ফুলগাজীতে ৩৬ গ্রাম প্লাবিত
টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের পানিতে ফেনীর পরশুরাম ও ফুলগাজীর মুহুরী, কহুয়া, সিলোনিয়া নদীর ৬টি স্থানে বেড়িবাঁধ ভেঙে গেছে। এতে নতুন করে আরো ১৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এ নিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামের সংখ্যা দাঁড়াল ৩৬টি। এতে আমান ধান, শীতকালীন সবজি, মাছসহ রাস্তাঘাটের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
এদিকে বেড়িবাঁধের ভাঙনের কারণে পরশুরামের আঞ্চলিক সড়কগুলোর সঙ্গে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। এছাড়াও ইউনিয়ন পর্যায়ে গত দুইদিন ধরে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।
উপজেলা প্রশাসন থেকে জানা গেছে, অবিরাম বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে কহুয়া নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। শনিবার গভীর রাতে পরশুরাম উত্তর বাজারের ফিরোজ মজুমদারের বাড়ির সামনের বেড়িবাঁধ ভেঙে যায়, এসময় দুলাল ডাইভারের বসত ঘর ভেসে যায়।
ওই স্থানে ভাঙনের কারণে পৌর এলাকার খোন্দকিয়া, দুবলাচাঁদ, বিলোনিয়ার ব্যাপক ঘরবাড়ি প্লাবিত হয় এবং বিপুল পরিমাণ পুকুরের মাছ ভেসে যায়।
এছাড়াও উপজেলার মির্জানগর ইউনিয়নের পাটনিকোণা নামক স্থানে ভাঙনের কারণে মনিপুর ও আশ্রাফ গ্রাম প্লাবিত হয়।
অপরদিকে রোববার রাতে চিথলিয়া ইউনিয়নের মুহুরী নদীর ধনিকুন্ডা এবং নোয়াপুর নামক স্থানে ভাঙনের কারণে ধনিকুন্ডা, ধনিক্ডুা বাজার, নোয়াপুর, অলকা, অনন্তপুর, রামপুর, দুর্গাপুর গ্রাম প্লাাবিত হয়েছে।
এছাড়াও বক্স মাহমুদ ইউনিয়নের কহুয়া নদীর বাগমাড়া ও টেটেশ্বর নামক স্থানে ভাঙনের কারণে উত্তর গুথুমা, বাঘমারা, টেটেশ্বর গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলাম জানান, অবিরাম বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলের বন্যায় উপজেলায় ১ হাজার ৪০ হেক্টর জমির আমন ধান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়াও ৩০ হেক্টর শীতকালীন সবজি নষ্ট হয়েছে বলে প্রাথমিক ভাবে ধারণা করা হচ্ছে।
উপজেলা মৎস কর্মকর্তা বিজয় কুমার পাল জানান, দুইদিনের বন্যায় উপজেলার ৩৮২টি পুকুর ডুবে গেছে। এছাড়াও প্রায় ৯ মেট্রিক টন পোনা মাছ ভেসে গেছে এবং ১৭২ মেট্রিক টন মাছ বন্যার পানিতে ভেসে গেছে।
ফেনী পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী কহিনুর আলম জাগো নিউজকে বলেন, মুহুরী, কহুয়া, সিলোনিয়া নদীর ছয়টি স্পটে পানির ওভারফ্লো'র কারণে বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে ৩৬টি গ্রামে পানি ঢুকে গেছে। আগামী ছয় ঘণ্টার মধ্যে পানি নেমে যাবে। পানি নামার পরপরই মেরামতের কাজ শুরু করবে পাউবো।
জহিরুল হক মিলু/এফএ/এমএস