ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

নদীর পানি কমলেও পানিবন্দী মানুষ

প্রকাশিত: ০৬:৫৯ এএম, ১৫ জুন ২০১৫

২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে জেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত যমুনা, ব্রহ্মপুত্র, ঘাঘট, করতোয়া ও তিস্তাসহ সবকটি নদ-নদীর পানি কিছুটা কমলেও চার উপজেলার নদ-নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল ও চর এলাকার ১৫ হাজার মানুষ পানিবন্দী অবস্থায় জীবনযাপন করছেন।  বিস্তীর্ণ এলাকায় বন্যার পানি ঢুকে পড়ায় যোগাযোগের রাস্তাঘাট, নানা ফসলি জমি, পুকুরসহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাঠ তলিয়ে গেছে।

এদিকে জেলার ফুলছড়ি উপজেলার কালাসোনা, গজারিয়ার কামারপাড়া, জিয়াডাঙ্গা, কঞ্চিপাড়ার রসুলপুর, পূর্ব কঞ্চিপাড়া, জোড়াবাড়ি, সাতারকান্দি, ফজলুপুর ইউনিয়নের নিশ্চিন্তপুর ও খাটিয়ামারিসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় ব্রহ্মপুত্রের ব্যাপক ভাঙন দেখা দিয়েছে।  এরমধ্যে উদাখালী ইউনিয়নের সিংড়িয়া ও উড়িয়া ইউনিয়নের রতনপুর ব্রহ্মপুত্র নদের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ঝুঁকিপূর্ণ দুটি পয়েন্টে ভাঙন ঠেকাতে কাজ করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, রোববার বিকেল পর্যন্ত যমুনা ও ব্রহ্মপুত্র নদের পানি ছিল বিপদসীমার ২১ সেন্টিমিটার উপরে।  আর ঘাঘট ২১.৭০ সেন্টিমিটার, করতোয়া ১৭.৮৬ সেন্টিমিটার ও তিস্তা নদীর পানি ২৪.৩৫ সেন্টিমিটার ছিল।

২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে সোমবার সকাল সাড়ে ৯টা পর্যন্ত যমুনা ও ব্রহ্মপুত্রের পানি ৭ সেন্টিমিটার কমেছে।  তবে এখনো যমুনা ও ব্রহ্মপুত্রের পানি বিপদসীমার ১৩ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।  এছাড়া ঘাঘট নদীর পানি ২১.৬৫ সেন্টিমিটার, করতোয়া ১৮.২৭ সেন্টিমিটার ও তিস্তা ২৪.৪১ সেন্টিমিটার হলেও এখনো বিপদসীমার নিচে রয়েছে।  

অপরদিকে, জেলার সাঘাটা, ফুলছড়ি, সুন্দরগঞ্জ ও সদর উপজেলার ১৫ হাজার মানুষ এখন পানিবন্দী অবস্থায় রয়েছেন।  এ অবস্থায় পানিবন্দী এসব এলাকার মানুষ তাদের গরু, ছাগল, ভেড়া, হাঁস-মুরগী উঁচু জায়গা ও বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন।  রাস্তাঘাটে কাঁদা পানি জমে থাকায় মানুষের চলাচলে দুর্ভোগ বেড়েছে।  এছাড়া মানুষ গবাদি পশুর সঙ্গে গাদাগাদি করে খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।  দেখা দিয়েছে খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানির সঙ্কট।  পানিবাহিত রোগ দেখা দিয়েছে পানিবন্দী থাকা মানুষের মধ্যে।  পানিবন্দী এসব মানুষের মধ্যে অনেকে ত্রাণ না পাওয়ার অভিযোগ তুলেছেন।

তিস্তার পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে জেলার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার হরিপুর, কাঁপাসিয়া, তারাপুর, বেলকা, চণ্ডিপুর ইউনিয়নের ৩০টি চর এলাকার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন।  তিস্তা নদী ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করায় বিভিন্ন এলাকার দুই শতাধিক ঘর-বাড়িসহ বিভিন্ন ফসলি জমি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।

এছাড়া সদর ও সাঘাটা উপজেলার নিম্নাঞ্চল বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়ে পড়েছে।  ফলে এসব এলাকার মানুষ তাদের পরিবার পরিজন নিয়ে পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন।  অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাঠে বন্যার পানি প্রবেশ করায় শিক্ষার্থীরা স্কুলে আসতে পারছে না।  ফলে স্কুলগুলো খোলা থাকলেও শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি অনেকটা কমে গেছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের ফুলছড়ি উপজেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাহী প্রকৌশলী অরুন কুমার সেন জাগো নিউজকে জানান, ২৪ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্র নদের পানি ৭ সেন্টিমিটার কমেছে।  এছাড়া জেলার মধ্যে প্রবাহিত ঘাঘট, করতোয়া ও তিস্তা নদীর পানি দুই থেকে এক সেন্টিমিটার কমেছে।  তবে নতুন করে কোনো এলাকায় পানি ঢোকেনি বা ভাঙন দেখা যায়নি বলেও জানান তিনি।

ফুলছড়ি উপজেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত (অতিরিক্ত) নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আবদুল আউয়াল জাগো নিউজকে জানান, সরকারের পক্ষ থেকে ফুলছড়ি ও সাঘাটা উপজেলার বন্যা কবলিত মানুষদের মাঝে ইতোমধ্যে ১৬ মেট্রিকটন চাল বিতরণ করা হয়েছে।

অমিত দাশ/এমজেড/এমএস