বাবা-মা হারা সেই দুই শিশুর দায়িত্ব নিলেন জেলা প্রশাসক
গত ১৩ জুন পাহাড়ধসের ঘটনায় বাবা-মা হারা দুই শিশু জেসমিন আক্তার মীম (৪) ও সুমাইয়া আক্তারের (২০ মাস) পড়ালেখাসহ যাবতীয় ভরণ-পোষণের দায়িত্ব নিলেন জেলা প্রশাসক।
তাদের ১৮ বছর বয়স পর্যন্ত সরকারিভাবে এ দায়িত্ব পালন করবে জেলা প্রশাসন। বুধবার সকালে জেলা প্রশাসক মো. মানজারুল মান্নান এ কথা জানিয়েছেন।
জেলা প্রশাসক বলেন, বাবা-মা হারা দুই শিশুসন্তানের ভরণ-পোষণের ব্যয়ভার বহন করবে জেলা প্রশাসন। এ জন্য ১৮ বছর পর্যন্ত দুই বোনকে প্রতি মাসে ৫ হাজার করে দেয়া হবে। আর এ দুই শিশুর লালন পালনের দায়িত্ব পালন করবেন তাদের চাচা কাউসার আহমেদ।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ১৩ জুন রাঙ্গামাটিতে পাহাড়ধসে মাটি চাপায় মারা যান মীম ও সুমাইয়ার বাবা সালাউদ্দিন এবং মা রহিমা আক্তার। এরপর থেকে তাদের ঠাঁই হয় চাচা কাউসার আহমেদের কাছে।
সেই সঙ্গে তাদের লালন পালনের দেখভাল করছেন নানি সুফিয়া খাতুন (কাউসারের মা)। ঘটনার পরপরই বৃদ্ধা মা সুফিয়া খাতুন এবং দুই ভাতিজি মীম ও সুমাইয়াকে সঙ্গে নিয়ে সরকারি আশ্রয়কেন্দ্রে গিয়ে ওঠেন কাউসার। এরই মধ্যে আশ্রয়কেন্দ্র ছেড়ে উঠেছেন শহরের কলেজগেট এলাকায় একটি ভাড়া বাসায়।
কাউসার আহমেদ বলেন, পাহাড়ধসের দিন তাদের রূপনগরের বসতবাড়িতে ছিলেন ছয়জন। হঠাৎ পাশের পাহাড় থেকে ধসে পড়া মাটির চাপায় ভাই ও ভাবি মারা গেছেন। কিন্তু তার আগেই মা এবং দুই ভাতিজিকে কোলে নিয়ে বের হয়ে ছুটে যান পাশের বড় ভাইয়ের বাসায়। এ জন্য মা সুফিয়া খাতুন আর ভাতিজি মীম ও সুমাইয়াসহ বেঁচে যান। বাবা-মাকে চিরদিনের জন্য হারানোর পর কেউ কেউ দুই ভাতিজি মীম ও সুমাইয়াকে লালন পালনের দায়িত্ব নিতে চেয়েছিল। কিন্তু ওদের বাবা-মায়ের আদর-যত্নের কথা ভেবে নিজের বুকে আগলে রেখেছি। এখন বৃদ্ধা মাসহ ওদেরকে নিয়ে ভাড়া বাসায় উঠেছি।
তিনি বলেন, সুমাইয়া আজও সারাক্ষণ খোঁজে ওদের মাকে। বাবা-মায়ের পথ চেয়ে সারাক্ষণ বসে থাকে মীম। ওদের বাবা-মায়ের অভাব বুঝতে দিতে চাই না। বাবা-মায়ের ভালোবাসা দিয়েই ওদের বড় করে তোলার জন্য যা যা করণীয় তা পালন করতে আপ্রাণ চেষ্টা করে যাব।
সুশীল প্রসাদ চাকমা/এএম/জেআইএম