রোহিঙ্গা ইস্যুতে কূটনৈতিক তৎপরতায় সরকার ব্যর্থ : খালেদা
রোহিঙ্গা ইস্যুতে সরকার কূটনৈতিক তৎপরতায় ব্যর্থ হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে দিতে সরকার উল্লেখযোগ্য কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করতে পারেনি। রোহিঙ্গারা এখানে পরিবেশ নষ্ট করছে। গাছ ও পাহাড় কাটায় এখানকার পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে।
সোমবার দুপুর ১টার দিকে কক্সবাজারের উখিয়ার বাঘঘোনা কাটাখালী ক্যাম্পে রোহিঙ্গাদের ত্রাণ দেয়ার পরে বিএনপি চেয়ারপারসন এসব কথা বলেন।
সরকারের সমালোচনা করে খালেদা জিয়া আরও বলেন, রোহিঙ্গাদের মধ্যে যেভাবে ত্রাণ দেয়া দরকার ছিল, সরকার তা পারেনি। বরং তারা বিভিন্নভাবে ত্রাণ দিতে বাধা দিয়েছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ খুব গরিব দেশ। লাখ লাখ রোহিঙ্গাকে দীর্ঘদিন এখানে রাখা সম্ভব নয়। মিয়ানমার সরকারের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা ও কূটনৈতিক তৎপরতার মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোর সমাধান খুঁজতে হবে। বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমার সরকারের প্রতি জোরালো আহ্বান জানান তিনি।
খালেদা জিয়া বলেন, মিয়ানমার সরকারকে বলব- মানবতার স্বার্থে রোহিঙ্গাদের দেশে ফিরিয়ে নিন। নাগরিকত্ব দিয়ে তাদের ফিরিয়ে নিতে হবে।
বিএনপি চেয়ারপারসনের সঙ্গে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, ত্রাণ কমিটির আহ্বায়ক মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান, ড. মঈন খান, বরকত উল্লাহ বুলু, আবদুল্লাহ আল নোমান, আমীর খসরু মাহমুদ, গোলাম আকবর খন্দকার, শিমুল বিশ্বাস, লুৎফুর রহমান কাজল, জেলা বিএনপির সভাপতি শাহজাহান চৌধুরী, উখিয়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি সরওয়ার জাহান চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক সোলতান মাহমুদ চৌধুরীসহ দলের সিনিয়র নেতারা রয়েছেন।
এর আগে বেলা ১১টা ২০মিনিটে খালেদা জিয়া কক্সবাজার সার্কিট হাউস থেকে উখিয়ার উদ্দেশ রওনা হন। এ সময় কক্সবাজার শহর থেকে শুরু করে উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্প পর্যন্ত প্রায় ৬০ কিলোমিটার সড়কের উভয় পাশে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের হাজার হাজার নেতাকর্মী ব্যানার প্ল্যাকার্ড ও ফেস্টুন সহকারে দাঁড়িয়ে দলীয় প্রধানকে স্বাগত জানান। এ সময় সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে দেখতে সাধারণ মানুষও তাদের সঙ্গে লাইনে অংশ নেন।
বাঘঘোনায় রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন শেষে খালেদা জিয়া হাকিমপাড়া ও বালুখালী রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেন। সবশেষে বালুখালী পানবাজারে স্থাপিত ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ড্যাব) মেডিকেল ক্যাম্পে ৫ হাজার রোহিঙ্গা শিশু ও প্রসূতি মায়ের জন্য চিকিৎসা সামগ্রী চিকিৎসকদের কাছে হস্তান্তর করেন বিএনপি চেয়ারপারসন।
এদিকে খালেদা জিয়া রোহিঙ্গা শিবিরে পৌঁছানোর আগেই সকালে ১০ হাজার রোহিঙ্গা পরিবারের জন্য আনা ৪৫ ট্রাক ত্রাণসামগ্রী সেনাবাহিনীর ক্যাম্পে হস্তান্তর করেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস ও নজরুল ইসলাম খান।
হস্তান্তর করা ত্রাণের হিসাব মতে, প্রতি পরিবার পাবে ১০ কেজি চাল, কয়েক কেজি করে ডাল ও প্রয়োজনীয় কাপড় রয়েছে। ৫ হাজার শিশুকে দুধসহ শিশু খাদ্য ও ৫ হাজার প্রসূতি মাকে গর্ভকালীন প্রয়োজনীয় খাদ্য সরবরাহ করা হবে।
সায়ীদ আলমগীর/আরএআর/আইআই