ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

নিজের মেয়ের বাল্যবিয়ে দিয়ে বিপাকে কাজী

জেলা প্রতিনিধি | ঠাকুরগাঁও | প্রকাশিত: ০৭:০২ এএম, ১০ আগস্ট ২০১৭

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা ঢোলারহাট ইউনিয়নের কাজী আমজাদ হোসেন অবশেষে নিজের নাবালিকা মেয়েকে বাল্যবিয়ে দিয়েছেন বলে অভিযোগের প্রমাণ পাওয়া গেছে। আইন অমান্য করে মেয়েকে বাল্যবিয়ে দেওয়ায় জেলা কাজী রেজিস্ট্রার সমিতির নেতাদের ও এলাকাবাসীর মধ্যে চাপা ক্ষোপের সৃষ্টি হয়েছে।

ইতোমধ্যে কাজী আমজাদ আলীর বিরুদ্ধে বাল্যবিয়ে দেওয়ার অভিযোগ এনে জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন এলাকাবাসী।

অভিযোগে জানা গেছে, সদর উপজেলার ঢোলারহাট ইউনিয়নের কাজী আমজাদ হোসেন প্রভাব দেখিয়ে দীর্ঘদিন যাবত আইন ভঙ্গ করে এলাকায় বাল্যবিয়ে সম্পন্ন করে আসছেন। পূর্বেও তার বিরুদ্ধে ইউনিয়ন পরিষদ ও জেলা রেজিস্ট্রার বরাবর বাল্যবিয়ে বিষয়ে অভিযোগ করলেও কোনো লাভ হয়নি।

সম্প্রতি কাজী আমজাদ হোসেন নিজের নাবালিকা মেয়ের একই উপজেলার চিলারং পাহাড়ভাঙ্গা এলাকার আব্দুল কাদেরের ছেলে বিজিবি সদস্য রবিউল ইসলামের সঙ্গে বাল্যবিয়ে দেন।

কাজী আমজাদ হোসেনের মেয়ে (মোছা: আরজিনা) ২০১৬ সালে মধুপুর ঈদগাহ দাখিল মাদরাসা থেকে জেডিসি (জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট পরীক্ষা) উর্ত্তীণ হয়েছেন। তার জেডিসি পরীক্ষার রেজিস্ট্রেশন কার্ড অনুযায়ী বর্তমান বয়স ১৫ বছর ৩ মাস ১১ দিন।

Thakurgaon

মধুপুর ঈদগাহ দাখিল মাদরাসা সুপার রুহুল আমিন জানান, আরজিনা অত্র মাদরাসার দাখিল শ্রেণির ছাত্রী। সম্প্রতি তার বাবা কাজী আমজাদ হোসেন আরজিনাকে বিয়ে দিয়েছেন বলে আমরা অবগত হয়েছি।

ঢোলার হাট এলাকার শরিফুল ইসলাম জানান, কাজী আমজাদ হোসেন ইতোমধ্যে এলাকায় প্রায় ২০টির বেশি বাল্যবিয়ে দিয়েছেন। সর্বশেষ নিজের নাবালিকা মেয়েকে বিয়ে দেওয়ায় এলাকার মানুষের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এলাকাবাসী একত্রিত হয়ে বাল্যবিয়ে প্রদানের অভিযোগে কাজীর বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত আবেদন করেছেন।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত কাজী আমজাদ হোসেনের সঙ্গে যোগযোগ করা হলে নিজের মেয়ের বিয়ের কথা স্বীকার করে বলেন, কাজীদের বিরুদ্ধে বাল্যবিয়ে প্রদানের অভিযোগ উঠতেই পারে। ইউনিয়ন পরিষদের জন্ম নিবন্ধনের উপর ভিত্তি করে বয়স দেখেই যে কারো বিয়ে সম্পন্ন করা হয়। সেখানে বয়স সঠিক থাকলে বিয়ে দিতে আইনগত বাধা থাকার কোনো কথা নয়।

ঠাকুরগাঁও জেলা কাজী রেজিস্ট্রার রফিকুল ইসলাম জানান, বিবাহ নিকাহ আইনে বাল্যবিয়ে ও সহযোগিতা করা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। যদি কাজী আমজাদ হোসেনের বিরুদ্ধে বাল্যবিয়ে দেয়ার প্রমাণ পাওয়া যায় তাহলে তার কাজী রেজিস্ট্রার কার্ড বাতিল করা হবে।

এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক আব্দুল আওয়ালের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, প্রশাসন থেকে বাল্যবিয়ে বন্ধে আমরা বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছি। কেউ যদি নিজ ইচ্ছায় ইউনিয়ন পরিষদে কোনো মেয়ে বা ছেলের জন্মনিবন্ধন পত্রে বয়স বাড়িয়ে বিয়ে দেন সেটিও আইনত অপরাধ। কাজী আমজাদ হোসেনের বিরুদ্ধে নিজ মেয়ে ও একাধিক বাল্যবিয়ে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করা হবে।

রবিউল এহসান রিপন/এফএ/আইআই

আরও পড়ুন