ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

জয়পুরহাটে বিচারক সঙ্কটে মামলার জট

প্রকাশিত: ০৬:৩০ এএম, ২৯ জুন ২০১৫

জয়পুরহাটের বিভিন্ন আদালতে বিচারক সঙ্কটের কারণে মামলা সম্পন্ন করতে তৈরি হচ্ছে দীর্ঘসূত্রিতা। প্রয়োজনীয় সংখ্যক বিচারক না থাকায় জেলার বিভিন্ন আদালতে আটকে আছে প্রায় ১৫ হাজার মামলা।

এসব মামলার পেছনে লম্বা সময় ও শ্রম ব্যয়ের পাশাপাশি বাদী-বিবাদীদের একদিকে যেমন বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করতে হচ্ছে, অন্যদিকে হয়রানিও জুটছে প্রতিনিয়ত। ফলে আদালতের প্রতি এসব বাদী-বিবাদীদের দিন দিন আস্থাও কমে আসছে।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, ১৯৭১ সালের জানুয়ারিতে বগুড়া জেলার একমাত্র জয়পুরহাট মহকুমা ঘোষণার পর এখানে বিচার বিভাগের কার্যক্রম চালু হয়। চলতি বছরের মে মাস পর্যন্ত বিচারক সঙ্কটে আটকে পড়া মামলা রয়েছে মোট ১৪২৪৬টি। এর মধ্যে ফৌজদারি মামলা ৬১৪৪টি ও সিভিল মামলার সংখ্যা ৮১০২টি।

এদিকে জেলায় জজশিপে বিচারকের পদ ৯টি থাকলেও বর্তমানে কর্মরত আছেন ৭ জন, দুটি পদ এখনো শূন্য।এছাড়া জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট পদ ৯টি থাকলেও কর্মরত আছেন মাত্র ৪ জন, শূন্য পদের সংখ্যা এক্ষেত্রে ৫টি।

ক্ষেতলাল উপজেলার বড়তারা ইউনিয়নের তারাকুল গ্রামের বাসিন্দা মুহিবুল কবির স্বপন একটি অগ্নিসংযোগ মামলার আসামি। তিনি বলেন, প্রায় ১১ বছর ধরে এ মামলা ঝুলে আছে। আজ হাকিম নাই কাল এসে শুনি সাক্ষী আসেনি পরের তারিখে শুনি বাদী টাইম পিটিশন দিয়েছে। এভাবে একটানা একটা অজুহাত লেগেই আছে।

ছেলে হত্যা মামলার বাদী পাঁচবিবি উপজেলার পৌর এলাকার পশ্চিম বালিঘাটার চাঁনতারা বেগম জাগো নিউজকে বলেন, গত ৮ বছর ধরে মামলা চালাতে গিয়ে অনেকটা সর্বশান্ত হয়েছি। ১৭ জনের সাক্ষ্য শেষ, তারপরো মামলার তারিখ শেষ হয় না। আসামিরা জামিনে ছাড়া পেয়ে মামলা তুলে নিতে চাপ ও হত্যার হুমকি দিচ্ছেন। থানায় জিডি করেও তেমন সুফল পাইনি।

বিচারক সঙ্কটের কারণে হাজারো মামলার জট খুলছে না স্বীকার করে জয়পুরহাটের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট নৃপেন্দ্র নাথ মণ্ডল বলেন, বিচারকের খালি পদগুলো পূরণ হলে অনেকাংশে মামলার জট কমবে। তবে সমস্যা উত্তরণে বিচারক , আইনজীবি, বাদী-বিবাদীর সমন্বয়ে মধ্যস্থতার মাধ্যমে মামলা নিষ্পত্তির প্রক্রিয়া চলছে বলেও তিনি জানান।

সরকারি প্লিডার (জিপি) অ্যাডভোকেট মোমিন আহমেদ চৌধুরী জাগো নিউজকে বলেন, বিচারক সঙ্কটের পাশাপাশি পদ্ধতিগত ক্রটির কারণেও মামলা জট রয়েছে। এখনো পুরাতন পদ্ধতি চালু রয়েছে। গত ৬ মাস থেকে সাব জজ ও বিভিন্ন শাখায় বিচারক নেই বলেও তিনি জানান।

জয়পুরহাট বার সমিতির সভাপতি কাজী রাব্বিউল হাসান মোনেম জাগো নিউজকে বলেন, উপজেলা বিচার বিভাগ বন্ধ হওয়ায় মামলার জট বেঁধেছে। সাব জজ, কন্টিজেন্সসি ও ট্রায়াল কোর্টে বিচারক নেই। বিচারক স্বল্পতা পূরণ হলে সমস্যার সমাধান হবে।

এ বিষয়ে জয়পুরহাট চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের একজন বিচারক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জাগো নিউজকে বলেন, মামলা জটের প্রধান কারণ বিচারক স্বল্পতা। তবে নির্দিষ্ট তারিখে সাক্ষী হাজির না হওয়া ও বদলিজনিত কারণে তদন্তকারী পুলিশ কর্মকর্তাদের নথিপত্র সরবরাহের অভাবও এর অন্যতম কারণ।

এমজেড/এমএস