গাছে গাছে বেঁচে থাকবেন ফরিদপুরের ‘গাছ সামাদ’
গাছের চারা রোপণকেই জীবনের ব্রত হিসেবে নিয়েছিলেন ফরিদপুরের ভাগনডাঙ্গা গ্রামের রিকশাচালক আব্দুল সামাদ শেখ। এ জন্য অনেকেই তাকে বলতেন ‘গাছ সামাদ’ বা ‘পাগল সামাদ’ বলে।
গাছপ্রেমী এই মানুষটি আর নেই। গত শনিবার ভোর ৪টার দিকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা গেছেন। মৃত্যুকালে আব্দুল সামাদ শেকের বয়স হয়েছিল ৬০ বছর।
মাত্র ১২ বছর বয়স থেকেই প্রতিদিন অন্তত একটি করে গাছের চারা রোপণ করেছেন সামাদ। রিকশা চালিয়ে যা আয় হতো তা থেকেই টাকা বাঁচিয়ে প্রকৃতির প্রতি দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। জীবদ্দশায় নানা ধরনের গাছের চারা রোপণ করেছেন তিনি। তবে প্রিয় ছিল ফলের গাছ, বিশেষ করে কাঁঠালগাছ। এই ফলটি বেশ পছন্দ করতেন তিনি।
অসুস্থ সামাদ গত ১ জুলাই থেকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন। পরের দিন তাকে হাসপাতালে তার নির্ধারিত শয্যাসহ কোথাও খুঁজে না পেয়ে বিচলিত হয়ে ওঠেন স্বজন ও হাসপাতালের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। পরে দেখা যায়, হাসপাতালের চত্বরে একটি গাছ রোপণ করে পানি ঢালছেন সামাদ।
ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গত ১২ জুলাই অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে তার শরীর থেকে টিউমার অপসারণ করা হয়। এর পর থেকে আব্দুল সামাদ শেখ সেপটিসেমিয়ায় (রক্তের মাধ্যমে সারা শরীরে ইনফেকশন ছড়িয়ে পড়া) ভুগছিলেন।
গাছ পাগল আব্দুল সামাদ থাকতেন ফরিদপুর শহরতলীর ভাজনডাঙ্গা সরকারি কলোনিতে। রিকশা চালিয়ে যা আয় হতো, তা থেকে আগে কিনতেন একটি চারা। এরপর বাকি টাকা দিয়ে চাল, ডাল, তেল, লবণ যা পারতেন কিনতে।
গত ৫০ বছর ধরে এভাবেই ফরিদপুর শহরসহ জেলার বিভিন্ন স্থানে সড়কের পাশে নিজের হাতে গাছ রোপণ করেছেন তিনি।
এমএমজেড/আরএস/জেআইএম