সেতুমন্ত্রী এ সড়ক দিয়ে একবার গেলেই কষ্টটা বুঝতেন
সড়ক পথে যাত্রী দুর্ভোগের আরেক নাম এখন কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়ক। ব্যস্ত এই মহাসড়কের ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অংশের প্রায় ২০ কিলোমিটারই ভাঙাচোরা। দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না হওয়ায় বেশ কিছু অংশে বড় বড় গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। মহাসড়কটির ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার ভাদুঘর থেকে বিয়াল্লিশর পর্যন্ত অংশটুকু অনেকটাই যানবাহন চলাচলের অনুপোযোগী হয়ে পড়েছে।
সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মহাসড়কটি সংস্কারের জন্য প্রকল্প অনুমোদন হয়ে গেছে। তবে কবে নাগাদ কাজ শুরু হবে কিংবা আর কতদিন যাত্রীদের দুর্ভোগ পোহাতে হবে সেটি স্পষ্ট করে বলা যাচ্ছে না।
বেহাল এ মহাসড়কে যানবাহনের গতি যেমন কমছে তেমনি গর্তগুলোতে প্রায়ই বিকল হয়ে পড়ছে যানবাহন। শনিবার দুপুরেও ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার ভাদুঘর হুজুরবাড়ি এলাকায় মহাসড়কের গর্তে পড়ে একটি পণ্যবাহী ট্রাক বিকেল হয়ে যায়। পরে স্থানীয়দের সহায়তায় ট্রাকটি গর্ত থেকে তুলে সচল করা হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়ক দিয়ে প্রতিদিন বেশ কয়েকটি জেলার পরিবহন ও যাত্রীরা চলাচল করে থাকেন। নামে কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়ক হলেও চট্টগ্রাম-সিলেট রুটের সব যানবাহনই এ মহাসড়ক দিয়ে চলাচল করে। তাছাড়া কোনো কারণে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক বন্ধ থাকলে বিকল্প হিসেবে কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কটি ব্যবহৃত হয়। তবে নানাভাবে গুরুত্বপূর্ণ এ মহাসড়কটি দীর্ঘদিন ধরেই সংস্কার করা হচ্ছে না। এতে করে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার বিশ্বরোড় মোড় থেকে সদর উপজেলার উজানিসার পর্যন্ত খানা-খন্দের সৃষ্টি হয়েছে।
এছাড়া কিছু অংশের পিচ উঠে গেছে এবং বড় বড় গর্ত সৃষ্টি হওয়ার কারণে যানবাহন চলাচলের অনুপোযোগী হয়ে পড়ছে। এর ফলে দীর্ঘদিন ধরে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে যাত্রীদের। বর্তমানে মহাসড়কটি দিয়ে অভ্যন্তরীণ ও দূরপাল্লার যানবাহনগুলো যেমন ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে তেমনি যাত্রীদেরকেও গুণতে হচ্ছে অতিরিক্ত ভাড়া।
সিএনজি অটোরিকশা চালক রহিজ মিয়া জানান, এই রাস্তা দিয়ে এখন ঝুঁকি নিয়ে গাড়ি চালাতে হয় আমাদের। প্রায়ই গাড়ির বিভিন্ন যন্ত্রাংশ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এজন্য বাধ্য হয়েই যাত্রীদের কাছ থেকে ৫/১০ টাকা বেশি নিতে হচ্ছে। দ্রুত এই সড়ক সংস্কার না করলে গাড়ি চালানোই দায় হয়ে পড়বে।
হেলাল মিয়া নামে বাসযাত্রী জানান, এতোদিন ধরে যাত্রীদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে অথচ কর্তৃপক্ষ মহাসড়কটি সংস্কার করছেন না। যদি সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এই সড়ক দিয়ে একবার যেতেন তাহলে বুঝতেন আমাদের কষ্ট।
ভাদুঘর এলাকার বাসিন্দা হোসেন মিয়া বলেন, বৃষ্টি হলে মহাসড়কের গর্তগুলোতে কাঁদা-পনি জমে। প্রায়ই এসব গর্তে যানবাহন বিকল হয়ে পড়ে। এতে করে অন্যান্য যানবাহনের যাত্রীদেরকেও দুর্ভোগ পোহাতে হয়। জরুরি ভিত্তিতে এই বেহাল মহাসড়ক সংস্কার করে যাত্রীদের দুর্ভোগ কমানোর দাবি জানান তিনি।
এ ব্যপারে জানতে চাইলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু এহতেশাম রাশেদ জাগো নিউজকে বলেন, মহাসড়কের সরাইল উপজেলার বিশ্বরোড় মোড় থেকে আখাউড়া উপজেলার ধরখার পর্যন্ত অংশ সংস্কারের জন্য নেয়া প্রকল্প ইতোমধ্যেই অনুমোদন পেয়েছে। তবে কবে নাগাদ ওই প্রকল্পের কাজ শুরু হবে সেটি বলা যাচ্ছে না।
আজিজুল সঞ্চয়/এফএ/এমএস