কুমিল্লায় নির্মাণাধীন থানা ভবন ধসে পড়ায় তোলপাড়
কুমিল্লার চান্দিনা থানা পুলিশের জন্য নির্মাণাধীন থানা ভবনের একাংশ ধসে পড়ার ঘটনায় পুলিশে তোলপাড় চলছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে ও অনুমোদিত ওই নির্মাণাধীন থানা ভবনের একাংশ বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে ধসে পড়ে। এ সময় তিন নির্মাণশ্রমিক আহত হন। উদ্বোধনের আগেই ভবনের ছাদ ভেঙে পড়ায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কর্তৃক পুরো ভবনের নির্মাণ কাজ নিয়েই এখন পুলিশে প্রশ্ন উঠেছে।
জানা যায়, চান্দিনা থানা পুলিশের কার্যক্রমের জন্য ৮০-এর দশকে দ্বিতল ভবন নির্মিত হয়। ওই ভবনটি দীর্ঘদিন জরাজীর্ণ থাকায় ২০১৬ সালে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে ছয় কোটি ২৯ লাখ টাকা ব্যয়ে চারতলা ভবনের টেন্ডারের কাজ পায় প্রমিন্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার্স নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ওই বছরের শেষদিকে পুরাতন ভবনটি ভেঙে নতুন ভবনের কাজ শুরু করে প্রতিষ্ঠানটি। কাজের শুরুর দিক থেকে নিম্নমানের পাথর, ইট ও সিমেন্ট ব্যবহার করে আসছিল সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। ভবনটি যেহেতু পুলিশের সেহেতু স্থানীয় লোকজনও এ বিষয়ে কথা বলার সাহস পাচ্ছিল না।
বৃহস্পতিবার ভবনটির ৪শ স্কয়ার ফিটের ছাদের ঢালাই চলছিল। ঢালাই কাজের শেষ পর্যায়ে শ্রমিকরা ছাদ থেকে নেমে আসার সময় হঠাৎ ধসে পড়ে নির্মাণাধীন পুরো ছাদ। তাৎক্ষণিকভাবে পার্শ্ববর্তী ভাড়াটিয়া ভবনে থাকা চান্দিনা থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে এবং আহতদের উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য পাঠায়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় একাধিক ঠিকাদার জানান, পুলিশের জন্য ভবন তৈরিতে এমন অনিয়ম মেনে নেয়া যায় না। ভবনটি নির্মাণ ও ছাদ ঢালাই কাজের জন্য যে পরিমাণ রড ও সিমেন্ট দেয়ার কথা ছিল তার চেয়ে অনেক কম পরিমাণ রড-সিমেন্ট ব্যবহারে এ ঘটনাটি ঘটেছে। ঘটনার পর পুলিশ কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়ে বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
এ ব্যাপারে প্রতিষ্ঠানটির ঠিকাদার আলমগীর হোসেন জানান, মূলত নির্মাণশ্রমিকদের গাফিলতিতেই এ ঘটনা ঘটেছে। তবে যেটুকু ক্ষতি হয়েছে তা দ্রুত সমাধান করার চেষ্টা করব।
চান্দিনা থানার অফিসার ইন-চার্জ (ওসি) নাছির উদ্দিন মৃধা জানান, ঘটনাস্থলে একাধিক প্রকৌশলী এসে বিষয়টি খতিয়ে দেখেছেন।
তিনি আরও জানান, পুরো ভবনের নির্মাণ কাজের বিষয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কোনো গাফিলতি কিংবা অনিয়ম হয়েছে কি-না তাও প্রকৌশলীরা অনুসন্ধান করে দেখছেন।
মো. কামাল উদ্দিন/বিএ