বাঁচানো গেল না জোড়া মাথার সেই শিশুটিকে
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকদের আন্তরিকতা ও সহযোগিতার অভাবে কুমিল্লায় জন্ম নেয়া ২ মাথা বিশিষ্ট হাসান-হোসাইনকে বাঁচানো যায়নি বলে অভিযোগ করেছেন স্বজনরা। রোববার দুপুরে হঠাৎ অসুস্থ হওয়ার পর স্বজনরা হাসান-হোসাইনকে জেলার দেবিদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে আসলে আশংকাজনক অবস্থায় ডাক্তারা কুমেক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। হাসপাতালে নেয়ার পথে বিকেলে তাদের মৃত্যু হয়।
এর আগে, গত ১৩ অক্টোবর দেবিদ্বার উপজেলা সদরের বেসরকারি সেবা হসপিটালে জেলার মুরাদনগর উপজেলাধীন বাংগরা বাজার থানার সীমানারপাড় গ্রামের প্রবাসী মো. সাদ্দাম হোসেনের স্ত্রী মরিয়ম বেগম জোড়া মাথা বিশিষ্ট ওই শিশুর জন্ম দেন। দু’মাথা থাকায় স্বজনরা তাদের নাম রাখেন হাসান-হোসাইন।
মা মরিয়ম বেগম জানান, জন্মের একদিন পর ডাক্তারদের পরামর্শে ঢাকা মেডিকেলে যাওয়ার পর গেট থেকেই কিছু দালাল সেখানে চিকিৎসা হবে না বলে আমাদের বিদায় করে দেন। কিন্তু বিকেলে দেবিদ্বারে চলে আসার পর অপারেশনকারি ডাক্তার মীর্জা আসাদুজ্জামান রতনের পরামর্শে পুনরায় গভীর রাতে ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি করার পর সেখানে ৩ দিন ভর্তি ছিলেন।
তিনি আরও বলেন, ঢাকা মেডিকেলে আমার শিশুদের আলাদা করার বিষয়ে ডাক্তার ও নার্সদের কোনো আন্তরিকতা না পেয়ে বাধ্য হয়ে বাড়িতে চলে আসি। ১০ মাস ওদেরকে গর্ভে রেখে যে কষ্ট পেয়েছি আজ চোখের সামনে তাদের মৃত্যুর পর বুকটা ভেঙে গেছে।
তবে ওই প্রসূতির অপারেশনকারি চিকিৎসক মীর্জা আসাদুজ্জামান রতন জানান, সারা বিশ্বে এমন শিশুদের আলাদা করার রেকর্ড খুব বেশি নেই। ওদের অপারেশনে নিশ্চিত মৃত্যুর ঝুঁকি ছিল। তাই ঢামেকের ডাক্তাররা হয়তো তড়িঘড়ি এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। তবে এ ধরনের রোগীর ক্ষেত্রে স্বজনরা ঝুঁকি মেনে নিয়েই ডাক্তারদের অনুরোধ করলে ডাক্তাররা অপারেশনের কাজে হয়তো হাত দিতেন। কিন্তু স্বজনরা চিকিৎসায় বিলম্ব দেখে স্বেচ্ছায় বাড়ি চলে আসেন। এতে ডাক্তারদেও কিছুই করার ছিল না।
কামাল উদ্দিন/এফএ/জেআইএম