু
‘মুক্তামণি’র মতো বিরল রোগে আক্রান্ত মেহেরিন আক্তার স্বর্ণালীর (১২) চিকিৎসা শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
স্বর্ণালী বর্তমানে হাসপাতালের মেডিসিন ইউনিট-২ এর ৩৬ নম্বর ওয়ার্ডের ২৩ নম্বর বেডে চিকিৎসাধীন স্বর্ণালী। চিকিৎসাধীন। ইউনিট প্রধান সহযোগী অধ্যাপক ডা. খলিলুর রহমানের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা শুরু হয়েছে।
ভর্তির সময় ডা. খলিলুর রহমান দেখে গেছেন স্বর্ণালীকে। এসময় তিনি বলেন, তার প্রাথমিক চিকিৎসা শুরু হয়েছে। পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে নিশ্চিত হবার পর পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসা শুরু হবে। এ নিয়ে মেডিকেল বোর্ড গঠনসহ প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেয়ার কথা জানান তিনি।
বিষয়টি নিশ্চিত করে রামেক হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. সাদিকুল ইসলাম বলেন, এটি বিরল রোগ। সেটি আসলে কি তা নিশ্চিত হতে পরীক্ষা-নিরীক্ষার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। রামেক হাসপাতালেই তার যাবতীয় চিকিৎসা চলবে। প্রয়োজনে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকায় নেয়ার কথাও জানান তিনি।
সোমবার স্বর্ণালীর বিরল রোগ নিয়ে জাগো নিউজসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়। এরপর সেটি নজরে আসে সিভিল সার্জন দপ্তরের। ওই দিনই সিভিল সার্জন দপ্তরের প্রতিনিধিরা ছুটে যান জেলার পবা উপজেলার উপজেলার বড়গাছি ইউনিয়নের টেগাটাপাড়ার বাড়িতে। এসময় চিকিৎসায় সর্বাত্মক সহায়তার আশ্বাস দেয়া হয় পরিবারটিকে।
জানতে চাইলে রাজশাহীর সিভিল সার্জন ডা. সঞ্জিত কুমার সাহা বলেন, সিভিল সার্জন দপ্তরের তত্ত্বাবধাইেন স্বর্ণালীর চিকিৎসা শুরু হয়েছে। সার্বিকভাবে খোঁজখবর রাখা হচ্ছে। এনিয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিচ্ছেন তারা।
স্বর্ণালী উপজেলার বড়গাছি ইউনিয়নের টেগাটাপাড়ার আবদুল মান্নানের মেয়ে। সে পাশ্ববর্তী নোনামাটিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী। তবে অসুস্থ্যতায় নিয়মিত বিদ্যালয়ে যাওয়া হয়না তার।
তার ডান হাতে দেখা দিয়েছে বিরল এ রোগ। জন্মের সময় ছোট কালো দাগ থেকে ছড়িয়েছে পুরো হাতেই। চিকিৎসা নেই ভেবে এতোদিন চিকিৎসকের শরণাপন্ন হননি বাবা-মা। তবে সম্প্রতি গণমাধ্যমে মুক্তামণির বিরল রোগ ও চিকিৎসার খবর প্রকাশের পর আশার আলো দেখছে স্বর্ণার বাবা-মা। এনিয়ে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হলেও আর্থিক অসঙ্গতির কারণে এতোদিন থেমে ছিল চিকিৎসা। তার বাবা আব্দুল মান্নান দুর্গাপুরের দাওকান্দি কলেজের পিওন। তার মা রুমা বেগম গৃহীণি। তাদের ছেলে শামিউল ইসলাম শাওন পড়েন দ্বাদশ শ্রেণিতে।
হাসপাতালে স্বর্ণালীর সঙ্গে রয়েছে তার মা রুমা বেগম। তিনি বলেন, মেয়ের বয়স যখন চার বছর ছিল-তখন রাজশাহী মেডিকেল কলেজের চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. মোয়াজ্জেম হোসেনকে দেখানো হয়েছিলো। ওই সময় চিকিৎসক একটি মলম দিয়েছিলেন। সেটি লাগানো হলেও কমেনি। বরং ক্রমেই বাড়তে থাকে। এরপর অজ্ঞাত ও বিরল রোগ জেনে তারা আস্থা হারিয়ে ফেলেন। আর চিকিৎসক দেখান নি।
ফেরদৌস সিদ্দিকী/এমএএস/পিআর