ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

রাজশাহীর বাজারে কৃত্রিম ডিম!

নিজস্ব প্রতিবেদক | রাজশাহী | প্রকাশিত: ০১:২৬ পিএম, ০৭ অক্টোবর ২০১৭

রাজশাহীর বাজারে বিক্রি হচ্ছে কৃত্রিম ডিম। দেখতে অবিকল হাঁস-মুরগির ডিমের মতো এ ডিম বিক্রি হচ্ছে পাড়া-মহল্লার দোকানগুলোতে। না জেনেই বিক্রেতারা দেদারছে বিক্রি করছেন এসব ডিম।

ভুক্তভোগীরা বলছেন, ভাঙার পর আসল ডিমের মতো কুসুম এক জায়গায় না থেকে চারপাশে ছড়িয়ে পড়ে। ভাজলে এ ডিমের আসল-নকল বোঝা যাচ্ছে না। কিন্তু সিদ্ধ করলেই বোঝা যাচ্ছে নকল!

বৃহস্পতিবার নগরীর টিকাপাড়া এলাকার একটি দোকান থেকে এক হালি ডিম কিনেন জনৈক হামিদুল ইসলাম। তিনি বলেন, সাদা রঙের ডিমগুলো হাতে নিয়ে বুঝতে পারেন এটি আসল ডিম নয়। খোলস অমশ্রিন এবং আকারে স্বাভাবিক ডিমের চেয়ে বড়। ডিমগুলো অনেক বেশি ভঙ্গুর।

তিনি আরও বলেন, বাসায় নিয়ে সিদ্ধ করার পর দেখা যায় কুসুম সাদা। ভেতরের সাদা অংশ স্বচ্ছ পানির মত টলটলে। তাতে ডিমের কোনো গন্ধ নেই। পরে স্থানীয়দের দেখান ডিমগুলো।

এর আগে গত ১ অক্টোবর নগরীর কাজিহাটা এলাকার গৃহবধূ রোজী বেগম কৃত্রিম ডিম রান্না করে খান। এরপর থেকে বমি ও পাতলা পায়খানা শুরু হয় ওই গৃহবধূর। পরে তাকে হাসপতালে নেন স্বজনরা।

Rajshahi-Egg--Photo-1

নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন ডিম ব্যবসায়ী বলেন, রাজশাহী অঞ্চলের খামারে উৎপাদিত ডিম বিক্রি হয় এখানকার বাজারে। ফলে কৃত্রিম ডিম বিক্রির সুযোগ নেই। তারপরও ভারত থেকে আমদানি করা ডিমের সঙ্গে এসব ডিম চলে আসতে পারে।

জানা গেছে, কৃত্রিম ডিমের সাদা অংশ তৈরি করতে বেনজরিক অ্যাসিড, জেলি, অজানা রাসায়নিক গুঁড়ো এবং আকৃতি তৈরিতে বেকারিতে ব্যবহার্য রাসায়নিক ব্যবহার করা হয়। কুসুম তৈরি করা হয় অজানা হলুদ গুঁড়ো ও তরল পদার্থের সংমিশ্রণে। পরে এ মিশ্রণের সঙ্গে ম্যাজিক ওয়াটার মেশানো হয়।

ম্যাজিক ওয়াটারে ক্যালসিয়াম ক্লোরাইড থাকে। খোসার অংশটি তৈরি করা হয় মোম (এতে প্যারাফিন থাকে) এবং আরও বেশ কিছু রাসায়নিকের মিশ্রণে। এ সব ডিম্বাকৃতির প্লাস্টিকের খোলসে পুরে শুকিয়ে নেয়া হয়। যা দেখতে অবিকল আসল মুরগি বা হাঁসের ডিমের মতোই।

জানতে চাইলে রাজশাহীর সিভিল সার্জন সুজিত কুমার সাহা বলেন, কৃত্রিম ডিম এক কথায় বিষাক্ত এবং মানবদেহের জন্য খুবই ক্ষতিকর। দীর্ঘদিন এ ধরনের ডিম খেলে স্নায়ুতন্ত্র ও কিডনিতে সমস্যা হতে পারে। হতে পারে ক্যানসারসহ নানা জটিল রোগের কারণ। কৃত্রিম ডিমে কোনো প্রোটিন কিংবা পুষ্টিকর উপাদান থাকে না। ফলে এ ডিম খেলে রাসায়নিক ক্রিয়ায় শরীরের অঙ্গহানিসহ বিষক্রিয়ায় মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।

রাজশাহীতে কৃত্রিম ডিম বিক্রির বিষয়টি তাদের জানা নেই বলে জানিয়েছেন রাজশাহীর বাজার মনিটনিং কর্মকর্তা শামীমুল ইসলাম। তিনি বলেন, বিএসটিআই ও ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর নিয়মিত বাজার তদারকি করছে। এমন খবর থাকলে ধরা পড়ত।

তবে রাজশাহীতে এমন ডিম পাওয়ার কথা শোনা যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের সহকারী পরিচালক অপূর্ব অধিকারী। তিনি বলেন, এ বিষয়ে প্রাথমিকভাবে তারা সচেতনতামূলক কার্যক্রম শুরু করবেন। পরবর্তীতে অন্যান্য ব্যবস্থা নেয়ার হবে।

ফেরদৌস সিদ্দীকী/আরএআর/জেআইএম