ছেলের গ্রেফতারের কথা শুনে কান্নায় ভেঙে পড়লেন সেই মা
‘মোর ছুয়াডাক নাকি পুলিশ ধরিছে, পুলিশ তো ছুয়াডাক এলা মারিবে। ছুয়াডার বাপ মরে যাওয়ার পর কত কষ্ট করে বড় করিছু। এতদিন তো মোক খিলাইছে। কিছুদনি আগত মোর বড় নাতি রাসেদুল কিছু জমি লিখে নিছে। সেই তানে মোর বড় ছুয়াডা খুব রাগ করিছে। মোক মারার তানে ছুয়াডাক পুলিশ কেনে ধরে আনিল। পুলিশ তো মারিবে এলা, মুই চাও না ছুয়াডাক পুলিশ মারুক। ছুয়াডাক জন্ম দিয়া বড় করতে, কত কষ্ট হয়ছে মুই ছাড়া কই (কেউ) কহিবা পারিবেনি।’
বৃহস্পতিবার রাতে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সেই বৃদ্ধা মায়ের খোঁজ নিতে গেলে তাকে নির্যাতন করা সেই পাষণ্ড ছেলেকে পুলিশ গ্রেফফতার করেছে কথা শুনে কথাগুলো বলে কান্নায় ভেঙে পড়েন বৃদ্ধা মা।
বৃদ্ধ মা বলেন, ‘সেদিন খুব ভোগ (ক্ষুধা) লাগিছিল তাই বউমার কাছত ভাত খাবা চাহিছুনি। কিন্তু নাতির জমি খান লিখে দিবার রাগে মোর ছুয়া ও বউমা মোক মারিছে। চোখত গুতা দিছে। পরে বাড়ি থেকে বাইর করে দিছে।’
ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলায় বউমার কাছে ভাত চাওয়ায় মাকে নির্যাতনের অভিযোগে ছেলে বদির উদ্দিনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বুধবার রাতেই উপজেলার ডাঙ্গীপাড়া গ্রামের নিজ বাসা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
মঙ্গলবার (১৫ আগস্ট) দুপুরে ছেলের বউয়ের কাছে ভাত চেয়েছিলেন। একথা দবির উদ্দীন জানতে পেরে লাঠি দিয়ে মাকে নির্যাতন করেন। লাঠির আঘাতে তসলিমার বাম চোখ থেঁতলে গেছে।
বুধবার সকালে জেলা প্রশাসক আব্দুল আওয়াল ও জাগো নিউজের জেলা প্রতিনিধি ওই বৃদ্ধা মাকে উদ্ধার করে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন। বর্তমানে বৃদ্ধা মা ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
এ বিষয়ে হরিপুর থানার ওসি রুহুল কুদ্দুস জানান, ঘটনার পরদিন বুধবার রাতে পুলিশ দবির উদ্দীনকে বাড়ি থেকে গ্রেফতার করেছে।
জানা গেছে, তাসলেমার স্বামী সফির উদ্দীন ৩০ বছর আগে মারা যান। তিনি ছেলেদের জায়গা জমি দিয়ে গেছেন। কিন্তু তারা তাদের মাকে সেই দেখভাল করতে অনীহা প্রকাশ করে আসছিলেন।
বিএ