ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

৬ উপজেলার ৫ শতাধিক গ্রামের মানুষ পানিবন্দি

জেলা প্রতিনিধি | নেত্রকোনা | প্রকাশিত: ১২:৩২ পিএম, ১৩ আগস্ট ২০১৭

কয়েকদিনের টানা বর্ষণ আর পাহাড়ি ঢলে নেত্রকোনার ছয় উপজেলার পাঁচ শতাধিক গ্রামের মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। সেই সঙ্গে জোয়ারের পানি বেড়ে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে।

দুর্গাপুর, কলমাকান্দা,পূর্বধলা, বারহাট্টাসহ ছয় উপজেলার নওগাও, গুতমন্ডল, চন্দরকান্দি, দুর্লভপুর, পোগলা, মনকান্দিয়াসহ অন্তত পাঁচ শতাধিক গ্রামের মানুষ গতরাত থেকে পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।

একই সঙ্গে কয়েকটি উপজেলার আন্তঃউপজেলা সড়ক বন্যার পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় উপজেলা সদরের সঙ্গে গ্রামের মানুষের যোগাযোগ বিছিন্ন হয়ে যায়।

পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, সোমেশ্বরী নদীর পানি কিছুটা কমলেও কংস নদীর পানি বিপদসীমার জারিয়া পয়েন্টে ১৫৫ সে.মি, উব্দাখালি নদীর পানি কলমাকান্দা পয়েন্টে বিপদসীমার ৫৫ সে.মি ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

অবিরাম বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে নেত্রকোনা জেলার দুর্গাপুরে সোমেশ্বরী নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় দুর্গাপুর পৌরসভাসহ ৭টি ইউনিয়ন ও কলমাকান্দার উপজেলার সবকটি ইউনিয়নেবন্যা দেখা দিয়েছে। পাশাপাশি জেলার সবকটি উপজেলায় বড় ধরনের বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

নেত্রকোনা পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, শনিবার সকাল থেকে নেত্রকোনার সুমেশ্বরী নদীর পানি বিরিশিরি পয়েন্টে বিপদসীমার ১৫০ সে.মি কংস নদীর পানি জারিয়া পয়েন্টে ৫৫ সে.মি, উবধাখালি নদীর পানি কলমাকান্দা পয়েন্টে বিপদসীমার ৩৫ সে.মি ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

এছাড়া দুর্গাপুরের ৪টি, কলমাকান্দার আটটি ইউনিয়নসহ , মদন, আটপাড়া উপজেলার নিন্মাঞ্চলের ৩ সহস্রাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে জোয়ারের পানি প্রবেশ করায় শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। তলিয়ে গেছে কৃষকের রোপা আমনের ফসলি জমি।

Flood

সরেজমিনে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, গত কয়েকদিনের ভারি বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলের পানি বেড়ে উপজেলার সদর ইউনিয়নের মেনকীফান্দা, মাসকান্দা, চন্দ্রকোনা মায়ানগর, শ্যামনগর, গাঁওকান্দিয়া ইউনিয়নের ভাদুয়া, দক্ষিণ ভবানীপুর, শংকরপুর, তীতারজান কুল্লাগড়া ইউনিয়নের কামারখালী, সনারকান্দা, খুজিগড়া, বিপিনগঞ্জ, বিরিশিরি ইউনিয়নের দাখিনাইল, করুনিয়া, গাভীনা, সাগর দিঘীর পাড়, কাকৈরগড়া ইউনিয়নের ঝাঞ্জাইল বাজার, নগুয়া, তাতীরকোনা, লক্ষ্মীপুর, বাকলজোড়া ইউনিয়নের কেট্টা, গুজিরকোনা, রাম নগর, নাগের গাতী, চন্ডিগড় ইউনিয়নের কেরনখলা, গোহালিয়াকান্দা, ফেচিয়া, সাতাশী, দুর্গাপুর পৌরসভার- বুরুঙ্গা, মাকরাইল, চরমুক্তার পাড়া, মুজিব নগর, দক্ষিণ পাড়াসহ বিভিন্ন এলাকার রাস্তাঘাট ঢলের পানিতে তলিয়ে গিয়ে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পানি থৈ থৈ করছে।

ঢলের পানির সঙ্গে উপজেলার বিভিন্ন মৎস খামারের মাছ ভেসে গেছে। প্লাবিত গ্রামগুলোতে জ্বালানি ও গো-খাদ্যের তীব্র সঙ্কটে দেখা দিয়েছে।

দুর্গাপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ওমর ফারুক বলেন, দুর্গাপুর উপজেলায় ৫০০ হেক্টর জমিতে আমন ধান রোপন করা হয়েছে। ভারি বৃষ্টি ও ঢলের পানি অব্যাহত থাকলে পুরো উপজেলার আমন ফসল নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

দুর্গাপুর-কলমাকান্দা, পূর্বধলা, বারহাট্টসহ ছয় উপজেলার অধশত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, স্বাস্থসেবাকেন্দ্রে জোয়ারের পানি প্রবেশ করায় দুর্ভোগ বাড়ছে। তলিয়ে গেছে কৃষকের রোপা আমন ধান।

দুর্গাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মামুনুর রশীদ বলেন, আমি নতুন করে প্লাবিত বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখেছি। বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় আমরা সব ধরনের প্রস্তুতি নিচ্ছি।

জেলা প্রশাসক ড. মো. মুশফিকুর রহমান জানান, দুর্গাপুর-কলমাকান্দাসহ অন্যান্য উপজেলাগুলোকে বাড়তি নজর রাখা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তাগণ সার্বক্ষণিক পানি খোঁজ খবর রাখছেন। বন্যার অবনতি হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।

কামাল হোসাইন/এএম/পিআর

আরও পড়ুন