কারাগারে আ.লীগের এমপিসহ নেতাকর্মীরা!
কারাগারে কক্সবাজার-৩ (সদর-রামু) আসনের সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল! তার সঙ্গে কারাগারে গেলেন কক্সবাজার সদর ও রামু উপজেলা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের অসংখ্য নেতাকর্মী। কারাবরণ করতে হলো আরও হাজারও মানুষকে। তবে এরা কেউ কারাগারে যাওয়ার জন্য আসেননি। গিয়েগিলেন মেজবানে অংশ নিতে। আর মেজবানস্থলে যেতেই প্রথমে চোখে পড়ে বিশাল এ কারাগার। দৃশ্যটি প্রকাশ্যে হলেও প্রতীকী।
কক্সবাজারের রামুতে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪২তম শাহাদাৎবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমলের নেতৃত্বে স্মরণকালের বৃহৎ মেজবান অনুষ্ঠিত হয়। মেজবানস্থলে নির্মিত প্রতীকী কারাগারে বিদেশে পালিয়ে থাকা বঙ্গবন্ধুর খুনিদের ফিরিয়ে আনার দাবিতে এভাবে স্বেচ্ছায় কারাবরণ কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। এজন্য নির্মিত কারাগারে প্রবেশ করে স্বেচ্ছায় কারাবরণ কর্মসূচিতে অংশ নেন এমপি সাইমুম সরওয়ার কমল, কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট সিরাজুল মোস্তফা, সহ-সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা জাফর আলম চৌধুরী, মহিলাবিষয়ক সম্পাদক মুসরাত জাহান মুন্নীসহ মেজবানে আসা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মী, মুক্তিযোদ্ধা, সাংবাদিক, শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও সর্বস্তুরের মানুষ।
মঙ্গলবার (২২ আগস্ট) রামু স্টেডিয়ামে মেজবান এবং শোক সমাবেশ চলাকালে এ প্রতীকী কারাবরণ কর্মসূচি দৃষ্টি কাড়ে সব মানুষের। দুপুর থেকে শুরু হওয়া এ মেজবান চলে বিকেল পর্যন্ত।
এ উপলক্ষে আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট সিরাজুল মোস্তফা বলেন, বাঙালি জাতির মুক্তির দূত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতার হত্যাকারী অনেকের ফাঁসি হয়েছে। যারা এখন বিদেশে পালিয়ে বেড়াচ্ছে জাতি তাদের বিচার দেখার জন্য ব্যাকুল হয়ে আছে। যার ফলশ্রুতিতে আজ রামুতে প্রতীকী কারাগারে বন্দি হয়ে আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ ও সর্বস্তুরের জনতার এ প্রতিবাদ বিশ্ববিবেককে নাড়া দেবে।
তিনি বলেন, এমপি কমলের উদ্যোগে এ ব্যতিক্রমী কারাবন্দি প্রতিবাদ ও স্মরণকালের বৃহৎ মেজবান বঙ্গবন্ধুর আদর্শের নেতাকর্মীদের জন্য সাহস আর প্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে।
স্বাগত বক্তব্যে সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল বলেন, কানাডা, আমেরিকা, লিবিয়া ও পাকিস্থানে পালিয়ে বেড়ানো বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বিচার না হলে বাঙালি জাতি কলঙ্কমুক্ত হবে না। তাই অবিলম্বে এসব খুনিদের দেশে ফিরিনে এনে বিচার নিশ্চিত করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের মানুষের প্রাণের স্পন্দন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাহাদাৎবার্ষিকী উপলক্ষে প্রতিবছর তিনি বৃহৎ আকারে মেজবান আয়োজন করে আসছেন। তবে এবার এ আয়োজন আরও বৃহৎ আকারে করার পাশাপাশি বিদেশে পালিয়ে থাকা বঙ্গবন্ধুর খুনিদের ফিরিয়ে আনার দাবিতে প্রতীকী কারাগারে স্বেচ্ছায় কারাবরণ কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।
তিনি বলেন, যদি অবিলম্বে বঙ্গবন্ধুর খুনিদের দেশে ফিরিয়ে এনে বিচার নিশ্চিত করা না হয়, তাহলে কক্সবাজার-রামুর মতো সারাদেশের মানুষ এভাবে প্রতিবাদমুখর হয়ে উঠবে।
বেলা ১২টা থেকে বিকেল পর্যন্ত এ মেজবানে কক্সবাজার সদর ও রামু উপজেলা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের হাজার হাজার নেতাকর্মী, সরকারি দফতর, কলেজ, মাধ্যমিক স্কুল ও মাদরাসাসহ বিভিন্ন শিক্ষা, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারী, ছাত্রছাত্রী, শিক্ষকসহ সর্বস্তরের জনতা অংশ নেন।
মেজবানের জন্য স্টেডিয়ামে উপজেলার ১১টি ইউনিয়নের জন্য ১১টি প্যান্ডেলে খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। এছাড়া কক্সবাজার সদর উপজেলার মেহমান, সাংবাদিক এবং বৌদ্ধ ও হিন্দু সম্প্রদায়ের জন্য পৃথক প্যান্ডেলে মেজবানের আয়োজন করা হয়।
রামু জাতীয় শোক দিবস ও মেজবান বাস্তবায়ন কমিটির মহাসচিব উপজেলা চেয়ারম্যান রিয়াজ উল আলম জানিয়েছেন, এমপি কমলের উদ্যোগে আয়োজিত এ মেজবান দেশের স্মরণকালের বৃহৎ মেজবান। মেজবান ও শোক সমাবেশে লাখো মানুষ সমবেত হয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন।
আয়োজন বিশাল হলেও সুশৃঙ্খলভাবে সম্পন্ন করতে পারায় তিনি আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, শ্রমিক লীগ, সৈনিক লীগ, তাঁতী লীগ, বঙ্গবন্ধু ছাত্র পরিষদসহ বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন।
সায়ীদ আলমগীর/বিএ