যৌতুকের আগুনে দগ্ধ কোহিনুর এখন বার্ন ইউনিটে
স্বামী ও তার পরিবারের যৌতুকের চাহিদা পূরণে ব্যর্থ হওয়ায় কোহিনুরের ওপর চালানো হয় নির্মম নির্যাতন। এখানেই শেষ নয়, তার শরীরে কেরোসিন ঢেলে দেয়া হয় আগুন। মঙ্গলবার সকালে নির্মম এ ঘটনাটি ঘটেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা উপজেলার বগাবাড়ি গ্রামে।
কোহিনুরকে উদ্ধার করে প্রথমে দেবিদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে বার্ন ইউনিটে মৃত্যু যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন কোহিনুর। তিনি দেবিদ্বার উপজেলার বড়শালঘর গ্রামের আবুল বাশারের মেয়ে।
জানা যায়, গত ২০০৫ সালের ১৭ জুন বড়শালঘর গ্রামের আবুল বাশারের কন্যা কোহিনুর আক্তার (২৮) এর সঙ্গে বিয়ে হয় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার বগাবাড়ি গ্রামের মৃত আব্দুল হাইয়ের ছেলে ও সাহপুর আফসার উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মোছলেহ উদ্দিনের সঙ্গে। বিয়ের পরে তাদের সুখের সংসারে জন্ম দেয় দুই ছেলে ও এক মেয়ে। বিয়ের পর থেকে যৌতুকের দাবিতে তার স্বামী, ভাসুর, শ্বাশুরী ও ননদদের নির্মম অত্যাচার নেমে আসে কোহিনুরের ওপর।
সর্বশেষ গত মঙ্গলবার সকালে স্বামী, শ্বাশুরী ও ননদদের নির্মম অত্যাচারের এক পর্যায়ে তার শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। পরে স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে দেবিদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে কর্ত্যব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে তাকে প্রেরণ করেন।
এ ব্যাপারে দেবিদ্বার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ডা. শারমিন আফরোজ জানান, ওই গৃহবধূর শরীরের প্রায় ২০ ভাগ পুড়ে গেছে। তার শরীরে অনেক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। বুধবার সন্ধ্যায় কোহিনুর আক্তারের বাবা আবুল বাশার জানান, মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করে জামাতাকে মোটরসাইকেল ক্রয় করার জন্য ৭৫ হাজার টাকাসহ বিভিন্ন সময়ে নানা উপহার সামগ্রী দেয়া হয়।
কিন্তু এরপরও আমার মেয়ের সুখ হলো না। এ বিষয়ে তিনি মামলা দায়ের করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন। এদিকে কসবা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. গোলাম মোর্শেদ জানান, ওই গৃহবধূকে নির্যাতনের ঘটনায় এখনো থানায় কেউ অভিযোগ করেনি, অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
কামাল উদ্দিন/বিএ